ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানুষের নাম বিকৃত করা পাপ

নাম মানুষের পরিচয়ের প্রতীক। নামের মাধ্যমেই মানুষ পৃথিবীতে পরিচিত হয় এবং পরকালে সম্বোধিত হবে। তাই সবাই সুন্দর নাম পছন্দ করে। তবু মানুষ একে অপরকে ব্যঙ্গ করে ডাকে।

দেখা যায়, বন্ধুবান্ধবসহ অনেকেই মজারছলে ভালো নামটি রেখে অন্য নামে ডেকে থাকে। এমন ডাকা ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। আমি যা পছন্দ করি না, তা অন্যের বেলায় চালিয়ে দেওয়া কেমন? মহান আল্লাহ কুরআনুল কারিমে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে বিদ্রুপ না করে, কেননা তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর কোনো নারীকেও যেন বিদ্রুপ না করে, কেননা সে তাদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না, ঈমানের পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ পরিত্যাগ করে না তারাই অত্যাচারী।’ (সুরা হুজরাত : ১১)

মহানবী (সা.) বলেছেন, এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করে না, তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করে না। কোনো ব্যক্তির জন্য তার কোনো মুসলিম ভাইকে হেয় ও ক্ষুদ্রজ্ঞান করার মতো অপকর্ম আর নেই (মুসনাদে আহমাদ : ১৬/২৯৭)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ঈমানদারদের সঙ্গে অন্য একজন ঈমানদারের সম্পর্ক ঠিক তেমন যেমন দেহের সঙ্গে মাথার সম্পর্ক। সে ঈমানদারদের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট ঠিক অনুভব করে যেমন মাথা দেহের প্রতিটি অংশের ব্যথা অনুভব করে (মুসনাদে আহমাদ : ৫/৩৪০)।

সুতরাং, প্রতিটি মানুষের উচিত একে অপরকে সুন্দর নামে ডাকা এবং কারও নামকে বিকৃত করে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না ফেলা। অর্থাৎ ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে এমন নামে না ডাকা অথবা এমন খেতাব বের না করা, যা সে অপছন্দ করে।

নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাবে ডাকা অথবা ইসলাম গ্রহণ বা তওবা করার পর তাকে অতীত ধর্ম বা পাপ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সম্বোধন করাও ব্যঙ্গ করার শামিল। যেমন এভাবে ডাকা- এ কাফের! এ ইয়াহুদি! ও হিন্দু! ওই লম্পট! হে মাতাল! ইত্যাদি শব্দ কিংবা মন্দ সম্বোধন করে ডাকা জঘন্য অন্যায় ও গর্হিত কাজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী (বুখারি)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে নম্রতা ও কোমলতা বজায় রেখে চলার তওফিক দান করুন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মানুষের নাম বিকৃত করা পাপ

আপডেট সময় ০৯:২৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নাম মানুষের পরিচয়ের প্রতীক। নামের মাধ্যমেই মানুষ পৃথিবীতে পরিচিত হয় এবং পরকালে সম্বোধিত হবে। তাই সবাই সুন্দর নাম পছন্দ করে। তবু মানুষ একে অপরকে ব্যঙ্গ করে ডাকে।

দেখা যায়, বন্ধুবান্ধবসহ অনেকেই মজারছলে ভালো নামটি রেখে অন্য নামে ডেকে থাকে। এমন ডাকা ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। আমি যা পছন্দ করি না, তা অন্যের বেলায় চালিয়ে দেওয়া কেমন? মহান আল্লাহ কুরআনুল কারিমে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে বিদ্রুপ না করে, কেননা তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর কোনো নারীকেও যেন বিদ্রুপ না করে, কেননা সে তাদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না, ঈমানের পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ পরিত্যাগ করে না তারাই অত্যাচারী।’ (সুরা হুজরাত : ১১)

মহানবী (সা.) বলেছেন, এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করে না, তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করে না। কোনো ব্যক্তির জন্য তার কোনো মুসলিম ভাইকে হেয় ও ক্ষুদ্রজ্ঞান করার মতো অপকর্ম আর নেই (মুসনাদে আহমাদ : ১৬/২৯৭)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ঈমানদারদের সঙ্গে অন্য একজন ঈমানদারের সম্পর্ক ঠিক তেমন যেমন দেহের সঙ্গে মাথার সম্পর্ক। সে ঈমানদারদের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট ঠিক অনুভব করে যেমন মাথা দেহের প্রতিটি অংশের ব্যথা অনুভব করে (মুসনাদে আহমাদ : ৫/৩৪০)।

সুতরাং, প্রতিটি মানুষের উচিত একে অপরকে সুন্দর নামে ডাকা এবং কারও নামকে বিকৃত করে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না ফেলা। অর্থাৎ ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে এমন নামে না ডাকা অথবা এমন খেতাব বের না করা, যা সে অপছন্দ করে।

নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাবে ডাকা অথবা ইসলাম গ্রহণ বা তওবা করার পর তাকে অতীত ধর্ম বা পাপ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সম্বোধন করাও ব্যঙ্গ করার শামিল। যেমন এভাবে ডাকা- এ কাফের! এ ইয়াহুদি! ও হিন্দু! ওই লম্পট! হে মাতাল! ইত্যাদি শব্দ কিংবা মন্দ সম্বোধন করে ডাকা জঘন্য অন্যায় ও গর্হিত কাজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী (বুখারি)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে নম্রতা ও কোমলতা বজায় রেখে চলার তওফিক দান করুন।