ঢাকা , সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সোনারগাঁয়ে এম্বুলেন্স-সিএনজি`র মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীর মৃত্যু Logo সোনারগাঁয়ে ৫৪ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার Logo আব্দুর রহিমের মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোকসভা ও দোয়া Logo ফতুল্লায় আওয়ামী দোসর শ্রমিকলীগ নেতা পলাশের সাঙ্গ পাঙ্গদের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতার অভিযোগ! Logo তাজুল ইসলাম নূরীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকীতে শফি, মেহেদির শ্রদ্ধাঞ্জলি Logo বন্দরে তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ Logo পর্যটন নগরে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই Logo ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক গোপনীয় নয়: তৌহিদ হোসেন Logo থোকায় থোকায় কমলা, ভাগ্য ফেরাচ্ছে চাষির Logo মাওয়া টোলপ্লাজায় ৭ জন নিহত: সেই বাসমালিক গ্রেপ্তার

সেন্টমার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই

সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে ‘সুশান্ত দাস গুপ্ত’ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা একটি পোস্টকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

সুশান্ত দাস গুপ্ত নামে ওই ব্যক্তি তার পোস্টে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’- এর একটি ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন করেন, ‘ডিল ডান?’ ‘সেন্টমার্টিন গন?’ এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ জানিয়েছে, সেন্টমার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টকসের সঙ্গে সেন্টমার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব।

অন্তর্বর্তী সরকার অনেকবার জানিয়েছে যে সেন্টমার্টিন কোনো বিদেশি দেশের কাছে কোনো উদ্দেশে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই।

এদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে মোরশেদ মাহবুবুল নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা পোস্টেরও ব্যাখ্যা দিয়েছে সিএ প্রেস উইং। মোরশেদ মাহবুবুল নামের ওই ব্যক্তি তার পোস্টে দাবি করেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের বর্তমান অবস্থা: ১. সাগরে মাছ ধরা বন্ধ; ২. পর্যটক আসা সম্পূর্ণ বন্ধ; ৩. হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ তিন মাস; ৪. বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ শাটডাউন।’

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন কমপক্ষে ২০ ধরনের বিপদের মুখে পড়েছে। গত ১৫ এপ্রিল ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যাডভান্স’ নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পর্যটনের কারণে সেন্টমার্টিনে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে। দুই মাস ধরে দ্বীপে আরেকটি নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর সাদা মাছির উৎপাত। এই মাছি দ্বীপের গাছপালা ধ্বংস করছে। সাদা মাছির কারণে গত কয়েক মাসে ৩০০ নারিকেল গাছ মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা সেন্টমার্টিনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত পর্যটনকে দায়ী করছেন। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষণা অনুযায়ী দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটির ৪১ ভাগ প্রবাল ধ্বংস হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ থামানো না গেলে ২০৪৫ সালের মধ্যে এই দ্বীপের সব প্রবল ধ্বংস হবে যাবে আর দ্বীপটিও ডুবে যাবে।

সরকার এই দ্বীপ রক্ষায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে, আর বেআইনি স্থাপনার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বৃহত্তর জনস্বার্থে। দেশের একমাত্র প্রবালের দ্বীপ সেন্টমার্টিন বেঁচে থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্যও।

প্রেস উইং আরও জানায়, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হয়নি; হাসপাতাল সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে; বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে; জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় নভেম্বরে পর্যটকরা দ্বীপে রাত্রি যাপন করতে পারবেন না, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে গড়ে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে এম্বুলেন্স-সিএনজি`র মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীর মৃত্যু

সেন্টমার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই

আপডেট সময় ১০:৪০:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে ‘সুশান্ত দাস গুপ্ত’ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা একটি পোস্টকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

সুশান্ত দাস গুপ্ত নামে ওই ব্যক্তি তার পোস্টে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’- এর একটি ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন করেন, ‘ডিল ডান?’ ‘সেন্টমার্টিন গন?’ এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ জানিয়েছে, সেন্টমার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টকসের সঙ্গে সেন্টমার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব।

অন্তর্বর্তী সরকার অনেকবার জানিয়েছে যে সেন্টমার্টিন কোনো বিদেশি দেশের কাছে কোনো উদ্দেশে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই।

এদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে মোরশেদ মাহবুবুল নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা পোস্টেরও ব্যাখ্যা দিয়েছে সিএ প্রেস উইং। মোরশেদ মাহবুবুল নামের ওই ব্যক্তি তার পোস্টে দাবি করেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের বর্তমান অবস্থা: ১. সাগরে মাছ ধরা বন্ধ; ২. পর্যটক আসা সম্পূর্ণ বন্ধ; ৩. হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ তিন মাস; ৪. বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ শাটডাউন।’

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন কমপক্ষে ২০ ধরনের বিপদের মুখে পড়েছে। গত ১৫ এপ্রিল ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যাডভান্স’ নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পর্যটনের কারণে সেন্টমার্টিনে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে। দুই মাস ধরে দ্বীপে আরেকটি নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর সাদা মাছির উৎপাত। এই মাছি দ্বীপের গাছপালা ধ্বংস করছে। সাদা মাছির কারণে গত কয়েক মাসে ৩০০ নারিকেল গাছ মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা সেন্টমার্টিনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত পর্যটনকে দায়ী করছেন। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষণা অনুযায়ী দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটির ৪১ ভাগ প্রবাল ধ্বংস হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ থামানো না গেলে ২০৪৫ সালের মধ্যে এই দ্বীপের সব প্রবল ধ্বংস হবে যাবে আর দ্বীপটিও ডুবে যাবে।

সরকার এই দ্বীপ রক্ষায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে, আর বেআইনি স্থাপনার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বৃহত্তর জনস্বার্থে। দেশের একমাত্র প্রবালের দ্বীপ সেন্টমার্টিন বেঁচে থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্যও।

প্রেস উইং আরও জানায়, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হয়নি; হাসপাতাল সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে; বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে; জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় নভেম্বরে পর্যটকরা দ্বীপে রাত্রি যাপন করতে পারবেন না, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে গড়ে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক রাত্রি যাপন করতে পারবেন।