পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ উপভোগ করতে ঈদের ছুটিতে প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
তীব্র রোদ উপেক্ষা করে মানুষেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুর পাশাপাশি তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় পর্যটনকেন্দ্র মুখরিত হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুরা বিনোদনের খোঁজে লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে (জাদুঘর) ও পানামসিটিতে ভিড় করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে জাদুঘর ও পানাম সিটি প্রাঙ্গণ। প্রিয়জন কিংবা স্বজনদের নিয়ে নির্মল প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় আনন্দে কাটাচ্ছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। তবে তুলনামূলক তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি লক্ষ্যনীয়।
এদিকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার চিন্তা করে বাড়তি আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা লাকি আক্তার বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে অফিস থেকে লম্বা ছুটি পেয়েছি। এবার দূরে কোথাও যাওয়া হয়নি। সোনারগাঁয়ের মনোরম পরিবেশ সম্পর্কে আমরা লোকমুখে শুনে এখানে এসেছি। ঘুরছি ভালোই লাগছে।
এখানকার অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও ঘুরে দেখবো। মুঘল আমলের প্রাচীন নিদর্শনের অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে। এখানে যা নতুন প্রজন্মের শিক্ষায় কাজে লাগবে।
শনিরআখড়া থেকে ঘুরতে আসা শিউলি আক্তার বলেন, প্রতি ঈদ সন্তানের নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে থাকি। তবে এবার আমার প্রবাসী স্বামী ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে এসেছে। তাই তিনিসহ পুরো পরিবার সোনারগাঁয়ে ঘুরতে আসলাম। আমি মনে করি পুরো বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই সোনারগাঁ। এ উপজেলাটির প্রতি সরকারের বিশেষ দৃষ্টি রাখা উচিত।
কুমিল্লা থেকে পরিবার নিয়ে পানামসিটিতে এসেছেন রহমান আলী। তিনি বলেছেন, আমরা এই প্রথম সোনারগাঁয়ের পানাম সিটিতে এসেছি। এটার সম্পর্কে অনেক শুনেছি, তাই ঈদ উপলক্ষে পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। ভালো লাগছে এসে।
দর্শনার্থীদের সমাগমের বিষয়ে জানতে চাইলে পানামাসিটি ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী কাস্টডিয়ান মো. সিয়াম চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ দর্শনার্থীদের সমাগম হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ হাজারো দর্শনার্থী সোনারগাঁয়ের আদিরূপ উপভোগ করতে পানামাসিটিতে ভিড় জমিয়েছেন। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য এখানে পর্যাপ্ত আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁ জাদুঘর) উপ-পরিচালক একেএম আজাদ সরকার জানান, এবারে আশানুরূপ দর্শনার্থীদের সমাগম হয়েছে। কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী জাদুঘর দেখতে এসেছে। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য এখানে পর্যাপ্ত আনসার, পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান জানান, সোনারগাঁয়ে বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র তৈরি হওয়ায় পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সোনারগাঁ জাদুঘর ও পানামাসিটিসহ অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রগুলো।
দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি থানা পুলিশ, আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশদের মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।