ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেট নামছে পানি, বেড়েছে দুর্ভোগ

বৃষ্টি আর ভারতের মেঘালয় থেকে পাহাড়ি ঢল থামায় সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেড়েছে দুর্ভোগ। পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অনেক পরিবার বাড়ি ফিরেছে। তবে এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলার কৃষি। এদিকে, সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টের পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ কোম্পানীগঞ্জসহ ১২ উপজেলায় শনিবার (১ জুন) পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে ৪০০ মেট্রিক টন, নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে সাড়ে ১৫ লাখ, শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ২৫০ বস্তা, শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে ৯ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে আরও ৯ লাখ টাকার। এ ছাড়া বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমেছে। শুক্রবার জেলায় বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭০। শনিবার (১ জুন) সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ৩৩ জনে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন দেড় হাজার জন।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ওমর সানি জানান, বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি ত্রাণগুলো যথাযথ ব্যক্তিরা পাচ্ছে কিনা সে বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী রয়েছে।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য আর বৃষ্টিপাতের ওপর। যদি পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।

‘পাহাড়ি ঢল থামায় বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতেও বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সিলেটের নদ-নদীগুলোর বেশ কয়েকটি পয়েন্টের পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও পানিবন্দি অনেক মানুষ।’

এদিকে, সুরমা নদীর পানি সিলেট নগরের কয়েকটি নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি বাসা ও রাস্তায় চলে আসায় নগরের উপশহর, তেররতন, কুশিঘাট, সুবহানিঘাট, যতরপুর, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার, মাছিমপুর, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে আছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, উজান থেকে পানি নেমে আসায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরের ছড়াগুলোর পানি নদীতে পড়ার কথা থাকলেও উল্টো নদীর পানি ছড়া উপচে নগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

এদিকে, পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের পানি কমতে থাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। গ্রামাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করায় ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সিলেট নামছে পানি, বেড়েছে দুর্ভোগ

আপডেট সময় ০৯:২৪:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

বৃষ্টি আর ভারতের মেঘালয় থেকে পাহাড়ি ঢল থামায় সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেড়েছে দুর্ভোগ। পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অনেক পরিবার বাড়ি ফিরেছে। তবে এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলার কৃষি। এদিকে, সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টের পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ কোম্পানীগঞ্জসহ ১২ উপজেলায় শনিবার (১ জুন) পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে ৪০০ মেট্রিক টন, নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে সাড়ে ১৫ লাখ, শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ২৫০ বস্তা, শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে ৯ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে আরও ৯ লাখ টাকার। এ ছাড়া বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমেছে। শুক্রবার জেলায় বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭০। শনিবার (১ জুন) সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ৩৩ জনে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন দেড় হাজার জন।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ওমর সানি জানান, বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি ত্রাণগুলো যথাযথ ব্যক্তিরা পাচ্ছে কিনা সে বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী রয়েছে।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য আর বৃষ্টিপাতের ওপর। যদি পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।

‘পাহাড়ি ঢল থামায় বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতেও বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সিলেটের নদ-নদীগুলোর বেশ কয়েকটি পয়েন্টের পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও পানিবন্দি অনেক মানুষ।’

এদিকে, সুরমা নদীর পানি সিলেট নগরের কয়েকটি নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি বাসা ও রাস্তায় চলে আসায় নগরের উপশহর, তেররতন, কুশিঘাট, সুবহানিঘাট, যতরপুর, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার, মাছিমপুর, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে আছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, উজান থেকে পানি নেমে আসায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরের ছড়াগুলোর পানি নদীতে পড়ার কথা থাকলেও উল্টো নদীর পানি ছড়া উপচে নগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

এদিকে, পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের পানি কমতে থাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। গ্রামাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করায় ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।’