নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে হিন্দু ধর্মালম্বীদের দুই দিনব্যাপী মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসব শুরু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে স্নানোৎসব শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টা ১১ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে যা শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টায় শেষ হবে।
পুরোহিতরা জানান ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভুটানসহ দেশ ও বিদেশ থেকে ব্যাপক পুণ্যার্থীরা এ স্নানোৎসবে অংশ নিয়েছেন।
স্নানোৎসব পরিদর্শনে আসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যাল জেনারেল (অবঃ)মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও পুলিশ সুপার প্রত্যাুষ কুমার । উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানা ওসি তরিকুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের আই সি মুকলেসুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বি এনপির নেতা আবু কাউসার আশা, আরো উপস্থিত ছিলেন মুছাপুর ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডের এর বারবার নির্বাচিত মেম্বার ও মুছাপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম।
আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা নুরুজ্জামান মোল্লা, সাবেক ছাত্রনেতা ইব্রাহিম খলিল। বি এনপির নেতা আমির হামজা, বি এনপির নেতা বাদল রহমান দেওয়ান, ও বি এনপির নেতা বাব।
উপদেষ্টা বলেন প্রতিবারের ন্যায় এবারো লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পাদন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে, ‘হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’-এ মন্ত্র উচ্চারণ করে পাপ মোচনের আশায় ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা স্নানোৎসবে অংশগ্রহণ করছেন। স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থীরা ডাব, দুর্বা ও বেলপাতা ফলমূলসহ বিভিন্ন পূজার সামগ্রী নিয়ে পুণ্যস্নানে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে পাপমোচনের আশায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে লাঙ্গলবন্দ এলাকা।
ব্রহ্মপুত্র নদীর জলের মাধ্যমে পাপমুক্ত হয়েছিলেন বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম মুনি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, মহাভারতের বর্ণনামতে পরশুরামমুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়।
এবার পর্যাপ্ত পরিমানে স্নান ঘাট পুণ্যার্থীদের জন্য সংস্কার, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য নলকূপ স্থাপন, বিপুলসংখ্যক কাপড় পরিবর্তন কক্ষ ও বিপুল পরিমানে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া ব্রহ্মপূত্র চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, মেডিকেল টিম ও নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস কর্তৃক অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।