ঢাকা , শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ৫ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার Logo ছাত্র প্রতিনিধি বললেন, ১০ লাখ টাকার এক পয়সাও কম হবে না Logo পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ রোধকল্পে শহরে অভিযান Logo সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড Logo রূপগঞ্জে পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, মানববন্ধন Logo প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠান Logo প্রতিক্ষণ ব্লাড রিজার্ভেশন অব বাংলাদেশ ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সদস্যের পরিবার Logo বন্দর উপজেলায় ৩ দিন ব্যাপী জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন Logo ভিন্নমত প্রকাশকে ‘নিরাপত্তা হুমকি’ দেখত হাসিনার সরকার Logo সব ছেড়ে আধ্যাত্মিকতায় মন দিলেন জ্যাকুলিন!

কাজে আসছে না মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের ৩ কোটি টাকার আইসিইউ

‘কয়েকদিন আগে হঠাৎ মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে আসি। ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসা শেষে আবার মাদারীপুরে চলে আসি। কিন্তু এই চিকিৎসাটি মাদারীপুর হাসপাতালেই পাওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ থাকলেও রোগীদের কোনো কাজেই আসছে না। বরং আইসিইউয়ের মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।’ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর শহরের ১নং শকুনি এলাকার তানমিরা জেবু।

আরেক রোগী জাকিয়া বেগমের ছেলে সাইম বলেন, আমার মা পর পর দুইবার হার্টের সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে জরুরিভাবে ঢাকায় নেওয়া হয়। কিন্তু এখানে আইসিইউ চালু থাকলে হয়তো ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজন হতো না। অনেক গরিব রোগী আছে, যাদের আইসিইউ প্রয়োজন হলে ঢাকা কিংবা ফরিদপুরে নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। ফলে বিনা চিকিৎসায় অনেকেই মারা যান। এজন্য মাদারীপুরে জরুরিভাবে আইসিইউটি চালু করা দরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের ১০ শয্যার আইসিইউ চালু না হওয়ায় সাধারণ ও গরিব রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। তাদের দাবি দ্রুত আইসিইউ চালু করা হোক। এতে করে জেলার গরিব ও অসহায় রোগীদের অনেক উপকার হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের শকুনী মৌজায় পুরোনো হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয় সাততলা বিশিষ্ট ভবন। আড়াইশ শয্যার ভবনটি ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এরপর দীর্ঘ সময় এভাবেই পড়ে থাকে। পরে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আড়াইশ শয্যার হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর তিন কোটি টাকার আইসিইউ ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয় আইসিইউটি। কিন্তু ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের কোনো সেবাই পাচ্ছে না এখানকার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় দিন দিন যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

‘নিরাপদ চিকিৎসা চাই’র মাদারীপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ বলেন, জনগণের টাকায় নির্মিত হাসপাতাল, অথচ জনগণ এর পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাচ্ছে না। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আইসিইউ সেবার জন্য যন্ত্রপাতি কেনা হলেও সেবা দেওয়ার কোনো অগ্রগতি নেই। তাই জনগণের সেবার কথা চিন্তা করে দ্রুত আইসিইউ চালুর দাবি জানাই।

মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শামীম আকতার বলেন, জনবলের ঘাটতি পূরণ হলেই ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সব ধরনের সেবা চালু করা সম্ভব হবে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের ২৬৭ পদের মধ্যে ১০২টি পদ খালি রয়েছে। তারপরও রোগীদের সেবার জন্য দ্রুত আইসিইউ সেবা চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি দ্রুত এটা চালু করা সম্ভব হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

৫ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার

কাজে আসছে না মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের ৩ কোটি টাকার আইসিইউ

আপডেট সময় ১০:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

‘কয়েকদিন আগে হঠাৎ মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে আসি। ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসা শেষে আবার মাদারীপুরে চলে আসি। কিন্তু এই চিকিৎসাটি মাদারীপুর হাসপাতালেই পাওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ থাকলেও রোগীদের কোনো কাজেই আসছে না। বরং আইসিইউয়ের মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।’ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর শহরের ১নং শকুনি এলাকার তানমিরা জেবু।

আরেক রোগী জাকিয়া বেগমের ছেলে সাইম বলেন, আমার মা পর পর দুইবার হার্টের সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে জরুরিভাবে ঢাকায় নেওয়া হয়। কিন্তু এখানে আইসিইউ চালু থাকলে হয়তো ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজন হতো না। অনেক গরিব রোগী আছে, যাদের আইসিইউ প্রয়োজন হলে ঢাকা কিংবা ফরিদপুরে নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। ফলে বিনা চিকিৎসায় অনেকেই মারা যান। এজন্য মাদারীপুরে জরুরিভাবে আইসিইউটি চালু করা দরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের ১০ শয্যার আইসিইউ চালু না হওয়ায় সাধারণ ও গরিব রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। তাদের দাবি দ্রুত আইসিইউ চালু করা হোক। এতে করে জেলার গরিব ও অসহায় রোগীদের অনেক উপকার হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের শকুনী মৌজায় পুরোনো হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয় সাততলা বিশিষ্ট ভবন। আড়াইশ শয্যার ভবনটি ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এরপর দীর্ঘ সময় এভাবেই পড়ে থাকে। পরে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আড়াইশ শয্যার হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর তিন কোটি টাকার আইসিইউ ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয় আইসিইউটি। কিন্তু ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের কোনো সেবাই পাচ্ছে না এখানকার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় দিন দিন যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

‘নিরাপদ চিকিৎসা চাই’র মাদারীপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ বলেন, জনগণের টাকায় নির্মিত হাসপাতাল, অথচ জনগণ এর পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাচ্ছে না। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আইসিইউ সেবার জন্য যন্ত্রপাতি কেনা হলেও সেবা দেওয়ার কোনো অগ্রগতি নেই। তাই জনগণের সেবার কথা চিন্তা করে দ্রুত আইসিইউ চালুর দাবি জানাই।

মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শামীম আকতার বলেন, জনবলের ঘাটতি পূরণ হলেই ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সব ধরনের সেবা চালু করা সম্ভব হবে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের ২৬৭ পদের মধ্যে ১০২টি পদ খালি রয়েছে। তারপরও রোগীদের সেবার জন্য দ্রুত আইসিইউ সেবা চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশা করছি দ্রুত এটা চালু করা সম্ভব হবে।