৩০মে ছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী। মৃত্যুর আগে তিনি একটি শোষণহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই লক্ষ্যে বিএনপি গঠন করেছিলেন। ‘আমার রাজনীতির রূপরেখা’ নামক বইতে মরহুম জিয়া তাঁর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে লিখেন_
”শোষণমুক্ত একটি সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছি আমরা। যদিও এটি বড় শক্ত কাজ। এটা দুনিয়ার কোন দেশেও একশ ভাগ সফল হয়নি। কোন দেশ বেশি অগ্রসর হয়েছে আর কোন দেশ তার চেয়ে কম। আমাদের এই শোষণমুক্ত একটি সমাজ গঠন করতে হলে পাঁচটি বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে। এই পাঁচটি বিষয় হচ্ছে অন্য, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্যের। কারণ খাদ্য না পেলে মানুষ বাঁচবে না। তারপর বস্ত্র। লজ্জা নিবারণ করতে পারলে আসবে শিক্ষা। এই তিনটির সাহায্যে দুইটি মেটানো সম্ভব। শোষণমুক্ত সমাজ কায়েম করতে হলে বন্টন ব্যবস্থা থাকতে হবে যেটাকে আপনারা ‘সুষম বন্টন’ বলেন।” দেশের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি তাঁর নতুন দলের মতাদর্শ হিসেবে ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’কে গ্রহণ করেছিলেন। ভেবেছিলেন এই মতবাদের ভিত্তিতে শোষণমুক্ত সমাজ গড়বেন।
মরহুম জিয়া চেয়েছিলেন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং সে লক্ষ্যে তাঁর বইতে তিনি লিখেন, ”আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র করেছি। অনেকে অনেক রকম কথা বলেছে। কিন্তু আমাদেরকে এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতেই হবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা। তাদের ইউনিফাই করা। যেখানে জাতি বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মধ্য দিয়ে তা করতে হবে।” শহীদ জিয়ার মৃত্যুর ৪৪ বছর পর যে বাংলাদেশ দেখছি সেখানে ঐক্য নেই। আছে মতাদর্শ ও মতবাদের ভিত্তিতে বিভক্তি। দল হিসেবে বিএনপি বিগত ১৭ বছর নিপীড়িত মানুষের অধিকার ও গুম হয়ে যাওয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতিকে সঠিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিএনপি’র লক্ষ্য শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত এবং গণতান্ত্রিক একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যার ভিত্তি হবে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণাপত্রে ঘোষিত তিন মূলনীতি – সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। যেই যুদ্ধের জন্য জীবনবাজি রেখে লড়েছিলেন জিয়াউর রহমান, আমি তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি, আল্লাহ যেন তাঁকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন।