ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু

বরিশালে তারুণ্যের সমাবেশ মঞ্চে প্রধান অতিথি বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আমাদের আন্দোলন শুরু। দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ব্যতিক্রমী এই সমাবেশে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি ছিল বিপ্লবী গান, কবিতা পাঠ ও ভুক্তভোগী প্রত্যক্ষ নির্যাতনের শিকার মা বোন ও ভাইদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমবেত ছাত্র যুব ও জনতাকে সাথে নিয়ে বার বারই শ্লোগান তোলেন ‘দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’।

গতকাল শনিবার বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেল’স পার্ক) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সমন্বয়ে আয়োজিত এই তারুণ্যের সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল জাহান শ্রাবণ এর সভাপতিত্বে বিএনপি মহাসচিব জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন। তার সাথে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের হাজার হাজার সমবেতও বিদ্রোহী কবির কবিতা আবৃত্তি করেন, “দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার! দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভূলিতেছে মাঝি পথ —”। বিএনপি মহাসচিব তার বক্তব্যের প্রথমেই বরিশালের সন্তান হারানো মা ফিরোজা বেগমকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। কালু আর মিরাজ তার দুই সন্তান ২০০৮ সালে নিখোঁজ হয়। তাদের তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের লোকেরা। মির্জ ফখরুল বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় এসেই এই গুম খুনের রাজনীতি শুরু করে। তিনি বলেন, সিলেটের ইলিয়াস আলীর শিশু কন্যার বয়স আজ ১১ বছর। কত মায়ের বুক এভাবে খালি করেছে তারা। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু আর গুম করে মৃত্যু। এজন্য দেশ স্বাধীন হয় নাই।

তিনি বলেন, এ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে রাজনীতি করতে বাধা দিচ্ছে। কারণ, তারা জানে, খালেদা জিয়া মাঠে থাকলে তাদের এ দেশে দাঁড়াবার স্থানটুকু থাকবে না। মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা তারেক রহমানকেও দেশে আসতে দেয় না। কারণ তাকেও ভয় পায় এই সরকার।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কিছুদিন আগে পত্রিকায় এসেছে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে তাদের কোটি কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী সুইজারল্যান্ড গেলেন, সাথে সাথে সেখানের সুইজ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের সব টাকা উধাও হয়ে গেল।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, বিদ্যুৎ এর টাকা কোথায় গেল? আপনি আমি সবাই বিদ্যুৎ বিল দেই, তাহলে এরা আবার নিজেদের বৈধ সরকার দাবি করে। তিনি বলেন, বৈধ সরকার নও তোমরা, ‘তোমরা অবৈধ’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা নাই। তেল, চিনি, গোশত সবকিছুর দাম দিগুণ-তিনগুণ বেড়েছে। মানুষ কিনতে পারে না কিন্তু ওরা পারে, যাদের চুরির টাকা আছে তাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে।

এর আগে প্রধান বক্তা যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আওয়ামী লীগের বাকশাল গঠনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে এই সরকার। এই সরকার ভোট চোর উল্লেখ করে টুকু শ্লোগান তোলেন- “তারেক রহমান আসলে দেশে-আওয়ামী লীগ যাবে ভেসে” এবং তিনি তরুণদের নিয়ে সরকারের পতন ও তারেক রহমান দেশে না ফেরা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না বলে সবাইকে নিয়ে শপথ করেন।

তারুণ্যের এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, আকন কুদ্দুসুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, রাজিব আহসান, সাঈফ মাহমুদ জুয়েলসহ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার বরিশাল বেলস পার্কে তারুণ্যের এ সমাবেশে যোগ দিতে মহানগরীর বাইরে থেকেও বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী সমবেত হন। গত ডিসেম্বরে বরিশালের একই স্থানে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের প্রায় ৬ মাস পরে শনিবার এ তারুণ্যের সমাবেশ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আরো উজ্জিবিত করল।

এদিকে শনিবার তারুণ্যের সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচী হিসেবে মহানগরীর ফজলুল হক এভিনিউতে নগর ভবনের সামনে আওয়ামী যুবলীগ এক শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নিতাইগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু

আপডেট সময় ০৩:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩

বরিশালে তারুণ্যের সমাবেশ মঞ্চে প্রধান অতিথি বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আমাদের আন্দোলন শুরু। দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ব্যতিক্রমী এই সমাবেশে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি ছিল বিপ্লবী গান, কবিতা পাঠ ও ভুক্তভোগী প্রত্যক্ষ নির্যাতনের শিকার মা বোন ও ভাইদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমবেত ছাত্র যুব ও জনতাকে সাথে নিয়ে বার বারই শ্লোগান তোলেন ‘দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’।

গতকাল শনিবার বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেল’স পার্ক) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সমন্বয়ে আয়োজিত এই তারুণ্যের সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল জাহান শ্রাবণ এর সভাপতিত্বে বিএনপি মহাসচিব জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন। তার সাথে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের হাজার হাজার সমবেতও বিদ্রোহী কবির কবিতা আবৃত্তি করেন, “দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার! দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভূলিতেছে মাঝি পথ —”। বিএনপি মহাসচিব তার বক্তব্যের প্রথমেই বরিশালের সন্তান হারানো মা ফিরোজা বেগমকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। কালু আর মিরাজ তার দুই সন্তান ২০০৮ সালে নিখোঁজ হয়। তাদের তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের লোকেরা। মির্জ ফখরুল বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় এসেই এই গুম খুনের রাজনীতি শুরু করে। তিনি বলেন, সিলেটের ইলিয়াস আলীর শিশু কন্যার বয়স আজ ১১ বছর। কত মায়ের বুক এভাবে খালি করেছে তারা। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু আর গুম করে মৃত্যু। এজন্য দেশ স্বাধীন হয় নাই।

তিনি বলেন, এ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে রাজনীতি করতে বাধা দিচ্ছে। কারণ, তারা জানে, খালেদা জিয়া মাঠে থাকলে তাদের এ দেশে দাঁড়াবার স্থানটুকু থাকবে না। মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা তারেক রহমানকেও দেশে আসতে দেয় না। কারণ তাকেও ভয় পায় এই সরকার।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কিছুদিন আগে পত্রিকায় এসেছে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে তাদের কোটি কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী সুইজারল্যান্ড গেলেন, সাথে সাথে সেখানের সুইজ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের সব টাকা উধাও হয়ে গেল।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, বিদ্যুৎ এর টাকা কোথায় গেল? আপনি আমি সবাই বিদ্যুৎ বিল দেই, তাহলে এরা আবার নিজেদের বৈধ সরকার দাবি করে। তিনি বলেন, বৈধ সরকার নও তোমরা, ‘তোমরা অবৈধ’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা নাই। তেল, চিনি, গোশত সবকিছুর দাম দিগুণ-তিনগুণ বেড়েছে। মানুষ কিনতে পারে না কিন্তু ওরা পারে, যাদের চুরির টাকা আছে তাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে।

এর আগে প্রধান বক্তা যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আওয়ামী লীগের বাকশাল গঠনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে এই সরকার। এই সরকার ভোট চোর উল্লেখ করে টুকু শ্লোগান তোলেন- “তারেক রহমান আসলে দেশে-আওয়ামী লীগ যাবে ভেসে” এবং তিনি তরুণদের নিয়ে সরকারের পতন ও তারেক রহমান দেশে না ফেরা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না বলে সবাইকে নিয়ে শপথ করেন।

তারুণ্যের এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, আকন কুদ্দুসুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, রাজিব আহসান, সাঈফ মাহমুদ জুয়েলসহ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার বরিশাল বেলস পার্কে তারুণ্যের এ সমাবেশে যোগ দিতে মহানগরীর বাইরে থেকেও বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী সমবেত হন। গত ডিসেম্বরে বরিশালের একই স্থানে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের প্রায় ৬ মাস পরে শনিবার এ তারুণ্যের সমাবেশ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আরো উজ্জিবিত করল।

এদিকে শনিবার তারুণ্যের সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচী হিসেবে মহানগরীর ফজলুল হক এভিনিউতে নগর ভবনের সামনে আওয়ামী যুবলীগ এক শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে।