ঢাকা , শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মুছাপুরে স্বর্ণকার অজিতের প্রেমের ফাঁদে সর্বশান্ত প্রবাসী নারী

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের তাজপুর এলাকায় স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রেখে এক জর্ডান প্রবাসী নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে।

এরপর স্বর্ণের দোকানে ব্যবসা করার কথা বলে ওই প্রবাসী নারীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় কষ্টে উপার্জিত নগদ ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার।

তবে এতেও সীমাবদ্ধ থাকেনি অজিত চন্দ্র পাল। আরো টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে প্রবাসী অঞ্জলী রানীর উপরে। স্বামী অজিত চন্দ্র পালের দাবিকৃত অর্থ দিতে না পারায় এরপর শুরু হয় শারিরীক নির্যাতন। স্বামী অজিত চন্দ্র পালের পাশাপাশি তার প্রথম স্ত্রী মালতী পাল ও পুত্র অংকন পালের দ্বারাও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে অঞ্জলীকে।

সুবিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হলেও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা অঞ্জলী। বরং প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে হুমকী ধমকী ভয়ভীতি মারধরের শিকার হতে হচ্ছে অঞ্জলী ও তার পরিবারকে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে বাদি হয়ে একটি পিটিশন মামলা (নং ১৭১/২৪) দায়ের করেন প্রবাসী অঞ্জলী রানী। এতে বিবাদী করা হয়েছে বন্দর থানাধীন বারপাড়া তাজপুর এলাকার বিষ্ণুপদ পাল ও অর্পনা রানী পালের পুত্র স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল, অজিত চন্দ্র পালের প্রথম স্ত্রী মালতী পাল ও পুত্র অংকন পাল।

মামলায় অঞ্জলী রানী উল্লেখ করেন বিবাদীগণ হারমাইদ, উশৃঙ্খল, যৌতুক লোভী, নারী নির্যাতনকারী ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাহীন। স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল নিজের বিয়ের কথা গোপন করে প্রবাসী অঞ্জলী রানীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে।

পরবর্তীতে অঞ্জলী রানী কর্মের তাগিদে বিদেশে অবস্থান করেন। অঞ্জলী রানী বিদেশে থাকাবস্থায় অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো। পরবর্তীতে বাদীনি বিগত ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসলে এয়ার পোর্টে যেয়ে নিয়ে আসে।

পরবর্তীতে আরও কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর অজিত চন্দ্র অঞ্জলী রানীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। অঞ্জলী রানী ১টি পুত্র সন্তান রয়েছে।

ওই সন্তানসহ অঞ্জলী রানীকে বিয়ে করার কোন আপত্তি নাই বললে অজিতের কথায় বিশ্বায় করে বিগত ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এসে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এবং স্বাক্ষীদের সম্মুখে হলফনামার মাধ্যমে বিয়ে হয় এবং গঙ্গাপুর কালী মন্দিরের পুরোহিতের মাধ্যমে বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন করেন।

পরবর্তীতে বিয়ের পর অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীকে নিয়ে লাঙ্গলবন্দ বাসা ভাড়া করিয়া সংসার করতে থাকে। সংসার করা থাকাবস্থায় অঞ্জলী রানীকে বলে অজিত বলে যে, স্বর্ণের দোকানে ব্যবসার করার জন্য অঞ্জলী রানী অঞ্জলী রানী নিকট বিদেশ থেকে আনা ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণ দেওয়ার জন্য বলে। অঞ্জলী রানী সংসারের সুখের কথা চিন্তা করিয়া ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণ ১নং বিবাদীকে দিয়ে দেন।

পরবর্তীতে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর অঞ্জলী রানীর থেকে আরও টাকা চাইলে সে বলে আমার কাছে কোন টাকা নাই। পরবর্তীতে অঞ্জলী রানী জানতে পারে যে অজিত চন্দ্র পাল বিবাহিত এবং তাহার স্ত্রী ও ছেলে সন্তান রহিয়াছে।

এরপর২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীর কাছে আরো ৫ লাখ টাকা তার পিত্রালয় হইতে যৌতুক নিয়ে দেওয়ার জন্য বলিলে সে কোন টাকা দিতে পারবে না বললে তাকে অজিত চন্দ্র পালের পথম স্ত্রী ও সন্তান মিলে এলোপাথারী ভাবে মারধর করতে থাকে।

এসময় যৌতুক বাবদ টাকা না দিলে অঞ্জলীকে নিয়ে সংসার করবে না বলে হুমকী দিয়ে চলে যায় অজিত চন্দ্র পাল। এরপর অঞ্জলী বন্দর বাঘবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনায়গত ২০ এপ্রিল বন্দর থানায় একটি জিডি (নং ৮৪৮) দায়ের করেন অঞ্জলী রানী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলা দায়ের করার কারণে বিবাদী অজিত চন্দ্র পাল তার বোনের বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকী ধমকী দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকীও দেয়।

এদিকে গত ২৫ এপ্রিল বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আবু বকর সিদ্দিক নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ওই প্রতিবেদন তিনি স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে বাদিনী অঞ্জলী রানীর কাছ থেকে নগদ ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়া এবং দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

গত ১৫ মে বন্দর থানায় আরো একটি জিডি (নং ৬৬০) দায়ের করেন অঞ্জলী রানী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলা দায়ের করার কারণে অজিত চন্দ্র পালের পুত্র অংকন পাল বিবাদী অঞ্জলী রানীকে অপহরণ ও গুমের হুমকী দেয়। মামলা তুলে না নিলে বিবাদী প্রাণনাশের হুমকীও দেয়।

এদিকে সর্বশেষ গত ২৪ মে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে কিছু লোকদের সঙ্গে নিয়ে বিবাদীর বোনের বাড়িতে যায় স্বর্ণকার অজিত ও তার পুত্র অংকন। মামলা তুলে না নিলে প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলেও হুমকী দেয়া হয়।

প্রবাসী অঞ্জলী রানী বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সুখের আশায় অজিতকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু সে যে এতবড় প্রতারক সেটা আমার জানা ছিলনা। সে আমার কষ্টে উপার্জিত সকল অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে আমাকে নি:স্ব করে দিয়েছে। যৌতুকের জন্য আমাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

আমার কাছ থেকে স্বর্ণের দোকানে বিনিয়োগের কথা বলে নেয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে অজিত, তার ১ম স্ত্রী ও সন্তান মিলে আমাকে মারধর করেছে। এ বিষয়ে জানতে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নিতাইগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

মুছাপুরে স্বর্ণকার অজিতের প্রেমের ফাঁদে সর্বশান্ত প্রবাসী নারী

আপডেট সময় ০৩:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের তাজপুর এলাকায় স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রেখে এক জর্ডান প্রবাসী নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে।

এরপর স্বর্ণের দোকানে ব্যবসা করার কথা বলে ওই প্রবাসী নারীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় কষ্টে উপার্জিত নগদ ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার।

তবে এতেও সীমাবদ্ধ থাকেনি অজিত চন্দ্র পাল। আরো টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে প্রবাসী অঞ্জলী রানীর উপরে। স্বামী অজিত চন্দ্র পালের দাবিকৃত অর্থ দিতে না পারায় এরপর শুরু হয় শারিরীক নির্যাতন। স্বামী অজিত চন্দ্র পালের পাশাপাশি তার প্রথম স্ত্রী মালতী পাল ও পুত্র অংকন পালের দ্বারাও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে অঞ্জলীকে।

সুবিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হলেও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা অঞ্জলী। বরং প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে হুমকী ধমকী ভয়ভীতি মারধরের শিকার হতে হচ্ছে অঞ্জলী ও তার পরিবারকে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে বাদি হয়ে একটি পিটিশন মামলা (নং ১৭১/২৪) দায়ের করেন প্রবাসী অঞ্জলী রানী। এতে বিবাদী করা হয়েছে বন্দর থানাধীন বারপাড়া তাজপুর এলাকার বিষ্ণুপদ পাল ও অর্পনা রানী পালের পুত্র স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল, অজিত চন্দ্র পালের প্রথম স্ত্রী মালতী পাল ও পুত্র অংকন পাল।

মামলায় অঞ্জলী রানী উল্লেখ করেন বিবাদীগণ হারমাইদ, উশৃঙ্খল, যৌতুক লোভী, নারী নির্যাতনকারী ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাহীন। স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল নিজের বিয়ের কথা গোপন করে প্রবাসী অঞ্জলী রানীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে।

পরবর্তীতে অঞ্জলী রানী কর্মের তাগিদে বিদেশে অবস্থান করেন। অঞ্জলী রানী বিদেশে থাকাবস্থায় অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো। পরবর্তীতে বাদীনি বিগত ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসলে এয়ার পোর্টে যেয়ে নিয়ে আসে।

পরবর্তীতে আরও কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর অজিত চন্দ্র অঞ্জলী রানীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। অঞ্জলী রানী ১টি পুত্র সন্তান রয়েছে।

ওই সন্তানসহ অঞ্জলী রানীকে বিয়ে করার কোন আপত্তি নাই বললে অজিতের কথায় বিশ্বায় করে বিগত ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এসে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এবং স্বাক্ষীদের সম্মুখে হলফনামার মাধ্যমে বিয়ে হয় এবং গঙ্গাপুর কালী মন্দিরের পুরোহিতের মাধ্যমে বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন করেন।

পরবর্তীতে বিয়ের পর অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীকে নিয়ে লাঙ্গলবন্দ বাসা ভাড়া করিয়া সংসার করতে থাকে। সংসার করা থাকাবস্থায় অঞ্জলী রানীকে বলে অজিত বলে যে, স্বর্ণের দোকানে ব্যবসার করার জন্য অঞ্জলী রানী অঞ্জলী রানী নিকট বিদেশ থেকে আনা ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণ দেওয়ার জন্য বলে। অঞ্জলী রানী সংসারের সুখের কথা চিন্তা করিয়া ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণ ১নং বিবাদীকে দিয়ে দেন।

পরবর্তীতে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর অঞ্জলী রানীর থেকে আরও টাকা চাইলে সে বলে আমার কাছে কোন টাকা নাই। পরবর্তীতে অঞ্জলী রানী জানতে পারে যে অজিত চন্দ্র পাল বিবাহিত এবং তাহার স্ত্রী ও ছেলে সন্তান রহিয়াছে।

এরপর২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পাল অঞ্জলী রানীর কাছে আরো ৫ লাখ টাকা তার পিত্রালয় হইতে যৌতুক নিয়ে দেওয়ার জন্য বলিলে সে কোন টাকা দিতে পারবে না বললে তাকে অজিত চন্দ্র পালের পথম স্ত্রী ও সন্তান মিলে এলোপাথারী ভাবে মারধর করতে থাকে।

এসময় যৌতুক বাবদ টাকা না দিলে অঞ্জলীকে নিয়ে সংসার করবে না বলে হুমকী দিয়ে চলে যায় অজিত চন্দ্র পাল। এরপর অঞ্জলী বন্দর বাঘবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনায়গত ২০ এপ্রিল বন্দর থানায় একটি জিডি (নং ৮৪৮) দায়ের করেন অঞ্জলী রানী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলা দায়ের করার কারণে বিবাদী অজিত চন্দ্র পাল তার বোনের বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকী ধমকী দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকীও দেয়।

এদিকে গত ২৫ এপ্রিল বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আবু বকর সিদ্দিক নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ওই প্রতিবেদন তিনি স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে বাদিনী অঞ্জলী রানীর কাছ থেকে নগদ ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়া এবং দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

গত ১৫ মে বন্দর থানায় আরো একটি জিডি (নং ৬৬০) দায়ের করেন অঞ্জলী রানী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলা দায়ের করার কারণে অজিত চন্দ্র পালের পুত্র অংকন পাল বিবাদী অঞ্জলী রানীকে অপহরণ ও গুমের হুমকী দেয়। মামলা তুলে না নিলে বিবাদী প্রাণনাশের হুমকীও দেয়।

এদিকে সর্বশেষ গত ২৪ মে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে কিছু লোকদের সঙ্গে নিয়ে বিবাদীর বোনের বাড়িতে যায় স্বর্ণকার অজিত ও তার পুত্র অংকন। মামলা তুলে না নিলে প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলেও হুমকী দেয়া হয়।

প্রবাসী অঞ্জলী রানী বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সুখের আশায় অজিতকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু সে যে এতবড় প্রতারক সেটা আমার জানা ছিলনা। সে আমার কষ্টে উপার্জিত সকল অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে আমাকে নি:স্ব করে দিয়েছে। যৌতুকের জন্য আমাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

আমার কাছ থেকে স্বর্ণের দোকানে বিনিয়োগের কথা বলে নেয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে অজিত, তার ১ম স্ত্রী ও সন্তান মিলে আমাকে মারধর করেছে। এ বিষয়ে জানতে স্বর্ণকার অজিত চন্দ্র পালের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় প্রবাসী অঞ্জলী রানীকে নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।