ঢাকা , শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ভিন্নমত প্রকাশকে ‘নিরাপত্তা হুমকি’ দেখত হাসিনার সরকার Logo সব ছেড়ে আধ্যাত্মিকতায় মন দিলেন জ্যাকুলিন! Logo জোড়া সেঞ্চুরিতে স্বস্তি নিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ Logo ‘ইসরায়েলের আকাশসীমা আমাদের দখলে’, দাবি ইরানের Logo ফতুল্লায় ড্রেন থেকে যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার Logo সোনারগাঁয়ে রাস্তার পাশ থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার Logo আড়াইহাজারে যুবদলের আহবায়কের পেটে ১২শ’ পিস ইয়াবা Logo রূপগঞ্জে রাজনৈতিক কোন্দলে ফার্মেসিতে গুলিবর্ষণ: গার্মেন্টস শ্রমিক গুলিবিদ্ধ Logo ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও করোনা সচেতনতায় ২৩ ও ২২নং ওয়ার্ডে আশার মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ Logo ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের দুঃসংবাদ দিলো মার্কিন দূতাবাস

সিদ্ধিরগঞ্জে কোটি টাকার সম্পদ ভূমি কর্মকর্তার, অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত করে ব্যবস্থা : ডিসি

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের কোটি টাকার মূল্যের রাজকীয় ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় হাবিবুর রহমানের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে আলোচনার ঝড় বইছে। সিদ্ধিরগঞ্জে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘুষ ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ওই অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (তহসিলদার) মোঃ হাবিবুর রহমান আপন টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। করেছেন নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় ৩ নং রোডে ১৩ নাম্বার বাড়িতে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের তিনটি বিলাস বহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। যার বাজার মূল্য তিন থেকে চার কোটি টাকা। সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নামে-
বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকা সম্পদ।

ভূমি সংক্রান্ত যে কোন সেবার বিনিময়ে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এই অফিসে গ্রাহকদের হয়রানি নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় ৩ নাম্বার রোডের ১৩ নাম্বার ১০ তলা ভবনে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে এমন সত্যতা পাওয়া যায়। ভবনের সিকিউরিটি বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ভূমিপল্লীতে বেনামে রয়েছে তার আরো সম্পদ। শুধু তাই নয় তার দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বাসি।

সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমি অফিসে নামজারি, জমাভাগ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তোলা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিক ভাবে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। নামজারি করাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।

চুক্তির টাকা ছাড়া কোন ফাইলই নড়ে না। টাকা না দিলে নির্ধারিত সময়ে কোন কাজ আদায় করা যায় না।

এই ভূমি অফিসের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান আপন গ্রাহক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে হয়রারি করছে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অগোচরে মাঠ পর্যায়ের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এ গুণধর কর্মকর্তা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে জমির কাজে আসা ভূক্তভোগীরা বলছেন। ভূমি অফিসে আসা এক গ্রাহক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, এই অফিসের কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান ভূমি অফিসে কাজে আসা গ্রাহকদের কাজ সম্পাদনের বিষয়ে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেন।
সেবা প্রাপ্তির ৮০ শতাংশ লোকই চরম হয়রানির শিকার হতে হয় আজ না-কাল সময়ক্ষেপন করে। সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত হারে দাবিকৃত উৎকোচ না দিলে সেবা গ্রহীতারা পান না তাদের কাঙ্খিত সেবা। ভূক্তভোগীরা আরও জানান, এই ভূমি অফিসের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। নামজারির তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মোটা অংক টাকা আদায় করে এই অফিসের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেয়ার কথা বলে। ভুক্তভোগীদের দাবী এই ভূমি কর্মকর্তার দুর্নীতি রোধে দুদকের সু-হস্তক্ষেপ জরুরি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমার বাবা একজন ব্যাংকার ছিলেন,ওই সময় আমরা অনেক টাকা পয়সার মালিক ছিলাম, আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন শিল্পপতি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার সম্পদের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা আছে। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লীতে প্রায় তিন কোটি টাকার ফ্ল্যাট এর মালিক কিভাবে হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তার সাথে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

উক্ত বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

ভিন্নমত প্রকাশকে ‘নিরাপত্তা হুমকি’ দেখত হাসিনার সরকার

সিদ্ধিরগঞ্জে কোটি টাকার সম্পদ ভূমি কর্মকর্তার, অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত করে ব্যবস্থা : ডিসি

আপডেট সময় ১০:৫৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের কোটি টাকার মূল্যের রাজকীয় ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় হাবিবুর রহমানের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে আলোচনার ঝড় বইছে। সিদ্ধিরগঞ্জে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘুষ ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ওই অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (তহসিলদার) মোঃ হাবিবুর রহমান আপন টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। করেছেন নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় ৩ নং রোডে ১৩ নাম্বার বাড়িতে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের তিনটি বিলাস বহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। যার বাজার মূল্য তিন থেকে চার কোটি টাকা। সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নামে-
বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকা সম্পদ।

ভূমি সংক্রান্ত যে কোন সেবার বিনিময়ে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এই অফিসে গ্রাহকদের হয়রানি নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় ৩ নাম্বার রোডের ১৩ নাম্বার ১০ তলা ভবনে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে এমন সত্যতা পাওয়া যায়। ভবনের সিকিউরিটি বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ভূমিপল্লীতে বেনামে রয়েছে তার আরো সম্পদ। শুধু তাই নয় তার দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বাসি।

সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমি অফিসে নামজারি, জমাভাগ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তোলা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিক ভাবে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। নামজারি করাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।

চুক্তির টাকা ছাড়া কোন ফাইলই নড়ে না। টাকা না দিলে নির্ধারিত সময়ে কোন কাজ আদায় করা যায় না।

এই ভূমি অফিসের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান আপন গ্রাহক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে হয়রারি করছে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অগোচরে মাঠ পর্যায়ের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এ গুণধর কর্মকর্তা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে জমির কাজে আসা ভূক্তভোগীরা বলছেন। ভূমি অফিসে আসা এক গ্রাহক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, এই অফিসের কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান ভূমি অফিসে কাজে আসা গ্রাহকদের কাজ সম্পাদনের বিষয়ে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেন।
সেবা প্রাপ্তির ৮০ শতাংশ লোকই চরম হয়রানির শিকার হতে হয় আজ না-কাল সময়ক্ষেপন করে। সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত হারে দাবিকৃত উৎকোচ না দিলে সেবা গ্রহীতারা পান না তাদের কাঙ্খিত সেবা। ভূক্তভোগীরা আরও জানান, এই ভূমি অফিসের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। নামজারির তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মোটা অংক টাকা আদায় করে এই অফিসের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেয়ার কথা বলে। ভুক্তভোগীদের দাবী এই ভূমি কর্মকর্তার দুর্নীতি রোধে দুদকের সু-হস্তক্ষেপ জরুরি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমার বাবা একজন ব্যাংকার ছিলেন,ওই সময় আমরা অনেক টাকা পয়সার মালিক ছিলাম, আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন শিল্পপতি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার সম্পদের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা আছে। সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লীতে প্রায় তিন কোটি টাকার ফ্ল্যাট এর মালিক কিভাবে হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তার সাথে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

উক্ত বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।