ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতা মঞ্জুর চৌধুরীকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হলো

সৌদি আরবে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যাওয়ার পথে তাকে আটকে দেওয়া হয়।

বুধবার রাতে নগরীর জামালখান এলাকায় মঞ্জুর রহমান চৌধুরীর মালিকানাধীন ভবন ‌‘স্যানমার স্প্রিং গার্ডেনের’ নিচে পার্কিং করা অবস্থায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করেছিল পুলিশ।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে ওই বিএনপি নেতাকে সৌদি আরবের মদিনাগামী একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এস আলম গ্রুপের গাড়িকাণ্ডে ওই বিএনপি নেতার বিদেশযাত্রা আটকে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শাহ আমানত বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বাসায় চলে গেছেন। এর বাইরে কিছুই বলতে পারবো না।’

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, ‘বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে স্ত্রীসহ মদিনায় যেতে একটি ফ্লাইটে বসেন মঞ্জুর রহমান। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়। তাকে ছাড়াই ফ্লাইটটি দেরিতে ৬টা ২২ মিনিটে ছেড়ে যায়।’

বুধবার রাত ১০টার দিকে জামালখান এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচে পার্কিং থেকে এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। গাড়িটির নম্বর চট্ট-মেট্রো ঘ-১১-৫৩৪৪। বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধনে গাড়িটি এস আলমের মালিকানাধীন সোনালী লজিস্টিকসের নামে নিবন্ধন করা। এ ছাড়া ঠিকানা হিসেবে নগরের আসাদগঞ্জ এস আলম ভবনের ঠিকানা দেওয়া আছে।

ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন কোতোয়ালি থানার বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী। সেখানে জব্দ করা ওই গাড়ি ছাড়াও আরও দুটি গাড়ি ছিল। পুলিশ যাওয়ার আগে এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।

ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা প্রসঙ্গে জানতে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বুধবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছিলেন, ‘ভবনটি আমার পারিবারিক। আবাসন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এটি করিয়েছি। এই ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট আছে। এর মধ্যে একটিতে আমি পরিবার নিয়ে থাকি। গাড়িটি আমার বাসার নিচে পার্কিং থেকে জব্দ করা হয়েছে। তবে আমার পার্কিং থেকে করা হয়নি। অন্য কারও পার্কিং থেকে জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটি আমি রাখিনি।’

এর আগে গত ২৮ আগস্ট এস আলম গ্রুপের গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিজ এলাকায় সংবর্ধনায় এসে সমালোচনার মুখে পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।

এ ছাড়া ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বের করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন বিএনপি নেতাকে দল থেকে শোকজ করা হয়। পরে তাদের তিন জনের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি নেতা মঞ্জুর চৌধুরীকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হলো

আপডেট সময় ০৫:২৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সৌদি আরবে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যাওয়ার পথে তাকে আটকে দেওয়া হয়।

বুধবার রাতে নগরীর জামালখান এলাকায় মঞ্জুর রহমান চৌধুরীর মালিকানাধীন ভবন ‌‘স্যানমার স্প্রিং গার্ডেনের’ নিচে পার্কিং করা অবস্থায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করেছিল পুলিশ।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে ওই বিএনপি নেতাকে সৌদি আরবের মদিনাগামী একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এস আলম গ্রুপের গাড়িকাণ্ডে ওই বিএনপি নেতার বিদেশযাত্রা আটকে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শাহ আমানত বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বাসায় চলে গেছেন। এর বাইরে কিছুই বলতে পারবো না।’

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, ‘বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে স্ত্রীসহ মদিনায় যেতে একটি ফ্লাইটে বসেন মঞ্জুর রহমান। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়। তাকে ছাড়াই ফ্লাইটটি দেরিতে ৬টা ২২ মিনিটে ছেড়ে যায়।’

বুধবার রাত ১০টার দিকে জামালখান এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচে পার্কিং থেকে এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। গাড়িটির নম্বর চট্ট-মেট্রো ঘ-১১-৫৩৪৪। বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধনে গাড়িটি এস আলমের মালিকানাধীন সোনালী লজিস্টিকসের নামে নিবন্ধন করা। এ ছাড়া ঠিকানা হিসেবে নগরের আসাদগঞ্জ এস আলম ভবনের ঠিকানা দেওয়া আছে।

ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন কোতোয়ালি থানার বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী। সেখানে জব্দ করা ওই গাড়ি ছাড়াও আরও দুটি গাড়ি ছিল। পুলিশ যাওয়ার আগে এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।

ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা প্রসঙ্গে জানতে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বুধবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছিলেন, ‘ভবনটি আমার পারিবারিক। আবাসন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এটি করিয়েছি। এই ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট আছে। এর মধ্যে একটিতে আমি পরিবার নিয়ে থাকি। গাড়িটি আমার বাসার নিচে পার্কিং থেকে জব্দ করা হয়েছে। তবে আমার পার্কিং থেকে করা হয়নি। অন্য কারও পার্কিং থেকে জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটি আমি রাখিনি।’

এর আগে গত ২৮ আগস্ট এস আলম গ্রুপের গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিজ এলাকায় সংবর্ধনায় এসে সমালোচনার মুখে পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।

এ ছাড়া ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বের করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন বিএনপি নেতাকে দল থেকে শোকজ করা হয়। পরে তাদের তিন জনের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।