ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার প্রস্তাবনা দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে একমত বিএনপি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর সংস্কার পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের প্রথম দুই বছরের মধ্যে কার্যকর করতে হবে বলে উল্লেখ রয়েছে জুলাই সনদ ২০২৫-এর খসড়ায়। তাদের এই সুপারিশের সঙ্গে বিএনপি একমত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ২১তম দিনের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি, সেটা ভূমিকা, তাতে বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই, পরে যুক্ত হবে বলা হয়েছে। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। খসড়ায় বাক্য, শব্দ, গঠন প্রণালী ইত্যাদি নিয়ে কারও কোন মতামত আছে কি না, সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া দিয়েছে কমিশন। আমাদের যা যা সংশোধনী ও অবজারভেশন থাকবে এটা আমরা কালকে জমা দেব।

খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা (বিএনপি) একমত বলেও উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, যেসব প্রতিশ্রুতির জন্য আইনকানুন সংবিধান চেঞ্জ করার কথা খসড়ায় বলা হয়েছে। সেটা তো বলারও প্রয়োজন নেই, কারণ তার জন্যই তো এই প্রতিশ্রুতি এবং ঐকমত্য কমিশন আসা।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে। কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে, সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের মধ্যে রাখতে হবে। যত বেশি কিছু সংবিধানে যুক্ত করা হবে, তত বেশি সংশোধন জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হোক।

নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি— আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে। আমরা চাই নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে তাতে অগ্রসর হতে চাই।

ন্যায়পাল নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত ন্যায়পাল কোনোদিন ফাংশন করেনি, তাই আমরা প্রথমে চাই সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। এরপর তার আইন যুগোপযোগী করে, দায়িত্ব ও ক্ষমতা স্পষ্ট করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হোক।

তিনি বলেন, ন্যায়পালকে শুধু তদন্তের ক্ষমতা না দিয়ে, তার প্রতিবেদনের বাস্তব প্রয়োগের জন্য আইন তৈরি করতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠান অর্থবহ হবে না।

সংস্কার কমিশনের ৭০০-এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে একমত হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছি।

তিনি বলেন, সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন- সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

সংস্কার প্রস্তাবনা দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে একমত বিএনপি

আপডেট সময় ০৮:২১:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর সংস্কার পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের প্রথম দুই বছরের মধ্যে কার্যকর করতে হবে বলে উল্লেখ রয়েছে জুলাই সনদ ২০২৫-এর খসড়ায়। তাদের এই সুপারিশের সঙ্গে বিএনপি একমত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ২১তম দিনের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি, সেটা ভূমিকা, তাতে বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই, পরে যুক্ত হবে বলা হয়েছে। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। খসড়ায় বাক্য, শব্দ, গঠন প্রণালী ইত্যাদি নিয়ে কারও কোন মতামত আছে কি না, সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া দিয়েছে কমিশন। আমাদের যা যা সংশোধনী ও অবজারভেশন থাকবে এটা আমরা কালকে জমা দেব।

খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা (বিএনপি) একমত বলেও উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, যেসব প্রতিশ্রুতির জন্য আইনকানুন সংবিধান চেঞ্জ করার কথা খসড়ায় বলা হয়েছে। সেটা তো বলারও প্রয়োজন নেই, কারণ তার জন্যই তো এই প্রতিশ্রুতি এবং ঐকমত্য কমিশন আসা।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে। কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে, সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের মধ্যে রাখতে হবে। যত বেশি কিছু সংবিধানে যুক্ত করা হবে, তত বেশি সংশোধন জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হোক।

নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি— আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে। আমরা চাই নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে তাতে অগ্রসর হতে চাই।

ন্যায়পাল নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত ন্যায়পাল কোনোদিন ফাংশন করেনি, তাই আমরা প্রথমে চাই সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। এরপর তার আইন যুগোপযোগী করে, দায়িত্ব ও ক্ষমতা স্পষ্ট করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হোক।

তিনি বলেন, ন্যায়পালকে শুধু তদন্তের ক্ষমতা না দিয়ে, তার প্রতিবেদনের বাস্তব প্রয়োগের জন্য আইন তৈরি করতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠান অর্থবহ হবে না।

সংস্কার কমিশনের ৭০০-এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে একমত হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছি।

তিনি বলেন, সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন- সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।