ঢাকা , সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণের দাবি ব্যবসায়ী সংগঠনের Logo র‌্যাবের পোশাকে রূপগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মালামালসহ নগদ টাকা লুট Logo রূপগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ মাদক কারকারি ও ডাকাত দলের সদস্য গ্রেপ্তার Logo গ্রুপিং থাকতে পারে, ত্যাগী নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয় : সাখাওয়াত Logo সিদ্ধিরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত জেরে: থানার ওসি ও এসআই সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ Logo না’গঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার কর্তৃক কাব্যছন্দ পাঠাগারের তালিকাভূক্তিকরণ সনদ প্রদান Logo বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিতে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের Logo মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : আইসিইউতে মৃত্যুর কাছে হার মানলো জারিফ Logo রূপগঞ্জে ডাকাতির অভিযোগে ২ যুবক আটক, বিদেশি পিস্তল উদ্ধার Logo রূপগঞ্জে লোহা গলানোর ভাট্টি বিস্ফোরণে ৩ শ্রমিক দগ্ধ

রূপগঞ্জ ৪ দিনের টানা বর্ষণে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৩০টি এলাকায় প্রায় ৫০হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখলে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার তারাবো, বরপা, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল, মধ্যপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নাগেরবাগ, বৌবাজার, বাক্মোর্চা, খালপাড়, ইসলামবাগ, আমলাবো, কালী, আমলাব মুসলিম পাড়া, ডুলুরদিয়া, গোলাকান্দাইল নতুন বাজার, কান্দাপাড়া, বলাইখা, বিজয়নগর, মদিনানগর, তারাবো পৌরসভার তেঁতলাবো, শান্তিনগর, বাগানবাড়ি, পশ্চিম কান্দাপাড়া, উত্তর মাসাবো, যাত্রামুড়া, রূপসী ও ভূলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, সোনাব, পাচাইখা ও ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকায় এখন জলাবদ্ধতা। এতে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়ির উঠোনেই পানি হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ। অনেকের বসত ঘরে ৩-৪ ফুট পানি। রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে।
গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাড়িতে পানি উঠায় কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছেন।
কয়েকটি শিল্প কারখানায়ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার নির্গত ক্যামিকেল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে দূষণ হয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। নারী ও শিশুরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
নাগেরবাগ এলাকার পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘একদিকে বিধিনিষেধ অপরদিকে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অতি কষ্টে চলছে নিম্নআয়ের মানুষের। শিল্প কারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্প কারখানার নির্গত গরম পানি জলাবদ্ধতায় মিশে গেছে। তাতে জলাবদ্ধতার পানি কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। এ পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পানির কীট-পতঙ্গসহ মাছ মরে যাচ্ছে। আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’
ইসলামবাগ এলাকার গৃহিণী নাজমা বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঘরে হাঁটু সমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।’
গোলাকান্দাইল এলাকার সচেতন মহল বলেন, ‘রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সে কারণে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘর বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা টিএনও স্যারের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

আমলাব মুসলিম পাড়া এলাকার হানিফ বলেন, ‘১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে।’ বাইনাদি এলাকায় সুইচগেট থাকলেও ওখানকার দায়িত্বে ঢাকা ব্যক্তিরা সময়মত মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বাইনাদি এলাকায় পাম্পের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণের দাবি ব্যবসায়ী সংগঠনের

রূপগঞ্জ ৪ দিনের টানা বর্ষণে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

আপডেট সময় ১০:২৪:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৩০টি এলাকায় প্রায় ৫০হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখলে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার তারাবো, বরপা, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল, মধ্যপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নাগেরবাগ, বৌবাজার, বাক্মোর্চা, খালপাড়, ইসলামবাগ, আমলাবো, কালী, আমলাব মুসলিম পাড়া, ডুলুরদিয়া, গোলাকান্দাইল নতুন বাজার, কান্দাপাড়া, বলাইখা, বিজয়নগর, মদিনানগর, তারাবো পৌরসভার তেঁতলাবো, শান্তিনগর, বাগানবাড়ি, পশ্চিম কান্দাপাড়া, উত্তর মাসাবো, যাত্রামুড়া, রূপসী ও ভূলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, সোনাব, পাচাইখা ও ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকায় এখন জলাবদ্ধতা। এতে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়ির উঠোনেই পানি হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ। অনেকের বসত ঘরে ৩-৪ ফুট পানি। রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে।
গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাড়িতে পানি উঠায় কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছেন।
কয়েকটি শিল্প কারখানায়ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার নির্গত ক্যামিকেল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে দূষণ হয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। নারী ও শিশুরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
নাগেরবাগ এলাকার পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘একদিকে বিধিনিষেধ অপরদিকে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অতি কষ্টে চলছে নিম্নআয়ের মানুষের। শিল্প কারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্প কারখানার নির্গত গরম পানি জলাবদ্ধতায় মিশে গেছে। তাতে জলাবদ্ধতার পানি কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। এ পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পানির কীট-পতঙ্গসহ মাছ মরে যাচ্ছে। আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’
ইসলামবাগ এলাকার গৃহিণী নাজমা বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঘরে হাঁটু সমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।’
গোলাকান্দাইল এলাকার সচেতন মহল বলেন, ‘রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সে কারণে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘর বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা টিএনও স্যারের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

আমলাব মুসলিম পাড়া এলাকার হানিফ বলেন, ‘১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে।’ বাইনাদি এলাকায় সুইচগেট থাকলেও ওখানকার দায়িত্বে ঢাকা ব্যক্তিরা সময়মত মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বাইনাদি এলাকায় পাম্পের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।