উন্নত চিকিৎসার জন্য ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বিদেশ যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রথমে যুক্তরাজ্য, পরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে তার। এজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে গিয়ে ‘বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট’ দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য সময়ের আলোকে জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দুই-তিনটি দেশে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যেতে হতে পারে। সে জন্য দেশ ছাড়ার আগে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এম্বেসিতে গিয়ে উনি বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়েছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করা যাচ্ছে ১২ কিংবা ১৩ ডিসেম্বর তিনি রওনা দেবেন।
বুধবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে পাজেরো জিপে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে প্রবেশ করেন। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিএনপি চেয়ারপারসনকে দূতাবাসে স্বাগত জানান। তার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ মামুন ছিলেন।
মেডিকেল বোর্ডের ওই চিকিৎসক বলেন, ম্যাডাম এখন বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন। মানে ভ্রমণ করার মতো ফিট আছেন। কখন কী হয়- সেটা তো আর কেউ বলতে পারবে না। আমরা ৬ জন চিকিৎসক সঙ্গে যাচ্ছি। লন্ডনের ভিসা ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা এখনও পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, আগামী ৩০ নভেম্বর লন্ডনে যাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি দেশে ফেরার পর খালেদা জিয়া লন্ডনে যাবেন।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন তিনি। সে সময় খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যের ডা. হ্যাডলি ব্যারির চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
৭৯ বছর বয়সি সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য মাল্টি ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডন এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে চিকিৎসকরা জানান।