ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রমিকনেতার বিরুদ্ধে দুই চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ

ছেলের চিকিৎসা প্রদানে দেরি হওয়ার অভিযোগ তুলে এক নারী চিকিৎসককে গালাগাল করছিলেন শ্রমিকনেতা এলিম পাহাড়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় আরেক চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিনকে মারধর করেন তিনি। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এগিয়ে গেলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে গালাগালি করেন এই শ্রমিক নেতা।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত এলিম পাহাড় শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি।

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি মারামারির ঘটনায় আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এলিম পাহাড়ের কিশোর ছেলে মাথায় আঘাত পেয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে চিকিৎসা নিতে। খবর পেয়ে আসেন এলিম পাহাড়। এলিম পাহাড় যখন জরুরি বিভাগে তখনো তার ছেলের চিকিৎসা চলছিল। এ সময় এলিম পাহাড় তার ছেলেকে দ্রুত চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনাকে গালমন্দ শুরু করলে সেখানে উপস্থিত আরেক চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। তখন চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিনের শার্টের কলার ধরে তাকে মারধর করা হয়। হামলার সময় ওই চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে ফেলে এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এমন ঘটনা শুনে জরুরি বিভাগে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ছুটে এলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে টানাহেঁচড়া করে গালাগালি করা হয়। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই পালিয়ে যায় এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এরপর চিকিৎসকরা এলিম পাহাড়ের কিশোর ছেলেকে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।

হামলার শিকার চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন লিমিয়া। এলিম পাহাড়ের ছেলে জরুরি বিভাগে আসার পর লিমিয়া তাকে দেখে চিকিৎসার জন্য হ্যান্ডগ্লাভস পড়ছিলেন। এ সময় আমি পাশের কক্ষে প্রশাসনিক কাজ করছিলাম। এর মধ্যে এলিম পাহাড় এসে লিমিয়ার ওপর চড়াও হয়ে আজেবাজে ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন আমি এসে প্রতিবাদ করলে আমাকে কিল-ঘুষি ও থাপ্পড় মারেন তিনি। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি। ফের যেন আর কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।

বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক চিকিৎসককে রোগীর স্বজনরা মারধর করছিলেন। এমন খবর পেয়ে আমি জরুরি বিভাগে গেলে তারা আমার ওপরও চড়াও হয়ে গালাগাল করেন। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। সকলের সঙ্গে কথা বলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে জানার জন্য এলিম পাহাড়ের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসক লাঞ্ছিত করার তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সেখান থেকে আমরা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এখন ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রমিকনেতার বিরুদ্ধে দুই চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:৪৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

ছেলের চিকিৎসা প্রদানে দেরি হওয়ার অভিযোগ তুলে এক নারী চিকিৎসককে গালাগাল করছিলেন শ্রমিকনেতা এলিম পাহাড়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় আরেক চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিনকে মারধর করেন তিনি। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এগিয়ে গেলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে গালাগালি করেন এই শ্রমিক নেতা।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত এলিম পাহাড় শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি।

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি মারামারির ঘটনায় আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এলিম পাহাড়ের কিশোর ছেলে মাথায় আঘাত পেয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে চিকিৎসা নিতে। খবর পেয়ে আসেন এলিম পাহাড়। এলিম পাহাড় যখন জরুরি বিভাগে তখনো তার ছেলের চিকিৎসা চলছিল। এ সময় এলিম পাহাড় তার ছেলেকে দ্রুত চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনাকে গালমন্দ শুরু করলে সেখানে উপস্থিত আরেক চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। তখন চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিনের শার্টের কলার ধরে তাকে মারধর করা হয়। হামলার সময় ওই চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে ফেলে এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এমন ঘটনা শুনে জরুরি বিভাগে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ছুটে এলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে টানাহেঁচড়া করে গালাগালি করা হয়। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই পালিয়ে যায় এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এরপর চিকিৎসকরা এলিম পাহাড়ের কিশোর ছেলেকে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।

হামলার শিকার চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন লিমিয়া। এলিম পাহাড়ের ছেলে জরুরি বিভাগে আসার পর লিমিয়া তাকে দেখে চিকিৎসার জন্য হ্যান্ডগ্লাভস পড়ছিলেন। এ সময় আমি পাশের কক্ষে প্রশাসনিক কাজ করছিলাম। এর মধ্যে এলিম পাহাড় এসে লিমিয়ার ওপর চড়াও হয়ে আজেবাজে ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন আমি এসে প্রতিবাদ করলে আমাকে কিল-ঘুষি ও থাপ্পড় মারেন তিনি। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি। ফের যেন আর কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।

বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক চিকিৎসককে রোগীর স্বজনরা মারধর করছিলেন। এমন খবর পেয়ে আমি জরুরি বিভাগে গেলে তারা আমার ওপরও চড়াও হয়ে গালাগাল করেন। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। সকলের সঙ্গে কথা বলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে জানার জন্য এলিম পাহাড়ের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসক লাঞ্ছিত করার তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সেখান থেকে আমরা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এখন ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।