ঢাকা , সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo কাঁকড়ায় খাওয়া-কাটা ইলিশে সাধ মেটাচ্ছে মধ্যবিত্তরা Logo বিদেশের সব দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ Logo খাটরা পশ্চিম পাড়া কবরস্থান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও জনউদ্বেগ Logo ৫০ ঊর্ধ্বে কফি হাউজ শেষবেলা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হাজীগঞ্জ ফুটবল টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন Logo প্রাবসী স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি স্ত্রী সোনিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে Logo নির্ট ওনার্স নির্বাচনে সেলিম সারোয়ার প্যানেলে নিরুঙ্কুশ জয় Logo হাজী শহীদুল্লাহ্ টিটু’র নিরপেক্ষতায় গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার এর মাধ্যমে পাগলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন Logo রূপগঞ্জে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক নির্মূলে বিআরপি পার্টির উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন Logo খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে বন্দরে বিএনপির পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া

কাঁকড়ায় খাওয়া-কাটা ইলিশে সাধ মেটাচ্ছে মধ্যবিত্তরা

‘আমরা যদি সকালে ৫০ কেজি মাছ কিনি তাহলে ৪০ কেজি কিনি কাটা মাছ আর ১০ কেজি কিনি ভালো মাছ। এখন ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১৫০০ টাকার ওপর, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১২০০ টাকার ওপর। এগুলো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই সমুদ্র থেকে জেলেদের নিয়ে আসা অর্ধ-কাটা মাছগুলোতেই মধ্যবিত্তদের চাহিদা বেশি।’

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালীর বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাশেই অবস্থান করা আলীপুর বাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা মো. মিলন হোসেন।

শুধু মিলন নন, আলিপুর বাজারের ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীদের অনেকেরই ভাষ্য এমন। শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল ও সন্ধ্যার পর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, জেলেদের কাছ থেকে কিনে আনা মাছের মাথা কাটা, লেজ কাটা, মাছের মধ্যাংশ কাটা। এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আবার মাঝারি সাইজের মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের পরিমাণ যখন বৃদ্ধি পায় তখন কাটা মাছের দাম কিছুটা কমে, আবার যখন মাছের পরিমাণ কমে যায় তখন এর দামও বৃদ্ধি পায়।

জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, জেলেরা যখন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য জাল ফেলেন, তখন অনেক মাছ জালে আটকে কাটা পড়ে, কাঁকড়ায় কেটে দেয়। এছাড়া সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছ ইলিশের একাংশ কেটে খেয়ে ফেলে। এই মাছগুলো যখন অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসে তখন বেছে বেছে আলাদা করা হয় এবং কম দামে পাইকাররা কিনে নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করেন।

মাছ কিনতে আসা মো. ইউনুস জানান, ৪-৫ বছর আগে ইলিশ খুব সস্তা ছিল। অনেক বড় এবং ভালো ইলিশ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি ছিল। কিন্তু এখন একটি এক কেজির ইলিশ দুই হাজার টাকার ওপর। তাই এখন গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই এই কাটা ও পচা মাছ কিনছেন।

আবুল বাসার নামের এক ক্রেতা বলেন, ইলিশ কিনতে বাজারে এসেছি, কিন্তু এসে দেখি ভালো ইলিশের অনেক দাম। অটোরিকশা চালিয়ে যা আমার পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। তাই কাটা ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করছি। ছোট-বড় মেলানো এক কেজি কাটা ইলিশ চাচ্ছে ৩৫০ টাকা। এখন দেখছি কাটা ইলিশ কেনাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দেখি যদি আরেকটু কমে পাই তাহলে এক কেজি কাটা ইলিশ নিয়ে বাড়িতে যাব।

বাজারে আব্দুল্লাহ নামের এক মাছ বিক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, প্রতি বছর যেভাবে সমুদ্রের মাছ কমছে, তাতে আগামী দু-এক বছর পর কাটা ইলিশও মানুষ পাবে না। যদি সমুদ্রে ইলিশ না থাকে, তাহলে কাটা ইলিশ কোথা থেকে আসবে। তাই সরকারের উচিত কেন ইলিশ কমছে সেটার দিকে নজর দেওয়া। না হলে আমরা যারা জেলে ও মৎস্য পেশায় রয়েছি, আমাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

কাঁকড়ায় খাওয়া-কাটা ইলিশে সাধ মেটাচ্ছে মধ্যবিত্তরা

কাঁকড়ায় খাওয়া-কাটা ইলিশে সাধ মেটাচ্ছে মধ্যবিত্তরা

আপডেট সময় ১১:৩৪:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

‘আমরা যদি সকালে ৫০ কেজি মাছ কিনি তাহলে ৪০ কেজি কিনি কাটা মাছ আর ১০ কেজি কিনি ভালো মাছ। এখন ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১৫০০ টাকার ওপর, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১২০০ টাকার ওপর। এগুলো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই সমুদ্র থেকে জেলেদের নিয়ে আসা অর্ধ-কাটা মাছগুলোতেই মধ্যবিত্তদের চাহিদা বেশি।’

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালীর বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাশেই অবস্থান করা আলীপুর বাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা মো. মিলন হোসেন।

শুধু মিলন নন, আলিপুর বাজারের ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীদের অনেকেরই ভাষ্য এমন। শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল ও সন্ধ্যার পর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, জেলেদের কাছ থেকে কিনে আনা মাছের মাথা কাটা, লেজ কাটা, মাছের মধ্যাংশ কাটা। এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আবার মাঝারি সাইজের মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের পরিমাণ যখন বৃদ্ধি পায় তখন কাটা মাছের দাম কিছুটা কমে, আবার যখন মাছের পরিমাণ কমে যায় তখন এর দামও বৃদ্ধি পায়।

জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, জেলেরা যখন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য জাল ফেলেন, তখন অনেক মাছ জালে আটকে কাটা পড়ে, কাঁকড়ায় কেটে দেয়। এছাড়া সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছ ইলিশের একাংশ কেটে খেয়ে ফেলে। এই মাছগুলো যখন অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসে তখন বেছে বেছে আলাদা করা হয় এবং কম দামে পাইকাররা কিনে নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করেন।

মাছ কিনতে আসা মো. ইউনুস জানান, ৪-৫ বছর আগে ইলিশ খুব সস্তা ছিল। অনেক বড় এবং ভালো ইলিশ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি ছিল। কিন্তু এখন একটি এক কেজির ইলিশ দুই হাজার টাকার ওপর। তাই এখন গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই এই কাটা ও পচা মাছ কিনছেন।

আবুল বাসার নামের এক ক্রেতা বলেন, ইলিশ কিনতে বাজারে এসেছি, কিন্তু এসে দেখি ভালো ইলিশের অনেক দাম। অটোরিকশা চালিয়ে যা আমার পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। তাই কাটা ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করছি। ছোট-বড় মেলানো এক কেজি কাটা ইলিশ চাচ্ছে ৩৫০ টাকা। এখন দেখছি কাটা ইলিশ কেনাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দেখি যদি আরেকটু কমে পাই তাহলে এক কেজি কাটা ইলিশ নিয়ে বাড়িতে যাব।

বাজারে আব্দুল্লাহ নামের এক মাছ বিক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, প্রতি বছর যেভাবে সমুদ্রের মাছ কমছে, তাতে আগামী দু-এক বছর পর কাটা ইলিশও মানুষ পাবে না। যদি সমুদ্রে ইলিশ না থাকে, তাহলে কাটা ইলিশ কোথা থেকে আসবে। তাই সরকারের উচিত কেন ইলিশ কমছে সেটার দিকে নজর দেওয়া। না হলে আমরা যারা জেলে ও মৎস্য পেশায় রয়েছি, আমাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে।