ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

আ.লীগের নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি

আওয়ামী লীগের নাম নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বডি কেমেস্ট্রিতে গণতন্ত্র নেই। একটাই আছে সন্ত্রাস আর চুরি। ১৯৭৫ সালের আগে এমন লুটপাট করেছিল যে, দলের প্রতিষ্ঠাতাই বলেছিলেন, এটার নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। আর এই কথা শুনলে ওরা বলে নাকি আমার মুখে বিষ। আমার মুখে বিষ নয়, আমি যে সত্য সেই সত্য উচ্চারণ করি। বাংলাদেশের মানুষ এখন সত্য উচ্চারণ করছে, বাংলাদেশের মানুষ এই ভয়াবহ দানব মনোস্টার যারা আমাদের সমস্ত কিছুকে তছনছ করে দিয়েছে তাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশকে যদি বাঁচাতে হয়, মানুষকে যদি বাঁচাতে হয়, স্বাধীনতাকে যদি বাঁচাতে হয়, গণতন্ত্রকে যদি বাঁচাতে হয় আর কালবিলম্ব নয়, আর কোনো দ্বিধা নয়, রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এদেরকে সরিয়ে একটা সত্যিকার অর্থেই জনগণের রাষ্ট্র, জনগণের সরকার জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে।

বিদেশে অর্থ পাচারের প্রসেঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে শুনলাম সুইজারল্যান্ডের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ। কেনো? আমরা শুনতে পাই, সুইস ব্যাংকে নাকি বাংলাদেশীদের টাকা অনেক বেড়ে গিয়েছিলো। হঠাৎ করে আবার শুনলাম ওখান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো তুলে নেয়া হয়েছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে। কাকতালীয় কিনা জানি না, আমাদের নেতৃবর্গ তখন সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ এই পুরো দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত যেটাকা সেগুলো বিদেশের ব্যাংকে বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে রাখা হয়েছে যেখানে জবাবদিহিত করতে হয় না। এখন জবাবদিহি করতে হচ্ছে তো। থলের থেকে তো কালো বিড়াল বেরিয়ে আসছে। আজকে স্যাংশন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। খুব বলছে আমরা ভয় পাই না, ভয় পাই না। দেশের মানুষকে তো বিপদে ফেলে দিয়েছে আপনারা। সামগ্রিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি একেবারে চরম তলানিতে গেছে।

তিনি বলেন, ঋণ করতে করতে তারা প্রত্যেকটা মানুষকে ঋণ গ্রস্থ করে ফেলেছে। সাপ্লাইয়ার্সে ক্রেডিটের নামে ঋণ নিয়ে তারা (সরকার) আজকে আমি যেটা বলে বাংলাদেশকে ফতুর করে ফেলেছে। এরপরে তারা বড় বড় গলায় কথা বলে। যারা চোর তাদের গলায় আবার জোর বেশি।

আগামী নির্বাচন ‘অবশ্যই’ নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বার বার করে বলছি, সাংবিধানিকভাবেই এই সরকার অবৈধ। আমি জোর করে এই কথা বলছি। এই সরকারের কোনো অধিকার নেই তাদের অধিনে নির্বাচন করার। আগেও বলেছি, এখনো বলছি তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক আওয়ামী লীগের লোকজনের চেহারার দিকে তাঁকাবেন তাদের চেহারা বদলে গেছে। যাদের ভালোমতো একটা ঘর ছিলো তার এখন পাঁচ তলা বাড়ি, যারা সাইকেলে চড়তো না তারা এখন বিরাট বিরাট দামি দামি গাড়ি চালায়, বিলাসিতার শেষ নেই । আর আমাদের সাধারণ মানুষের অবস্থা বঞ্চিত বঞ্চিত হতে নিচে নেমে গেছে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার রোধে সিটি করপোরেশন ও সরকারের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু একেবারে সমস্ত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিভিশনে শুনলাম, যাত্রাবাড়িতে এমন একটা ঘর নেই, বাড়ি নেই যেখানে ডেঙ্গু রোগী নেই। সিটি করপোরেশন কি করে? কলকাতা তো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। তারা যদি পারে তাহলে আমাদের দেশে তারা কি করে? এতো যে কথা বলে বড় বড়।

দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ১৫৩টা মামলা, ৯৬টা মামলা, ৮০টা মামল, ৯০ টা মামলা, আমাদের এখনো অনেক নেতা ১০ বছর যাবত জেলের মধ্যে আছে। মিথ্যা মামলায় আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর, বর্তমানে আমাদের যুব নেতা সাইফুল আলম নিবর, মোনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর, গোলাম মাওলা শাহিন এসব নেতারা জেলে। এই একমাসে আমাদের প্রায় ৮ হাজার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং গ্রেফতার করেছে।

এনপিপির চেয়ারপারসন ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নিতাইগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

আ.লীগের নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি

আপডেট সময় ০৪:২২:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩

আওয়ামী লীগের নাম নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বডি কেমেস্ট্রিতে গণতন্ত্র নেই। একটাই আছে সন্ত্রাস আর চুরি। ১৯৭৫ সালের আগে এমন লুটপাট করেছিল যে, দলের প্রতিষ্ঠাতাই বলেছিলেন, এটার নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। আর এই কথা শুনলে ওরা বলে নাকি আমার মুখে বিষ। আমার মুখে বিষ নয়, আমি যে সত্য সেই সত্য উচ্চারণ করি। বাংলাদেশের মানুষ এখন সত্য উচ্চারণ করছে, বাংলাদেশের মানুষ এই ভয়াবহ দানব মনোস্টার যারা আমাদের সমস্ত কিছুকে তছনছ করে দিয়েছে তাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশকে যদি বাঁচাতে হয়, মানুষকে যদি বাঁচাতে হয়, স্বাধীনতাকে যদি বাঁচাতে হয়, গণতন্ত্রকে যদি বাঁচাতে হয় আর কালবিলম্ব নয়, আর কোনো দ্বিধা নয়, রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এদেরকে সরিয়ে একটা সত্যিকার অর্থেই জনগণের রাষ্ট্র, জনগণের সরকার জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে।

বিদেশে অর্থ পাচারের প্রসেঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে শুনলাম সুইজারল্যান্ডের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ। কেনো? আমরা শুনতে পাই, সুইস ব্যাংকে নাকি বাংলাদেশীদের টাকা অনেক বেড়ে গিয়েছিলো। হঠাৎ করে আবার শুনলাম ওখান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো তুলে নেয়া হয়েছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে। কাকতালীয় কিনা জানি না, আমাদের নেতৃবর্গ তখন সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ এই পুরো দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত যেটাকা সেগুলো বিদেশের ব্যাংকে বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে রাখা হয়েছে যেখানে জবাবদিহিত করতে হয় না। এখন জবাবদিহি করতে হচ্ছে তো। থলের থেকে তো কালো বিড়াল বেরিয়ে আসছে। আজকে স্যাংশন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। খুব বলছে আমরা ভয় পাই না, ভয় পাই না। দেশের মানুষকে তো বিপদে ফেলে দিয়েছে আপনারা। সামগ্রিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি একেবারে চরম তলানিতে গেছে।

তিনি বলেন, ঋণ করতে করতে তারা প্রত্যেকটা মানুষকে ঋণ গ্রস্থ করে ফেলেছে। সাপ্লাইয়ার্সে ক্রেডিটের নামে ঋণ নিয়ে তারা (সরকার) আজকে আমি যেটা বলে বাংলাদেশকে ফতুর করে ফেলেছে। এরপরে তারা বড় বড় গলায় কথা বলে। যারা চোর তাদের গলায় আবার জোর বেশি।

আগামী নির্বাচন ‘অবশ্যই’ নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বার বার করে বলছি, সাংবিধানিকভাবেই এই সরকার অবৈধ। আমি জোর করে এই কথা বলছি। এই সরকারের কোনো অধিকার নেই তাদের অধিনে নির্বাচন করার। আগেও বলেছি, এখনো বলছি তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক আওয়ামী লীগের লোকজনের চেহারার দিকে তাঁকাবেন তাদের চেহারা বদলে গেছে। যাদের ভালোমতো একটা ঘর ছিলো তার এখন পাঁচ তলা বাড়ি, যারা সাইকেলে চড়তো না তারা এখন বিরাট বিরাট দামি দামি গাড়ি চালায়, বিলাসিতার শেষ নেই । আর আমাদের সাধারণ মানুষের অবস্থা বঞ্চিত বঞ্চিত হতে নিচে নেমে গেছে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার রোধে সিটি করপোরেশন ও সরকারের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু একেবারে সমস্ত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিভিশনে শুনলাম, যাত্রাবাড়িতে এমন একটা ঘর নেই, বাড়ি নেই যেখানে ডেঙ্গু রোগী নেই। সিটি করপোরেশন কি করে? কলকাতা তো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। তারা যদি পারে তাহলে আমাদের দেশে তারা কি করে? এতো যে কথা বলে বড় বড়।

দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ১৫৩টা মামলা, ৯৬টা মামলা, ৮০টা মামল, ৯০ টা মামলা, আমাদের এখনো অনেক নেতা ১০ বছর যাবত জেলের মধ্যে আছে। মিথ্যা মামলায় আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর, বর্তমানে আমাদের যুব নেতা সাইফুল আলম নিবর, মোনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর, গোলাম মাওলা শাহিন এসব নেতারা জেলে। এই একমাসে আমাদের প্রায় ৮ হাজার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং গ্রেফতার করেছে।

এনপিপির চেয়ারপারসন ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।