ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডলার সিন্ডিকেট শনাক্তে তিন সংস্থার কঠোর নজরদারি

ডলার সিন্ডিকেটে জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠপর্যায়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। কারা বেশি দামে ডলার কিনছেন, কোথায় মজুত করছেন, কিভাবে এগুলো বিক্রি করছেন—এসব তথ্য সংগ্রহ করছে সংস্থাগুলো। ব্যাংক, মানি চেঞ্জার্স বা কোনো ব্যক্তির সম্ভাব্য ঠিকানায়ও অভিযান পরিচালনা করবে সংস্থাগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তদন্ত করছে। মানি চেঞ্জার্স ও কার্ব মার্কেটে তদন্ত করছে এনএসআই। তাদের সহায়তা করছে বিএফআইইউর কর্মকর্তারা। তিন পক্ষই ডলার নিয়ে কারসাজি ও মজুতকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ও মানি চেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে বেশি দামে কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে। সেসব ডলার আবার বেশি দামে বিক্রি করেছে। ওই সময়ে রেমিট্যান্সের প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা করে কেনার কথা।

কিন্তু কিছু ব্যাংক কিনেছে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা করে। প্রতি ডলারে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দিয়েছে। ফলে বিদেশি বহুজাতিক এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো বেশি দাম যে ব্যাংকে পেয়েছে ওই ব্যাংকে ডলার দিয়েছে। এতে করে ছোট ব্যাংকগুলোর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। কমেছে বড় ব্যাংকগুলোর।

বেশি দামে কেনা ডলার ওইসব ব্যাংক বিক্রি করেছে ১১৬ থেকে ১১৭ টাকা করে। প্রতি ডলারে তারা ৩ টাকা মুনাফা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে এক টাকার বেশি ব্যবধান হওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ প্রতি ডলারে এক টাকা মুনাফা করা যাবে।

অপরদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকে প্রকট ডলার সংকটের কথা বাইরে জানাজানি হলে মানি চেঞ্জার্সগুলোও ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়। তাদের প্রতি ডলার বিক্রি করার কথা সর্বোচ্চ ১১২ টাকায়। কিন্তু তারা অফিশিয়ালি ডলার না কিনে খোলা বাজারের হিসাবে ডলার কেনাবেচা শুরু করে।

প্রতি ডলার কিনেছে ১১৬ টাকা করে বিক্রি করেছে ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা করে। এতে করে নগদ ডলারের একটি বড় অংশই খোলা বাজারে চলে যেতে থাকে। ব্যাংকে ডলারের প্রবাহ কমে যায়। এ অবস্থায় মানি চেঞ্জার্স ও কার্ব মার্কেটে তদন্ত শুরু করেছে এনএসআই। এতে সহায়তা করে বিএফআইইউ।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, কার্ব মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে নগদ ডলারের জোগান দেওয়ার জন্য কয়েকজন আমদানিকারক আগে থেকেই বলে রেখেছিলেন। সে অনুযায়ী কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ডলারের জোগান দিয়েছেন। ওইসব ডলার দিয়ে আমদানিকরকরা বিলাসী পণ্য আমদানির এলসি খুলেছেন। কারণ বিলাসী পণ্য আমদানির এলসি খুলতে ব্যাংক ডলার দিচ্ছে না। এভাবে কার্ব মার্কেট থেকে ডলার কিনে তা দিয়ে এলসি খোলা বেআইনি। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

ডলার সিন্ডিকেট শনাক্তে তিন সংস্থার কঠোর নজরদারি

আপডেট সময় ০৪:১১:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ডলার সিন্ডিকেটে জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠপর্যায়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। কারা বেশি দামে ডলার কিনছেন, কোথায় মজুত করছেন, কিভাবে এগুলো বিক্রি করছেন—এসব তথ্য সংগ্রহ করছে সংস্থাগুলো। ব্যাংক, মানি চেঞ্জার্স বা কোনো ব্যক্তির সম্ভাব্য ঠিকানায়ও অভিযান পরিচালনা করবে সংস্থাগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তদন্ত করছে। মানি চেঞ্জার্স ও কার্ব মার্কেটে তদন্ত করছে এনএসআই। তাদের সহায়তা করছে বিএফআইইউর কর্মকর্তারা। তিন পক্ষই ডলার নিয়ে কারসাজি ও মজুতকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ও মানি চেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে বেশি দামে কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে। সেসব ডলার আবার বেশি দামে বিক্রি করেছে। ওই সময়ে রেমিট্যান্সের প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা করে কেনার কথা।

কিন্তু কিছু ব্যাংক কিনেছে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা করে। প্রতি ডলারে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দিয়েছে। ফলে বিদেশি বহুজাতিক এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো বেশি দাম যে ব্যাংকে পেয়েছে ওই ব্যাংকে ডলার দিয়েছে। এতে করে ছোট ব্যাংকগুলোর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। কমেছে বড় ব্যাংকগুলোর।

বেশি দামে কেনা ডলার ওইসব ব্যাংক বিক্রি করেছে ১১৬ থেকে ১১৭ টাকা করে। প্রতি ডলারে তারা ৩ টাকা মুনাফা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে এক টাকার বেশি ব্যবধান হওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ প্রতি ডলারে এক টাকা মুনাফা করা যাবে।

অপরদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকে প্রকট ডলার সংকটের কথা বাইরে জানাজানি হলে মানি চেঞ্জার্সগুলোও ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়। তাদের প্রতি ডলার বিক্রি করার কথা সর্বোচ্চ ১১২ টাকায়। কিন্তু তারা অফিশিয়ালি ডলার না কিনে খোলা বাজারের হিসাবে ডলার কেনাবেচা শুরু করে।

প্রতি ডলার কিনেছে ১১৬ টাকা করে বিক্রি করেছে ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা করে। এতে করে নগদ ডলারের একটি বড় অংশই খোলা বাজারে চলে যেতে থাকে। ব্যাংকে ডলারের প্রবাহ কমে যায়। এ অবস্থায় মানি চেঞ্জার্স ও কার্ব মার্কেটে তদন্ত শুরু করেছে এনএসআই। এতে সহায়তা করে বিএফআইইউ।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, কার্ব মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে নগদ ডলারের জোগান দেওয়ার জন্য কয়েকজন আমদানিকারক আগে থেকেই বলে রেখেছিলেন। সে অনুযায়ী কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ডলারের জোগান দিয়েছেন। ওইসব ডলার দিয়ে আমদানিকরকরা বিলাসী পণ্য আমদানির এলসি খুলেছেন। কারণ বিলাসী পণ্য আমদানির এলসি খুলতে ব্যাংক ডলার দিচ্ছে না। এভাবে কার্ব মার্কেট থেকে ডলার কিনে তা দিয়ে এলসি খোলা বেআইনি। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।