ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে আবারও পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

সরকারঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বৃহস্পতিবারও (৯ নভেম্বর) গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় পোশাক শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে।

বেশ কয়েক দিন ধরে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার সম্প্রতি শ্রমিকদের সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির ঘোষণা দেয়। তবে এটা প্রত্যাখ্যান করে বুধবারও (৮ নভেম্বর) কোনাবাড়ি ও জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়।

পুলিশ, শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরের পর থেকে কোনাবাড়ি বিসিক এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা কোনাবাড়ির তুষুকা কারখানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাবের একাধিক টহল টিম কাজ করছে। শ্রমিকরা পরে তুষুকা কারখানায় ভাঙচুর চালায়।

বৃহস্পতিবার সকালেও শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা-শিববাড়ী সড়ক বন্ধ করে দেয়। তখন শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়। কিছু সময় পর গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে মহাসড়কে কাঠ, গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে থাকে। দুপুরের খাবার পর্যন্ত শ্রমিকরা শান্ত থাকে এবং পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুপুরের খাবারের বিরতির পর থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। প্রথমে কোনাবাড়ি বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বেরিয়ে আসে। এরপর মিছিল করতে করতে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে। তখন পুলিশে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তখন তুসকা গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের কারখানা শ্রমিকরাও রাস্তা নেমে এসে। বিকেল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলে।

র‌্যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের প্রথমে আমরা শান্ত থাকতে অনুরোধ করি। তারা অনুরোধ উপেক্ষা বিক্ষোভে নেমে নাশকতামূলক কাজ শুরু করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

গাজীপুর-২ শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘এখন ঘটনাস্থলে আছি। শ্রমিকরা অশান্ত এখন কথা বলার পরিবেশ নেই।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে আবারও পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

আপডেট সময় ০৩:৪৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩

সরকারঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বৃহস্পতিবারও (৯ নভেম্বর) গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় পোশাক শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে।

বেশ কয়েক দিন ধরে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার সম্প্রতি শ্রমিকদের সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির ঘোষণা দেয়। তবে এটা প্রত্যাখ্যান করে বুধবারও (৮ নভেম্বর) কোনাবাড়ি ও জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়।

পুলিশ, শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরের পর থেকে কোনাবাড়ি বিসিক এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা কোনাবাড়ির তুষুকা কারখানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাবের একাধিক টহল টিম কাজ করছে। শ্রমিকরা পরে তুষুকা কারখানায় ভাঙচুর চালায়।

বৃহস্পতিবার সকালেও শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা-শিববাড়ী সড়ক বন্ধ করে দেয়। তখন শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়। কিছু সময় পর গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে মহাসড়কে কাঠ, গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে থাকে। দুপুরের খাবার পর্যন্ত শ্রমিকরা শান্ত থাকে এবং পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুপুরের খাবারের বিরতির পর থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। প্রথমে কোনাবাড়ি বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বেরিয়ে আসে। এরপর মিছিল করতে করতে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে। তখন পুলিশে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তখন তুসকা গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের কারখানা শ্রমিকরাও রাস্তা নেমে এসে। বিকেল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলে।

র‌্যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের প্রথমে আমরা শান্ত থাকতে অনুরোধ করি। তারা অনুরোধ উপেক্ষা বিক্ষোভে নেমে নাশকতামূলক কাজ শুরু করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

গাজীপুর-২ শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘এখন ঘটনাস্থলে আছি। শ্রমিকরা অশান্ত এখন কথা বলার পরিবেশ নেই।’