রূপগঞ্জের ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে এখনো ঘুরছে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা। গত কয়েকদিন ধরে স্কুল ও কলেজের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস না করে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন আওয়ামী লীগের দোসরখ্যাত সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সুপারিশে চাকরি নেয়া শিক্ষক পিযুষ কুমার ও শামীমা সুলতানা উমাসহ তাদের সহযোগিরা। গোপালগঞ্জের বাসিন্দা পিযুষ কুমার সাবেক মন্ত্রী গাজীর সুপারিশে ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক পদে চাকুরি নেন। একই সময়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে শামীমা সুলতানা উমা স্কুলের অফিস কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরি নিলেও তিনি অদ্যবধি কোনো কাজ করেনি। কম্পিউটার চালাতেও অনবিজ্ঞ। অথচ স্কুলের সকল ষড়যন্ত্রের সাথে উমা ও পিযুষ জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ বছরে ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা লুটপাট করেন। বিষয়টি প্রকাশ পেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তোপেরমুখে আউয়াল মোল্লা স্বপদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান। এখন ওই অধ্যক্ষ আউয়াল মোল্লা বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা বিতরণ করে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করছেন।
ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক রিনা আক্তার জানান, সাবেক অধ্যক্ষ আউয়াল মোল্লা শিক্ষকদের মাসের পর পর বেতন-ভাতা না দিয়ে স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার সহযোগিতায় ছিলেন কলেজ শিক্ষক পিযুষ কুমার, স্কুলের অফিস কাম কম্পিউটার অপারেটর শামীমা সুলতানা উমা, আউয়াল মোল্লার আপন ভাই আকতার মোল্লাসহ ৭-৮জনের সিন্ডিকেট। তারা স্কুল থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর কোনো প্রকার উন্নয়ন কাজ না করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মিটিং মিছিলে নেতৃত্ব দিতো আউয়াল মোল্লা ও শামীমা সুলতানা উমা। এক সময় উমাও আউয়াল স্যারের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন।
সম্প্রতি আউয়াল মোল্লার নির্দেশে লাখ লাখ টাকা নিয়ে শামীমা সুলতানা উমা ও কলেজ শিক্ষক পিযুষ কুমার বিদ্যালয় ধংসে উঠেপড়ে নেমেছেন। পিযুষ কুমার বিগত দিনেও শেখ হাসিনার সহযোগি হিসেবে ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজে ক্ষমতার দাপট দেখাতেন। অবিলম্বে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে পিযুষ কুমার, শামীমা সুলতানা উমা ও আকতার মোল্লাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া আহ্বান জানান স্কুলের শত শত অভিভাবক।
দশম শ্রেণির এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শামীমা সুলতানা উমাকে স্কুল ক্যাম্পাসে দেখলে লজ্জা লাগে। তার চাল চলন ভালো না। তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া উচিৎ। তাছাড়া তাকে কখনো স্কুলে কোনো কাজ করতে দেখিনি।
কলেজ শিক্ষক পিযুষ কুমার বলেন, বিগত দিনে আউয়াল মোল্লা দ্বারা বহুবার লাঞ্ছিত হয়েছি। কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বিদ্যালয়ের কোনো অপপ্রচারে আমি জড়িত নই। তাছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের অনেক শিক্ষকই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর থেকে ভুলতা স্কুলটি সুন্দরভাবে চলে আসছে। এখন আর কোনো দুর্ণীতি বা অনিয়মের সুযোগ নেই। তবে সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা তার কয়েকজন সহযোগির মাধ্যমে এখনো বিদ্যালয়ে নানান ধরণের ষড়যন্ত্রের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তাছাড়া স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ডে বেতন ও পরীক্ষা ফি পরিশোধ করে থাকেন। অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকা
,
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :










রূপগঞ্জে ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজে ঘুরছে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা
-
রুদ্রকন্ঠ ডেস্ক :
- আপডেট সময় ১১:৪৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫
- 4
জনপ্রিয় সংবাদ