ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo পাস‌পোর্ট অ‌ফি‌সে দালাল চ‌ক্রের ঠাই হবে না : নব নিযুক্ত উপ-প‌রিচালক শামীম Logo কাঁচপুর জমিজমা সক্রান্ত দ্বন্দ্বে মামা-ভাগিনা সংঘর্ষ, অবশেষে থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo ফরাজিকান্দায় আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা পুলিশি বাধায় কাজ বন্ধ Logo আরব আমিরাতের উদ্দেশে তামিম-রিশাদরা Logo হানিমুনেও নাকি মাকে নিয়া যাইতে হয়, কাকে বললেন প্রভা Logo আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন আরএফকে সেন্টারের প্রধান কেরি কেনেডি Logo বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষকে অব্যাহতি Logo ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার Logo না.গঞ্জে পাসপোর্ট অফিস ও খানপুর হাসপাতালে দালালমুক্ত অভিযান Logo ভালো পড়ালেখা করতে হবে, মানুষের মত মানুষ হতে হবে : ডিসি

লন্ডন ক্লিনিকের ছাড়পত্র পেয়েছেন খালেদা জিয়া

যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৭ দিন পর হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়েছেন। শুক্রবার রাত তিনটায় (লন্ডন সময় রাত ৯টা) দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে তিনি সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। আপাতত বাসায় চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। প্রয়োজন হলে ফলোআপের জন্য আসবেন হাসপাতালে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।
গতকাল (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম লন্ডনের সময় রাত ৯টায় হাসপাতাল থেকে তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা লিভার সার্জারি এলাউ করেননি।

এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামের হার্টের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন মূল সমস্যা কিডনিতে। ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে যে চিকিৎসা ছিল তা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রথমে সাপোর্ট করেননি। তারপর নতুনভাবে কিডনির চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েকদিন আগে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা (কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে) বর্ডার লাইন ক্রস করে। এতে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এরপর আরো নতুন কিছু চিকিৎসার ফলে এখন অনেকটা রি-কভারি হয়েছে।

কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরতে পারেন এটা ম্যাডামের ওপর নির্ভর করছে। তবে আমি হয়তো এক সপ্তাহ পর দেশে ফিরে আসব। আমার মা অসুস্থ। ওনার ৮৬ বছর বয়স। অন্য সফর সঙ্গীরা থাকবেন। আমরা সবাই তারেক রহমান সাহেবের বাসার পাশেই একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকছি। তিনিই এগুলো ব্যবস্থা করেছেন। আর ডা: জাহিদ হাসপাতালেই থেকেছেন এতদিন।

এর আগে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানান, খালেদা জিয়া ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠবেন। সেখানে পুত্রবধূ ডা: জুবাইদা রহমান, শর্মিলা রহমান ও তিন নাতনির সাথে থাকবেন। বাসা থেকে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুয়ায়ী চিকিৎসা চলবে।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে সাংবাদিকদের জানান, ছুটি পেলেও খালেদা জিয়া সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসÑ এ দু’জনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকবেন এবং মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরাও থাকবেন। অর্থাৎ ইউকের যে নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই ওনার চিকিৎসা চলবে। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে না আসার কারণ জানিয়ে ডা: জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি; কারণ বয়সটা এখানে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের ডাক্তাররা বলছে, আরো অনেক আগে ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা যেত। এখন ওষুধের মাধ্যমে ওনার যে চিকিৎসা চলছে তা অব্যাহত রাখার জন্য চিকিৎসকরা একমত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।

গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। এ হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসাধীন চলছে। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাস‌পোর্ট অ‌ফি‌সে দালাল চ‌ক্রের ঠাই হবে না : নব নিযুক্ত উপ-প‌রিচালক শামীম

লন্ডন ক্লিনিকের ছাড়পত্র পেয়েছেন খালেদা জিয়া

আপডেট সময় ১১:৪৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৭ দিন পর হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়েছেন। শুক্রবার রাত তিনটায় (লন্ডন সময় রাত ৯টা) দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে তিনি সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। আপাতত বাসায় চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। প্রয়োজন হলে ফলোআপের জন্য আসবেন হাসপাতালে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।
গতকাল (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম লন্ডনের সময় রাত ৯টায় হাসপাতাল থেকে তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা লিভার সার্জারি এলাউ করেননি।

এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামের হার্টের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন মূল সমস্যা কিডনিতে। ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে যে চিকিৎসা ছিল তা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রথমে সাপোর্ট করেননি। তারপর নতুনভাবে কিডনির চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েকদিন আগে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা (কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে) বর্ডার লাইন ক্রস করে। এতে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এরপর আরো নতুন কিছু চিকিৎসার ফলে এখন অনেকটা রি-কভারি হয়েছে।

কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরতে পারেন এটা ম্যাডামের ওপর নির্ভর করছে। তবে আমি হয়তো এক সপ্তাহ পর দেশে ফিরে আসব। আমার মা অসুস্থ। ওনার ৮৬ বছর বয়স। অন্য সফর সঙ্গীরা থাকবেন। আমরা সবাই তারেক রহমান সাহেবের বাসার পাশেই একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকছি। তিনিই এগুলো ব্যবস্থা করেছেন। আর ডা: জাহিদ হাসপাতালেই থেকেছেন এতদিন।

এর আগে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানান, খালেদা জিয়া ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠবেন। সেখানে পুত্রবধূ ডা: জুবাইদা রহমান, শর্মিলা রহমান ও তিন নাতনির সাথে থাকবেন। বাসা থেকে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুয়ায়ী চিকিৎসা চলবে।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে সাংবাদিকদের জানান, ছুটি পেলেও খালেদা জিয়া সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসÑ এ দু’জনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকবেন এবং মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরাও থাকবেন। অর্থাৎ ইউকের যে নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই ওনার চিকিৎসা চলবে। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে না আসার কারণ জানিয়ে ডা: জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি; কারণ বয়সটা এখানে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের ডাক্তাররা বলছে, আরো অনেক আগে ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা যেত। এখন ওষুধের মাধ্যমে ওনার যে চিকিৎসা চলছে তা অব্যাহত রাখার জন্য চিকিৎসকরা একমত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।

গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। এ হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসাধীন চলছে। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।