ঢাকা , শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দুর্বার ম্যানসিটির সামনে নিচ্ছিদ্র ইন্টার

ইউরোপের ক্লাব পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্বের আসর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল আজ। মহা গুরুত্বপূর্ণ এই মহারণে মুখোমুখি ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলান। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের আতার্তুক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। যেটি দিয়েই প্রথমবারের মত মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এই দুই দল। সেই ২০০৫ সালে লিভারপুল-এসি মিলানের মতো তারাও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দিয়েই কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। সেই ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইস্তানবুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। এই ম্যাচের লড়াইটা যেমন দুই দলের ঠিক একইভাবে ডাগ-আউটে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা ও সিমনে ইনজাগিরও বটে। এই দুই কোচই এবারের আসর জুড়ে দেখিয়ে এসেছেন তাদের মস্তিষ্কের উর্বরতাও।

ম্যানসিটি এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যেভাবে উঠে এসেছে, সেটি বিচার করলে অবশ্যই তারা ফেবারিট। বিশেষ করে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদকে সিটি যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে, তাতে বেশির ভাগেরই গার্দিওলার দলের ওপর বাজি ধরার কথা। বরাবরের মতই সিটির স্প্যানিশ কোচের মূলশক্তি হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ একাদশ ও শক্তিশালী বেঞ্চ। আজকের ফাইনালে তাই ম্যানসিটির পক্ষে বাজি ধরার মানুষই বেশি। তবে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের জন্য সবচেয়ে বড় দুশিন্তার কারণ হচ্ছে ইন্টারের এই মৌসুমের আত্মবিশ্বাস। বায়ার্ন ও বার্সালোনার গ্রুপ থেকে শেষ ষোলতে ওঠার পর পোর্তো, বেনফিকা, মিলান কারও বিপক্ষেই ফেবারিট ছিল না সান সিরোর নীল-কালোরা। এরপরও তারা আজকের ফাইনাল খেলবে, যা ম্যানসিটির কপালে ভাঁজ পড়ার কারণ।
সিরি আ জিততে না পারলেও ইন্টার এবারের মৌসুম শেষ করেছে ডাবল জিতে। সুপার কোপা ও কোপা ইতালিয়ার শিরোপা তারা ইতিমধ্যেই ঘরে তুলেছে। দলটিতে বুড়িয়ে যাওয়া খেলোয়াড়দের ছড়াছড়ি, তবে এটাও সত্য যে তাদের ইনজাগির কৌশল অনুযায়ী যথাযথ খেলতে পারা ফুটবলারেরও অভাব নেই। লাউতারো মার্টিনেজ, রোমেলু লুকাকো ও এডিন জেকোকে নিয়ে গড়া দলটির ফরোয়ার্ড লাইন এই মৌসুমে গোল করেছে ৬৬টি। তাদের নিরেট রক্ষণের মূলমন্ত্র বাস্তোনি, আছার্বি ও ডার্মিয়ানকে নিয়ে গড়া ব্যাক-লাইনটি।

ইনজাগি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দায়িত্ব পালন করা ষষ্ঠ ইতালিয়ান কোচ। এই ৪৭ বছর বয়সী ম্যানেজার ইন্টারকে ৩-৫-২ ছকেই খেলিয়ে থাকেন। তাঁর অধীনে এখন পর্যন্ত ৩২টি নক-আউট ম্যাচ খেলে ইন্টার জিতেছে ২১টিতে আর হেরেছে মাত্র ৫টিতে। ইনজাগির কৌশলের কারণে এবারের আসরে ১২ ম্যাচের ৮টিতে কোনো গোল হজম করেনি ইন্টার। ফাইনালে সিটিকে আটকে রাখতে পারলে তারা ছুঁয়ে ফেলবে আর্সেনালের ২০০৫-০৬ মৌসুমে ৬ ম্যাচে ক্লিনশীট রাখার রেকর্ড।

অন্যদিকে গার্দিওলার সামনে ১২ বছর পর আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার সুযোগ। তাছাড়া ১৯৯৯ সালের পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডের পর প্রথম ইংলিশ দল হিসেবে ট্রেবল জয়ের সুযোগ। গার্দিওলা বার্সালোনা ছাড়ার পর থেকেই ফাইনালে উঠে বা লিগের বড় ম্যাচে পা ফসকান। এর কারণ হচ্ছে তিনি নতুন বা বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নেন এই ধরনের ম্যাচে। এই স্প্যানিশ কোচ সব সময় চান অন্য ম্যানেজাররা যেন তাঁর কৌশল সম্পূর্ণভাবে বুঝতে না পারেন।

গার্দিওলা এই মৌসুমে সিটিকে ৩-২-৪-১ ছকে খেলাচ্ছেন। যেখানে সেন্টারব্যাক জন স্টোনস কিছু বিশেষ মুহুর্তে মাঝমাঠে রদ্রির সাথে যোগ দিয়ে একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। তিন মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা, বের্নার্ডো সিলভা ও ইকায় গুন্দোগান দলের মূল চালিকা শক্তি। তাছাড়া এই মৌসুমে ৫২ গোল করা আর্লিং হালান্ড তো আছেনই। এই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ১২ গোল করেছেন। এই প্রতিযোগিতায় কোনো ইংলিশ ক্লাবের হয়ে এক আসরে যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় শিরোপা জিতে জিনেদিন জিদানকে ছোঁয়ার হাতছানি এখন গার্দিওলার সামনে। তাদের চেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন কেবল চার বার এই ট্রফি জেতা কার্লো আনচেলত্তি। গার্দিওলার সেই অসামান্য অর্জনের পথে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে কেবল ইন্টার। সান-সিরোর নীল-কালোরাতো চাইবেই চতুর্থবারের মত ইউরোপ সেরা হতে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নিতাইগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

দুর্বার ম্যানসিটির সামনে নিচ্ছিদ্র ইন্টার

আপডেট সময় ০৪:৩৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

ইউরোপের ক্লাব পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্বের আসর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল আজ। মহা গুরুত্বপূর্ণ এই মহারণে মুখোমুখি ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলান। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের আতার্তুক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। যেটি দিয়েই প্রথমবারের মত মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এই দুই দল। সেই ২০০৫ সালে লিভারপুল-এসি মিলানের মতো তারাও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দিয়েই কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। সেই ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইস্তানবুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। এই ম্যাচের লড়াইটা যেমন দুই দলের ঠিক একইভাবে ডাগ-আউটে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা ও সিমনে ইনজাগিরও বটে। এই দুই কোচই এবারের আসর জুড়ে দেখিয়ে এসেছেন তাদের মস্তিষ্কের উর্বরতাও।

ম্যানসিটি এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যেভাবে উঠে এসেছে, সেটি বিচার করলে অবশ্যই তারা ফেবারিট। বিশেষ করে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদকে সিটি যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে, তাতে বেশির ভাগেরই গার্দিওলার দলের ওপর বাজি ধরার কথা। বরাবরের মতই সিটির স্প্যানিশ কোচের মূলশক্তি হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ একাদশ ও শক্তিশালী বেঞ্চ। আজকের ফাইনালে তাই ম্যানসিটির পক্ষে বাজি ধরার মানুষই বেশি। তবে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের জন্য সবচেয়ে বড় দুশিন্তার কারণ হচ্ছে ইন্টারের এই মৌসুমের আত্মবিশ্বাস। বায়ার্ন ও বার্সালোনার গ্রুপ থেকে শেষ ষোলতে ওঠার পর পোর্তো, বেনফিকা, মিলান কারও বিপক্ষেই ফেবারিট ছিল না সান সিরোর নীল-কালোরা। এরপরও তারা আজকের ফাইনাল খেলবে, যা ম্যানসিটির কপালে ভাঁজ পড়ার কারণ।
সিরি আ জিততে না পারলেও ইন্টার এবারের মৌসুম শেষ করেছে ডাবল জিতে। সুপার কোপা ও কোপা ইতালিয়ার শিরোপা তারা ইতিমধ্যেই ঘরে তুলেছে। দলটিতে বুড়িয়ে যাওয়া খেলোয়াড়দের ছড়াছড়ি, তবে এটাও সত্য যে তাদের ইনজাগির কৌশল অনুযায়ী যথাযথ খেলতে পারা ফুটবলারেরও অভাব নেই। লাউতারো মার্টিনেজ, রোমেলু লুকাকো ও এডিন জেকোকে নিয়ে গড়া দলটির ফরোয়ার্ড লাইন এই মৌসুমে গোল করেছে ৬৬টি। তাদের নিরেট রক্ষণের মূলমন্ত্র বাস্তোনি, আছার্বি ও ডার্মিয়ানকে নিয়ে গড়া ব্যাক-লাইনটি।

ইনজাগি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দায়িত্ব পালন করা ষষ্ঠ ইতালিয়ান কোচ। এই ৪৭ বছর বয়সী ম্যানেজার ইন্টারকে ৩-৫-২ ছকেই খেলিয়ে থাকেন। তাঁর অধীনে এখন পর্যন্ত ৩২টি নক-আউট ম্যাচ খেলে ইন্টার জিতেছে ২১টিতে আর হেরেছে মাত্র ৫টিতে। ইনজাগির কৌশলের কারণে এবারের আসরে ১২ ম্যাচের ৮টিতে কোনো গোল হজম করেনি ইন্টার। ফাইনালে সিটিকে আটকে রাখতে পারলে তারা ছুঁয়ে ফেলবে আর্সেনালের ২০০৫-০৬ মৌসুমে ৬ ম্যাচে ক্লিনশীট রাখার রেকর্ড।

অন্যদিকে গার্দিওলার সামনে ১২ বছর পর আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার সুযোগ। তাছাড়া ১৯৯৯ সালের পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডের পর প্রথম ইংলিশ দল হিসেবে ট্রেবল জয়ের সুযোগ। গার্দিওলা বার্সালোনা ছাড়ার পর থেকেই ফাইনালে উঠে বা লিগের বড় ম্যাচে পা ফসকান। এর কারণ হচ্ছে তিনি নতুন বা বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নেন এই ধরনের ম্যাচে। এই স্প্যানিশ কোচ সব সময় চান অন্য ম্যানেজাররা যেন তাঁর কৌশল সম্পূর্ণভাবে বুঝতে না পারেন।

গার্দিওলা এই মৌসুমে সিটিকে ৩-২-৪-১ ছকে খেলাচ্ছেন। যেখানে সেন্টারব্যাক জন স্টোনস কিছু বিশেষ মুহুর্তে মাঝমাঠে রদ্রির সাথে যোগ দিয়ে একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। তিন মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা, বের্নার্ডো সিলভা ও ইকায় গুন্দোগান দলের মূল চালিকা শক্তি। তাছাড়া এই মৌসুমে ৫২ গোল করা আর্লিং হালান্ড তো আছেনই। এই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ১২ গোল করেছেন। এই প্রতিযোগিতায় কোনো ইংলিশ ক্লাবের হয়ে এক আসরে যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় শিরোপা জিতে জিনেদিন জিদানকে ছোঁয়ার হাতছানি এখন গার্দিওলার সামনে। তাদের চেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন কেবল চার বার এই ট্রফি জেতা কার্লো আনচেলত্তি। গার্দিওলার সেই অসামান্য অর্জনের পথে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে কেবল ইন্টার। সান-সিরোর নীল-কালোরাতো চাইবেই চতুর্থবারের মত ইউরোপ সেরা হতে।