ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ইরানে আবারও হামলার হুমকি ট্রাম্পের Logo জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হবে Logo চাঁদাবাজীর সংস্কৃতি রাজনীতিকে কলুষিত করছে Logo রূপগঞ্জ উপজেলার মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভা আয়োজন করা হয়। Logo সোনারগাঁয়ে ‘পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি’র নামে প্রতারণা: কথিত চেয়ারম্যান হুসাইনকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় Logo কিন্ডারগার্টেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন Logo নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণের দাবি ব্যবসায়ী সংগঠনের Logo র‌্যাবের পোশাকে রূপগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মালামালসহ নগদ টাকা লুট Logo রূপগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ মাদক কারকারি ও ডাকাত দলের সদস্য গ্রেপ্তার Logo গ্রুপিং থাকতে পারে, ত্যাগী নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয় : সাখাওয়াত

চাঁদাবাজীর সংস্কৃতি রাজনীতিকে কলুষিত করছে

মোঃ মামুন হোসেন : রাজনীতি মূলত জনগণের কল্যাণ, ন্যায়বিচার ও দেশের উন্নয়নের একটি আদর্শ মাধ্যম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে রাজনীতির সেই আদর্শিক রূপ আজ বহু জায়গায় বিকৃত ও কলুষিত হয়ে পড়েছে। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি। একসময় যে রাজনীতি ছিল ত্যাগ, সেবাব্রত ও আদর্শের ক্ষেত্র, তা আজ অনেকাংশে রূপান্তরিত হয়েছে লুটপাট, ভয়ভীতি ও চাঁদাবাজির মঞ্চে। চাঁদাবাজেরা রাজনীতির ছত্রছায়ায় নানা অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে, যা রাজনীতিকে এক ভয়ঙ্কর দিকেই ধাবিত করছে। চাঁদাবাজির মূল ভিত্তি হলো অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে অর্থ আদায়। এটা সাধারণত বাজার, পরিবহন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, নির্মাণকাজ, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হয়। রাজনীতির ছত্রছায়ায় যারা এইসব কাজ করে, তারা সাধারণত কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকে বা দলের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত হয়। এরা দলকে অর্থ জোগান দেয়ার অজুহাতে সন্ত্রাস, দখলবাজি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করে। রাজনীতি ও চাঁদাবাজির এ অশুভ আঁতাত সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়শই চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকে—বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে যেসব কর্মী ‘মাঠ দখলে’ রাখতে পারে, দলকে ‘পাওয়ার’ দেখাতে পারে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এমনকি দলীয় মনোনয়ন বা টিকিট বণ্টনেও দেখা যায় চাঁদাবাজদের প্রাধান্য। কারণ তারা দলকে চাঁদা, ভোট ও ‘শক্তি’ দিতে পারে। এর ফলে সাধারণ, সৎ, আদর্শবান রাজনীতিকরা পিছিয়ে পড়ে, আর রাজনীতি চলে যায় ক্ষমতা ও অর্থবাজদের দখলে। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ প্রশাসন অনেক সময় রাজনৈতিক চাপে নিরব থাকে বা উদাসীন থাকে। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় যারা চাঁদাবাজি করে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তা ধামাচাপা পড়ে যায় বা তারা জামিন পেয়ে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। অনেক সময় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক ধরনের বোঝাপড়া তৈরি হয়, যার ফলে চাঁদাবাজরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে সাধারণ মানুষ হয় অসহায়, ন্যায়বিচার ব্যর্থ হয়। চাঁদাবাজি শুধু রাজনীতিকে কলুষিত করছে না, বরং সমাজেও ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছে না, যানবাহন চালকরা চাঁদার বোঝায় জর্জরিত, ঠিকাদাররা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ কাজ করছে, যার প্রভাব পড়ছে কাজের মানে। চাঁদা দিতে না চাইলে হুমকি, হামলা, এমনকি হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে। এক ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি জনগণকে রাষ্ট্র থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে এবং এক ধরনের অনাস্থা তৈরি করছে।
চাঁদাবাজির সংস্কৃতি এখন শিক্ষাঙ্গনেও প্রবেশ করেছে। ছাত্র রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে অনেক সময় ‘হলের চাঁদা’, ‘বইয়ের চাঁদা’, ‘আবাসনের চাঁদা’ এসবের ভয়াবহতা দেখা যায়। যেসব তরুণ নেতৃত্বে আসতে চায়, তারা আদর্শ নয় বরং ক্ষমতার জোরে অন্যকে দমন করে নেতা হয়ে ওঠে। এর ফলে শিক্ষার্থী সমাজে নৈতিকতা নষ্ট হয়, মেধার অপমান হয়, আদর্শ রাজনীতির পথ বন্ধ হয়ে যায়।গণতন্ত্র মানে হলো মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা এবং স্বচ্ছতা। কিন্তু চাঁদাবাজির কারণে রাজনীতি হয়ে উঠেছে লুটপাট ও আতঙ্কের রাজত্ব। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়াও প্রভাবিত হয়। টাকার জোরে মনোনয়ন কিনে ভোট কিনে, চাঁদাবাজরাই জনপ্রতিনিধি হয়ে যায়। ফলে প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে যায়, দুর্নীতি ও অপশাসন বাড়ে। মিডিয়া ও নাগরিক সমাজ এই ইস্যুতে অনেক সময় সাহসিকতার সঙ্গে কথা বললেও তাদের ওপরও হুমকি, চাপ বা মামলা-মোকদ্দমা আসে। অনেক সাংবাদিক চাঁদাবাজির খবর প্রকাশ করে হামলার শিকার হয়েছেন, মামলা খেয়েছেন। নাগরিক সমাজও রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে বরং অবনতির দিকে যাচ্ছে।সমাধান কোথায়? ১. আইনের কঠোর প্রয়োগ: যেকোনো দলের যেকোনো নেতাই হোক না কেন, চাঁদাবাজির প্রমাণ মিললে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. রাজনৈতিক দলের আত্মশুদ্ধি: রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ সংগঠনের মধ্যে চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করতে হবে।৩. জনগণের সচেতনতা ও প্রতিরোধ: জনগণকে সাহস করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ৪. মিডিয়ার ভূমিকা জোরদার করা: চাঁদাবাজির ঘটনা অনুসন্ধান ও প্রচারে সাহসী সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ।৫. শিক্ষায় নৈতিকতা চর্চা: তরুণ প্রজন্মকে সঠিক আদর্শ ও নৈতিকতার পথে চালনা করতে হবে। শিক্ষায় মূল্যবোধ ও নেতৃত্ব বিকাশে উদ্যোগ নিতে হবে।
চাঁদাবাজির সংস্কৃতি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না; এটি একটি রাষ্ট্র, একটি সমাজ এবং একটি জাতির নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়। রাজনীতি যখন সৎ মানুষকে দূরে সরিয়ে দিয়ে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের হাতে চলে যায়, তখন গণতন্ত্রের অবসান ঘটে, স্বৈরতন্ত্র ও দুর্নীতির জয় হয়। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে আমাদের সবাইকে—সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক কর্মী, পুলিশ, বিচারক এবং সাধারণ নাগরিক—ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাব এক ভয়াবহ রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ, যা উন্নয়নের পথে নয়, ধ্বংসের দিকেই ধাবিত হবে। চাঁদাবাজমুক্ত রাজনীতি মানেই সুশাসনের ভিত্তি—এই চেতনাতেই গড়ে উঠুক আগামীর বাংলাদেশ।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরানে আবারও হামলার হুমকি ট্রাম্পের

চাঁদাবাজীর সংস্কৃতি রাজনীতিকে কলুষিত করছে

আপডেট সময় ০৭:৩৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

মোঃ মামুন হোসেন : রাজনীতি মূলত জনগণের কল্যাণ, ন্যায়বিচার ও দেশের উন্নয়নের একটি আদর্শ মাধ্যম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে রাজনীতির সেই আদর্শিক রূপ আজ বহু জায়গায় বিকৃত ও কলুষিত হয়ে পড়েছে। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি। একসময় যে রাজনীতি ছিল ত্যাগ, সেবাব্রত ও আদর্শের ক্ষেত্র, তা আজ অনেকাংশে রূপান্তরিত হয়েছে লুটপাট, ভয়ভীতি ও চাঁদাবাজির মঞ্চে। চাঁদাবাজেরা রাজনীতির ছত্রছায়ায় নানা অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে, যা রাজনীতিকে এক ভয়ঙ্কর দিকেই ধাবিত করছে। চাঁদাবাজির মূল ভিত্তি হলো অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে অর্থ আদায়। এটা সাধারণত বাজার, পরিবহন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, নির্মাণকাজ, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হয়। রাজনীতির ছত্রছায়ায় যারা এইসব কাজ করে, তারা সাধারণত কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকে বা দলের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত হয়। এরা দলকে অর্থ জোগান দেয়ার অজুহাতে সন্ত্রাস, দখলবাজি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করে। রাজনীতি ও চাঁদাবাজির এ অশুভ আঁতাত সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়শই চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকে—বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে যেসব কর্মী ‘মাঠ দখলে’ রাখতে পারে, দলকে ‘পাওয়ার’ দেখাতে পারে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এমনকি দলীয় মনোনয়ন বা টিকিট বণ্টনেও দেখা যায় চাঁদাবাজদের প্রাধান্য। কারণ তারা দলকে চাঁদা, ভোট ও ‘শক্তি’ দিতে পারে। এর ফলে সাধারণ, সৎ, আদর্শবান রাজনীতিকরা পিছিয়ে পড়ে, আর রাজনীতি চলে যায় ক্ষমতা ও অর্থবাজদের দখলে। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ প্রশাসন অনেক সময় রাজনৈতিক চাপে নিরব থাকে বা উদাসীন থাকে। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় যারা চাঁদাবাজি করে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তা ধামাচাপা পড়ে যায় বা তারা জামিন পেয়ে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। অনেক সময় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক ধরনের বোঝাপড়া তৈরি হয়, যার ফলে চাঁদাবাজরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে সাধারণ মানুষ হয় অসহায়, ন্যায়বিচার ব্যর্থ হয়। চাঁদাবাজি শুধু রাজনীতিকে কলুষিত করছে না, বরং সমাজেও ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছে না, যানবাহন চালকরা চাঁদার বোঝায় জর্জরিত, ঠিকাদাররা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ কাজ করছে, যার প্রভাব পড়ছে কাজের মানে। চাঁদা দিতে না চাইলে হুমকি, হামলা, এমনকি হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে। এক ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি জনগণকে রাষ্ট্র থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে এবং এক ধরনের অনাস্থা তৈরি করছে।
চাঁদাবাজির সংস্কৃতি এখন শিক্ষাঙ্গনেও প্রবেশ করেছে। ছাত্র রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে অনেক সময় ‘হলের চাঁদা’, ‘বইয়ের চাঁদা’, ‘আবাসনের চাঁদা’ এসবের ভয়াবহতা দেখা যায়। যেসব তরুণ নেতৃত্বে আসতে চায়, তারা আদর্শ নয় বরং ক্ষমতার জোরে অন্যকে দমন করে নেতা হয়ে ওঠে। এর ফলে শিক্ষার্থী সমাজে নৈতিকতা নষ্ট হয়, মেধার অপমান হয়, আদর্শ রাজনীতির পথ বন্ধ হয়ে যায়।গণতন্ত্র মানে হলো মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা এবং স্বচ্ছতা। কিন্তু চাঁদাবাজির কারণে রাজনীতি হয়ে উঠেছে লুটপাট ও আতঙ্কের রাজত্ব। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়াও প্রভাবিত হয়। টাকার জোরে মনোনয়ন কিনে ভোট কিনে, চাঁদাবাজরাই জনপ্রতিনিধি হয়ে যায়। ফলে প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে যায়, দুর্নীতি ও অপশাসন বাড়ে। মিডিয়া ও নাগরিক সমাজ এই ইস্যুতে অনেক সময় সাহসিকতার সঙ্গে কথা বললেও তাদের ওপরও হুমকি, চাপ বা মামলা-মোকদ্দমা আসে। অনেক সাংবাদিক চাঁদাবাজির খবর প্রকাশ করে হামলার শিকার হয়েছেন, মামলা খেয়েছেন। নাগরিক সমাজও রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে বরং অবনতির দিকে যাচ্ছে।সমাধান কোথায়? ১. আইনের কঠোর প্রয়োগ: যেকোনো দলের যেকোনো নেতাই হোক না কেন, চাঁদাবাজির প্রমাণ মিললে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. রাজনৈতিক দলের আত্মশুদ্ধি: রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ সংগঠনের মধ্যে চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করতে হবে।৩. জনগণের সচেতনতা ও প্রতিরোধ: জনগণকে সাহস করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ৪. মিডিয়ার ভূমিকা জোরদার করা: চাঁদাবাজির ঘটনা অনুসন্ধান ও প্রচারে সাহসী সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ।৫. শিক্ষায় নৈতিকতা চর্চা: তরুণ প্রজন্মকে সঠিক আদর্শ ও নৈতিকতার পথে চালনা করতে হবে। শিক্ষায় মূল্যবোধ ও নেতৃত্ব বিকাশে উদ্যোগ নিতে হবে।
চাঁদাবাজির সংস্কৃতি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না; এটি একটি রাষ্ট্র, একটি সমাজ এবং একটি জাতির নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়। রাজনীতি যখন সৎ মানুষকে দূরে সরিয়ে দিয়ে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের হাতে চলে যায়, তখন গণতন্ত্রের অবসান ঘটে, স্বৈরতন্ত্র ও দুর্নীতির জয় হয়। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে আমাদের সবাইকে—সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক কর্মী, পুলিশ, বিচারক এবং সাধারণ নাগরিক—ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাব এক ভয়াবহ রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ, যা উন্নয়নের পথে নয়, ধ্বংসের দিকেই ধাবিত হবে। চাঁদাবাজমুক্ত রাজনীতি মানেই সুশাসনের ভিত্তি—এই চেতনাতেই গড়ে উঠুক আগামীর বাংলাদেশ।