ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা থেকে অজ্ঞাতনামা ৩ লাশ উদ্ধার Logo তারেক রহমান ১৬বছর স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে : মুহাম্মাদ সাদরিল Logo জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানের সকল শহীদদের স্মরণে শোক র‍্যালী Logo নারায়ণগঞ্জে হকার্স মার্কেটে আগুনে পুড়লো ৩০ দোকান Logo আইভী ৬ কোটি টাকা বেতন পেয়ে ২৫ কোটি টাকায় বাড়ি বানিয়েছেন : সাখাওয়াত Logo বন্দরে ডকইয়ার্ড শ্রমিক নূর হোসেন নিহত Logo বিএনপি নেতা আলোচিত সন্ত্রাসী আকরাম জালিয়াতির দুই মামলায় গ্রেপ্তার Logo বিক্ষোভ সমাবেশে শত ” শত নেতাকর্মী নিয়ে যোগদান করেন মোঃ আব্দুল্লাহ হক শাকুর Logo ছক কষে অপেক্ষায় ছিল আ.লীগ, অন্য জেলার নেতাকর্মীরাও জড়ো হন গোপালগঞ্জে Logo শান্ত-লিটনদের জন্য পাওয়ার হিটিংয়ে প্রসিদ্ধ কোচ আনছে বিসিবি!

গোয়ালন্দে পদ্মায় ভাঙন শুরু, আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার এলাকায় ফের নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। একদিনেই অন্তত ৫০ মিটার কৃষি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে ভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন কয়েকশ পরিবার।

রোববার বিকেলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে শত শত পরিবার নদীর পারে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীনের আগেই ৭-৮ টি পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
এখানে যারা বসবাস করে তাদের অধিকাংশ কয়েক দফা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এখানে বসবাস করছিলেন। অনেকেরই ছিল মাঠে শত বিঘা ফসলি জমি, গোয়ালে গরু আর গোলা ভরা ধান। এখন এগুলো সবই স্মৃতি।

এই রান্না হয়তো শেষ রান্না
এই এলাকায় বাস করা মর্জিনা আক্তার নামে এক নারী বলেন, স্বামীর এই বসত ভিটায় আর হয়তো থাকতে পারবো না। এই রান্না হয়তো শেষ রান্না। এই রান্না আমি শেষ করতে নাও পারি। কারণ নদী ভাঙন শুরু হলে দৌড়ে পালানো লাগবে। সারা রাত ঘুমাই না, জেগে থাকি, কখন যেন এই বসতভিটা নদীতে চলে যায়।

অশ্রু ভেজা দৃষ্টি নিয়ে এই নারী আরও বলেন, ঘরে দুই শিশু সন্তান আছে, স্বামীর শেষ সম্বল জায়গাটুকু সেটাও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এখন আমরা কোথায় যাবো, কী খাবো একমাত্র ওপরওয়ালা জানে।

একই এলাকার সালাম সরদার বলেন, সব হারানোর পথে। আমার সব শেষ। এই বাড়ি নদীতে চলে গেলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায়ও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সারারাত ঘুম হয় না। কোথায় গিয়ে, কী করে চলবো।

এক রাতেই সুরুজ ফকির নামে এক ব্যক্তির দশ কাঠা ফসলি জমি পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, হয়তো রাতেই তার আরও কিছু জমি হারিয়ে যাবে পদ্মায়। তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মিনতি তারা যেন ব্যবস্থা নেয়। তা না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে এ ব্যাপারে। আগামীকাল সকালে সেটা জমা দিব। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন চলছে। দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প না নিলে মানচিত্র থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা থেকে অজ্ঞাতনামা ৩ লাশ উদ্ধার

গোয়ালন্দে পদ্মায় ভাঙন শুরু, আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

আপডেট সময় ১০:৩১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার এলাকায় ফের নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। একদিনেই অন্তত ৫০ মিটার কৃষি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে ভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন কয়েকশ পরিবার।

রোববার বিকেলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে শত শত পরিবার নদীর পারে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীনের আগেই ৭-৮ টি পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
এখানে যারা বসবাস করে তাদের অধিকাংশ কয়েক দফা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এখানে বসবাস করছিলেন। অনেকেরই ছিল মাঠে শত বিঘা ফসলি জমি, গোয়ালে গরু আর গোলা ভরা ধান। এখন এগুলো সবই স্মৃতি।

এই রান্না হয়তো শেষ রান্না
এই এলাকায় বাস করা মর্জিনা আক্তার নামে এক নারী বলেন, স্বামীর এই বসত ভিটায় আর হয়তো থাকতে পারবো না। এই রান্না হয়তো শেষ রান্না। এই রান্না আমি শেষ করতে নাও পারি। কারণ নদী ভাঙন শুরু হলে দৌড়ে পালানো লাগবে। সারা রাত ঘুমাই না, জেগে থাকি, কখন যেন এই বসতভিটা নদীতে চলে যায়।

অশ্রু ভেজা দৃষ্টি নিয়ে এই নারী আরও বলেন, ঘরে দুই শিশু সন্তান আছে, স্বামীর শেষ সম্বল জায়গাটুকু সেটাও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এখন আমরা কোথায় যাবো, কী খাবো একমাত্র ওপরওয়ালা জানে।

একই এলাকার সালাম সরদার বলেন, সব হারানোর পথে। আমার সব শেষ। এই বাড়ি নদীতে চলে গেলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায়ও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সারারাত ঘুম হয় না। কোথায় গিয়ে, কী করে চলবো।

এক রাতেই সুরুজ ফকির নামে এক ব্যক্তির দশ কাঠা ফসলি জমি পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, হয়তো রাতেই তার আরও কিছু জমি হারিয়ে যাবে পদ্মায়। তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মিনতি তারা যেন ব্যবস্থা নেয়। তা না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে এ ব্যাপারে। আগামীকাল সকালে সেটা জমা দিব। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন চলছে। দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প না নিলে মানচিত্র থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।