ঢাকা , সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারায়ণগঞ্জে জনদাবিতে রূপ নিয়েছে মেট্রোরেল

রাজধানীর পাশর্^তবর্তী জেলা বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন নগর পরিকল্পনাবিদ আর সুশীল সমাজের দাবি নয়, এটা এখণ রূপ নিয়েছে জনদাবিতে। মেট্রোরেল হয়ে উঠেছে জেলার আলোচনার তপ্ত মঞ্চ।

প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। অন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে।

প্রকল্প থেকে বাদ পড়াকে জেলার অর্থনীতি ও টেকসই নগরায়ণ পরিকল্পনার জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন জেলাবাসী। তাই দাবি অগ্রাহ করলে পরিস্থিতি ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করছেন অন্দোলনকারীরা।

সংহঠনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নূরউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে এমআরটি-২ মেট্রোরেল প্রকল্প নারায়ণগঞ্জ ও মদনপুরকে সংযুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেন, অবহেলিত নারায়ণগঞ্জকে সব সময় অবজ্ঞা করা হচ্ছে।

এ জেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মজীবী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রী ঢাকায় চলাচল করে। ট্রেনের অপেক্ষা ও গণপরিবহণের বিড়ম্বনায় যাত্রী সাধারণের কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য অবশ্যই এমআরটি-২ মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।

মেট্রোরেলের দাবিতে জেলার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট থেকে শুরু করে বামপন্থী দলগুলো এক কাতারে দাঁড়িয়েছ।

 

বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরকে ঘিওে মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক বিস্তাারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বহু আগেই। এমআরটি-৬ থেকে শুরু করে এমআরটি-১, এমআরটি-৫ ও এমআরটি-২ ধাপে ধাপে পাঁচটি জেলা ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী যুক্ত থাকলেও বাদ পড়েছে নারায়ণগঞ্জ।

এতে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি কেবল নগর পরিকল্পনাবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই তা জনদাবিতে রূপ নিয়ে জেলা সদর, ফতুল্লা, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ,রূপগঞ্জ ও বন্দর উপজেলাবাসীও এ নিয়ে কথা বলছেন।

কারণ, টেকসই নগর উন্নয়ন করতে হলে ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা শহরগুলোর সঙ্গে আধুনিক গণপরিবহন সংযোগ জরুরি। নারায়ণগঞ্জের মত জেলাকে এ প্রকল্প থেকে বাদ দিলে পুরো পরিকল্পনার ক্ষতি হবে।

অপরদিকে, প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জ বাদ পড়ার পর গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন জেলার গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তারিকুল সুজন। তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর সমন্বয়কারী মো. বিপ্লব খান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।

তরিকুল সুজন বলেন, নারায়ণগঞ্জের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন ঢাকায় যান শিক্ষা, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের জন্য। অথচ এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা নারায়ণগঞ্জবাসীর সঙ্গে অবহেলা।

 

প্রকল্প থেকে বাদ পড়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ফলে জেলায় রাজনৈতিক অবস্থান সংঘাতমুখর হলেও মেট্রোরেল প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সকল বামদলগুলো এক কাতারে দাঁড়িয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী নূসরাত বলেন, আমরা যদি সকাল আটটার ক্লাসে যেতে চাই, ভোর পাঁচটা-ছয়টায় বের হতে হয়। যানজটের কারণে সময়মতো পৌঁছানো কঠিন। মেট্রোরেল হলে পথচলা অনেক সহজ হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট. এবি সিদ্দিক, সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, উপদেষ্টা বাবু সুভাষ সাহা, উপদেষ্টা হানিফুল কবির, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বদরুল হক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা খোদেজা খানম নাসরিন, পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক ক্যাডেট সভাপতি ফারুক আহম্মদ রিপন।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন,জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালাম খোকন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, আব্দুল মতিন, তাওরাদ হোসেন মকুল, আব্দুস সামাদ প্রমুখ।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জে জনদাবিতে রূপ নিয়েছে মেট্রোরেল

আপডেট সময় ১০:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজধানীর পাশর্^তবর্তী জেলা বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন নগর পরিকল্পনাবিদ আর সুশীল সমাজের দাবি নয়, এটা এখণ রূপ নিয়েছে জনদাবিতে। মেট্রোরেল হয়ে উঠেছে জেলার আলোচনার তপ্ত মঞ্চ।

প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। অন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে।

প্রকল্প থেকে বাদ পড়াকে জেলার অর্থনীতি ও টেকসই নগরায়ণ পরিকল্পনার জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন জেলাবাসী। তাই দাবি অগ্রাহ করলে পরিস্থিতি ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করছেন অন্দোলনকারীরা।

সংহঠনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নূরউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে এমআরটি-২ মেট্রোরেল প্রকল্প নারায়ণগঞ্জ ও মদনপুরকে সংযুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেন, অবহেলিত নারায়ণগঞ্জকে সব সময় অবজ্ঞা করা হচ্ছে।

এ জেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মজীবী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রী ঢাকায় চলাচল করে। ট্রেনের অপেক্ষা ও গণপরিবহণের বিড়ম্বনায় যাত্রী সাধারণের কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য অবশ্যই এমআরটি-২ মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।

মেট্রোরেলের দাবিতে জেলার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট থেকে শুরু করে বামপন্থী দলগুলো এক কাতারে দাঁড়িয়েছ।

 

বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরকে ঘিওে মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক বিস্তাারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বহু আগেই। এমআরটি-৬ থেকে শুরু করে এমআরটি-১, এমআরটি-৫ ও এমআরটি-২ ধাপে ধাপে পাঁচটি জেলা ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী যুক্ত থাকলেও বাদ পড়েছে নারায়ণগঞ্জ।

এতে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি কেবল নগর পরিকল্পনাবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই তা জনদাবিতে রূপ নিয়ে জেলা সদর, ফতুল্লা, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ,রূপগঞ্জ ও বন্দর উপজেলাবাসীও এ নিয়ে কথা বলছেন।

কারণ, টেকসই নগর উন্নয়ন করতে হলে ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা শহরগুলোর সঙ্গে আধুনিক গণপরিবহন সংযোগ জরুরি। নারায়ণগঞ্জের মত জেলাকে এ প্রকল্প থেকে বাদ দিলে পুরো পরিকল্পনার ক্ষতি হবে।

অপরদিকে, প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জ বাদ পড়ার পর গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন জেলার গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তারিকুল সুজন। তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর সমন্বয়কারী মো. বিপ্লব খান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।

তরিকুল সুজন বলেন, নারায়ণগঞ্জের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন ঢাকায় যান শিক্ষা, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের জন্য। অথচ এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা নারায়ণগঞ্জবাসীর সঙ্গে অবহেলা।

 

প্রকল্প থেকে বাদ পড়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ফলে জেলায় রাজনৈতিক অবস্থান সংঘাতমুখর হলেও মেট্রোরেল প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সকল বামদলগুলো এক কাতারে দাঁড়িয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী নূসরাত বলেন, আমরা যদি সকাল আটটার ক্লাসে যেতে চাই, ভোর পাঁচটা-ছয়টায় বের হতে হয়। যানজটের কারণে সময়মতো পৌঁছানো কঠিন। মেট্রোরেল হলে পথচলা অনেক সহজ হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট. এবি সিদ্দিক, সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, উপদেষ্টা বাবু সুভাষ সাহা, উপদেষ্টা হানিফুল কবির, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বদরুল হক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা খোদেজা খানম নাসরিন, পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক ক্যাডেট সভাপতি ফারুক আহম্মদ রিপন।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন,জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালাম খোকন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, আব্দুল মতিন, তাওরাদ হোসেন মকুল, আব্দুস সামাদ প্রমুখ।