ঢাকা , রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে

বিক্ষোভ পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পাঞ্চলে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে। তবে সংঘর্ষ থামলেও দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

এর আগে, গত মার্চের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের হাজারো শ্রমিক। সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাঁশ ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। এতে সড়কটিকে অন্তত দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। পরে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। জবাবে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

শিল্প পুলিশ-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার আয়নুল হুদা দাবি করেন, শ্রমিকদের ছোড়া ইটপাটকেলে অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ তাদের থামাতে চেষ্টা করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ শ্রমিক আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন আবন্তি কালার টেক্স লিমিটেডের কর্মী জারিদুল মন্ডল। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়েছে। এতে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ জন রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
কারখানার আরেক কর্মী মো. ফয়সাল বলেন, আমরা আমাদের বেতন দাবি করছি, এটা কি অপরাধ? তাহলে পুলিশ কেন আমাদের ওপর গুলি চালাল? আমরা যদি সময়মতো বেতন পেতাম তাহলে আমাদের রাস্তায় আসতে হতো না।

কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজের পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চের বেতন বকেয়া ছিল।

কারখানার মালিক ঈদের আগেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মার্চের বেতন পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা পাননি। এতে ঈদের মধ্যে অর্থ সংকটে দিন কাটিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
কারখানাটির সুইং অপারেটর মো. মাসুদ বলেন, এপ্রিলের ৮ তারিখ কারখানা বন্ধের সময় মোবাইলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি মালিকপক্ষ। গত ৮ মাস ধরে বেতন নিয়ে এভাবে গড়িমসি করছে মালিকপক্ষ। বেতনের দাবিতে রাস্তায় না নামলে শ্রমিকরা বেতন পান না। ঈদের দিনও বারবার মোবাইল চেক করেছি। এই মনে হয় বেতন ঢুকলো এই আশায়। কিন্তু বেতন আসেনি। আপনারা ভাবতেও পারবেন না ঈদের সময় বেতন না পেলে কীভাবে শ্রমিকদের দিন কাটে। এবার ঈদে আনন্দ ছিল না। অন্তত অর্ধেক বেতন দিলেও তো হতো।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে

বিক্ষোভ পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

আপডেট সময় ০৯:১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পাঞ্চলে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে। তবে সংঘর্ষ থামলেও দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

এর আগে, গত মার্চের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের হাজারো শ্রমিক। সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাঁশ ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। এতে সড়কটিকে অন্তত দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। পরে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। জবাবে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

শিল্প পুলিশ-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার আয়নুল হুদা দাবি করেন, শ্রমিকদের ছোড়া ইটপাটকেলে অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ তাদের থামাতে চেষ্টা করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ শ্রমিক আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন আবন্তি কালার টেক্স লিমিটেডের কর্মী জারিদুল মন্ডল। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়েছে। এতে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ জন রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
কারখানার আরেক কর্মী মো. ফয়সাল বলেন, আমরা আমাদের বেতন দাবি করছি, এটা কি অপরাধ? তাহলে পুলিশ কেন আমাদের ওপর গুলি চালাল? আমরা যদি সময়মতো বেতন পেতাম তাহলে আমাদের রাস্তায় আসতে হতো না।

কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজের পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চের বেতন বকেয়া ছিল।

কারখানার মালিক ঈদের আগেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মার্চের বেতন পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা পাননি। এতে ঈদের মধ্যে অর্থ সংকটে দিন কাটিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
কারখানাটির সুইং অপারেটর মো. মাসুদ বলেন, এপ্রিলের ৮ তারিখ কারখানা বন্ধের সময় মোবাইলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি মালিকপক্ষ। গত ৮ মাস ধরে বেতন নিয়ে এভাবে গড়িমসি করছে মালিকপক্ষ। বেতনের দাবিতে রাস্তায় না নামলে শ্রমিকরা বেতন পান না। ঈদের দিনও বারবার মোবাইল চেক করেছি। এই মনে হয় বেতন ঢুকলো এই আশায়। কিন্তু বেতন আসেনি। আপনারা ভাবতেও পারবেন না ঈদের সময় বেতন না পেলে কীভাবে শ্রমিকদের দিন কাটে। এবার ঈদে আনন্দ ছিল না। অন্তত অর্ধেক বেতন দিলেও তো হতো।