ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সভায় চেয়ার না পেয়ে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ, অনুসারীদের সড়ক অবরোধ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের আয়োজনে ১ সেপ্টেম্বর সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এতে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত প্রথম বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সভায় বসার চেয়ার না পেয়ে পদত্যাগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

 

এদিকে মইন উদ্দিনের পদত্যাগের ঘোষণার পরপরই কক্সবাজার বিমানবন্দর সড়কের মাথায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের জেলা কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বিলুপ্ত করার দাবি জানান।

বিক্ষোভের সময় মইন উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, জেলা ছাত্রলীগের লোক দেখানো বর্ধিত সভায় সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন উপস্থিত হন। এ সময় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তাকে অপমান করতে বসার চেয়ার দেননি। ক্ষোভে সভা থেকে ফিরে তাৎক্ষণিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন মইন উদ্দিন। সাদ্দাম-মারুফের এমন স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছি।

এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে সব উপজেলা, কলেজ, পৌরসভা ও মাদরাসার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং পদপ্রত্যাশীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন জেলা শাখার সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান।

বর্ধিত সভায় এসে সভাপতি-সম্পাদককে না পেয়ে ফিরে যাওয়া ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকতে বললেও সভাপতি-সেক্রেটারি কেউ উপস্থিত হননি। বর্ধিত সভা স্থগিত করা হয়েছে এমন বিষয়ে কাউকে বলাও হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতি না দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান।

তাদের দাবি, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বর্ধিত সভার আহ্বান করলেও বাস্তবায়ন না করে ঢাকায় ঘোরাঘুরি করছেন। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হলে পরদিন বিমানযোগে ঢাকা থেকে ফিরে বর্ধিত সভার আয়োজন করেন সভাপতি-সম্পাদক। সভায় সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিনকে চেয়ারে বসার সুযোগ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা ছাত্রলীগের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন।

জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের আয়োজনে ১ সেপ্টেম্বর সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ প্রথমবারের মতো বর্ধিত সভার আয়োজন করে এবং সবাইকে উপস্থিত হতে বলে। সভায় আমিও যোগ দেই। কিন্তু সাদ্দাম ও মারুফ আমাকে বসার জন্য কোনো চেয়ার দেননি। দশ মিনিট দাঁড়িয়ে আমি অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছি। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ স্বরূপ আমি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মো. মারুফ আদনান বলেন, বিকেল ৪টায় আমাদের বর্ধিত সভা শুরু হয়। মইন এর কিছু সময় পর সভাস্থলে আসেন। সিনিয়র সব নেতাকর্মী বসে যাওয়ায় তাকে চেয়ার দিতে দেরি হয়। এ কারণে তিনি চলে যান।

বুধবারের সভা বৃহস্পতিবার কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা করার তারিখ নির্ধারণ ছিল। তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় তারিখটি পরিবর্তন করে বুধবার দেখা করার শিডিউল দেন। এ কারণে ওইদিন আমাদের বর্ধিত সভা করা সম্ভব হয়নি। তাই পরদিন বর্ধিত সভা হবে জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ ও অবরোধের খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যানজট নিরসনে কাজ চালিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর আবার স্বাভাবিক হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সভায় চেয়ার না পেয়ে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ, অনুসারীদের সড়ক অবরোধ

আপডেট সময় ১০:০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের আয়োজনে ১ সেপ্টেম্বর সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এতে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত প্রথম বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সভায় বসার চেয়ার না পেয়ে পদত্যাগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

 

এদিকে মইন উদ্দিনের পদত্যাগের ঘোষণার পরপরই কক্সবাজার বিমানবন্দর সড়কের মাথায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের জেলা কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বিলুপ্ত করার দাবি জানান।

বিক্ষোভের সময় মইন উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, জেলা ছাত্রলীগের লোক দেখানো বর্ধিত সভায় সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন উপস্থিত হন। এ সময় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তাকে অপমান করতে বসার চেয়ার দেননি। ক্ষোভে সভা থেকে ফিরে তাৎক্ষণিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন মইন উদ্দিন। সাদ্দাম-মারুফের এমন স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছি।

এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে সব উপজেলা, কলেজ, পৌরসভা ও মাদরাসার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং পদপ্রত্যাশীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন জেলা শাখার সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান।

বর্ধিত সভায় এসে সভাপতি-সম্পাদককে না পেয়ে ফিরে যাওয়া ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকতে বললেও সভাপতি-সেক্রেটারি কেউ উপস্থিত হননি। বর্ধিত সভা স্থগিত করা হয়েছে এমন বিষয়ে কাউকে বলাও হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতি না দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান।

তাদের দাবি, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বর্ধিত সভার আহ্বান করলেও বাস্তবায়ন না করে ঢাকায় ঘোরাঘুরি করছেন। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হলে পরদিন বিমানযোগে ঢাকা থেকে ফিরে বর্ধিত সভার আয়োজন করেন সভাপতি-সম্পাদক। সভায় সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিনকে চেয়ারে বসার সুযোগ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা ছাত্রলীগের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন।

জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের আয়োজনে ১ সেপ্টেম্বর সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ প্রথমবারের মতো বর্ধিত সভার আয়োজন করে এবং সবাইকে উপস্থিত হতে বলে। সভায় আমিও যোগ দেই। কিন্তু সাদ্দাম ও মারুফ আমাকে বসার জন্য কোনো চেয়ার দেননি। দশ মিনিট দাঁড়িয়ে আমি অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছি। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ স্বরূপ আমি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মো. মারুফ আদনান বলেন, বিকেল ৪টায় আমাদের বর্ধিত সভা শুরু হয়। মইন এর কিছু সময় পর সভাস্থলে আসেন। সিনিয়র সব নেতাকর্মী বসে যাওয়ায় তাকে চেয়ার দিতে দেরি হয়। এ কারণে তিনি চলে যান।

বুধবারের সভা বৃহস্পতিবার কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা করার তারিখ নির্ধারণ ছিল। তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় তারিখটি পরিবর্তন করে বুধবার দেখা করার শিডিউল দেন। এ কারণে ওইদিন আমাদের বর্ধিত সভা করা সম্ভব হয়নি। তাই পরদিন বর্ধিত সভা হবে জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ ও অবরোধের খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যানজট নিরসনে কাজ চালিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর আবার স্বাভাবিক হয়।