ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুসনদ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নড়ে উঠলো নবজাতক

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বাড়মা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও হালিমা খাতুন দম্পতির প্রথম সন্তান জন্মের পরই মারা যায়। দুই বছর পর গত রোববার (৬ আগস্ট) তাদের কোলজুড়ে আসে আরেক সন্তান। তবে, শিশুটি জন্মের পরই শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এরপর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করে সনদ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে, বাড়ি ফেরার পথে শিশুটি নড়ে উঠলে তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের এনআইসিইউতে এ ঘটনা ঘটে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে স্বাভাবিকভাবে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন হালিমা খাতুন। সাত মাসে জন্ম নেওয়ায় শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল ও ওজন ছিল ৯০০ গ্রাম। এ কারণে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে মৃত্যুসনদ দেয় হাসপাতাল থেকে। সেখান থেকে বাড়িতে নেওয়ার পথে শিশুটি নড়ে ওঠে। পরে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নবজাতকের চাচা আশিকুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নবজাতক মারা গেছে বলে মৃত্যুসনদ দেওয়া হয়। বাড়ি নেওয়ার পথে নবজাতক নড়ে ওঠে। পরে হাসপাতালে আনা হলে আবারও এনআইসিইউতে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এনআইসিইউ থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় বাচ্চা মারা গেছে। এখন নিতে আসছি, কিন্তু কি কারণে দেরি করছে বলতে পারছি না। এনআইসিইউ থেকে বলছে, অপেক্ষা করতে। চিকিৎসকের অবহেলায় বাচ্চা মারা গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে শিশুকে নিয়ে অটোরিকশায় করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে সদরের চুরখাই এলাকায় যেতেই শিশুটি নড়ে ওঠে এবং নিঃশ্বাস নিতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের আনার পর অক্সিজেন দিতেই বাচ্চা তাকাতে শুরু করে ও হাত-পা নাড়াতে থাকে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাইফ্লো অক্সিজেন দিয়ে এনআইসিইউতে নিয়ে যান। রাত হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, নবজাতক মারা গেছেন। এরপর আনতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে।

আইনগত ব্যবস্থা দেবেন কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।

হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের গেটে কথা হয় কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, নবজাতক মারা গেছে কি না, বেঁচে আছে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাবে। এর বেশি কিছু বলা নিষেধ আছে।

এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. নজরুল ইসলামের নম্বরে একাধিক বার ফোন করলেও সেটি বন্ধ দেখায়।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে, কীভাবে কি হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুসনদ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নড়ে উঠলো নবজাতক

আপডেট সময় ০৪:২৫:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বাড়মা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও হালিমা খাতুন দম্পতির প্রথম সন্তান জন্মের পরই মারা যায়। দুই বছর পর গত রোববার (৬ আগস্ট) তাদের কোলজুড়ে আসে আরেক সন্তান। তবে, শিশুটি জন্মের পরই শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এরপর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করে সনদ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে, বাড়ি ফেরার পথে শিশুটি নড়ে উঠলে তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের এনআইসিইউতে এ ঘটনা ঘটে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে স্বাভাবিকভাবে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন হালিমা খাতুন। সাত মাসে জন্ম নেওয়ায় শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল ও ওজন ছিল ৯০০ গ্রাম। এ কারণে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে মৃত্যুসনদ দেয় হাসপাতাল থেকে। সেখান থেকে বাড়িতে নেওয়ার পথে শিশুটি নড়ে ওঠে। পরে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নবজাতকের চাচা আশিকুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নবজাতক মারা গেছে বলে মৃত্যুসনদ দেওয়া হয়। বাড়ি নেওয়ার পথে নবজাতক নড়ে ওঠে। পরে হাসপাতালে আনা হলে আবারও এনআইসিইউতে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এনআইসিইউ থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় বাচ্চা মারা গেছে। এখন নিতে আসছি, কিন্তু কি কারণে দেরি করছে বলতে পারছি না। এনআইসিইউ থেকে বলছে, অপেক্ষা করতে। চিকিৎসকের অবহেলায় বাচ্চা মারা গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে শিশুকে নিয়ে অটোরিকশায় করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে সদরের চুরখাই এলাকায় যেতেই শিশুটি নড়ে ওঠে এবং নিঃশ্বাস নিতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের আনার পর অক্সিজেন দিতেই বাচ্চা তাকাতে শুরু করে ও হাত-পা নাড়াতে থাকে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাইফ্লো অক্সিজেন দিয়ে এনআইসিইউতে নিয়ে যান। রাত হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, নবজাতক মারা গেছেন। এরপর আনতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে।

আইনগত ব্যবস্থা দেবেন কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।

হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের গেটে কথা হয় কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, নবজাতক মারা গেছে কি না, বেঁচে আছে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাবে। এর বেশি কিছু বলা নিষেধ আছে।

এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. নজরুল ইসলামের নম্বরে একাধিক বার ফোন করলেও সেটি বন্ধ দেখায়।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে, কীভাবে কি হয়েছে।