নারায়ণগঞ্জে স্বামীকে মারধর করে ও আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ব়্যাব-১১৷ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ব়্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান৷
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৫) এবং তার বন্ধু মো. রনি (২৫)৷
ভুক্তভোগী নারী (২০) নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার স্বামী অপর একটি পোশাক কারখানার কর্মী।
ব়্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদ বলেন, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটির পর ব়্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে৷ গোয়েন্দা নজরদারির পর বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটার দিকে নাজমুলকে পূর্ব লামাপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে আরেক অভিযানে গাজীপুর থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
ভুক্তভোগী ওই নারী নাজমুলদের বাড়ির একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন৷ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেপ্তার নাজমুল ও তার বন্ধুরা মিলে স্বামীকে আটকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে৷
ঘটনার আটদিন পর গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) ফতুল্লা মডেল থানায় ধর্ষণের মামলাটি রেকর্ড করা হয়৷ পরদিন বুধবার দুপুরে পুলিশি হেফাজতে ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়৷
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ওই তরুণী দীর্ঘ ২ বছর ধরে মনির মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো। তবে বাড়িওয়ালার ছেলে নাজমুল তাকে প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতো। এদিকে গত ১০ জানুয়ারী প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পরিবারের অমতে ওই তরুণী বিয়ে করে। তবে পরিবারের সদস্যরা এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী পৃথক পৃথক বাড়িতে বসাবাস করছে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকার সজিবের ভাড়া বাড়িতে ভুক্তভোগী ওই তরুণীর সাথে দেখা করার জন্য আসে তার স্বামী । এ সময় তার পূর্ব বাড়িওয়ালার ছেলে নাজমুল ও রনি ওই বাড়ির সামনে থেকে তার স্বামীকে টেনে হেচড়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে মারধর করে তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এই মারধরের ভিডিও তারা ধারণ করে ওই রাতে আড়াইটার দিকে তরুণীর ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে। পরে তরুণীর স্বামীকে মারধরের ভিডিও দেখিয়ে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।