ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশ-সাংবাদিক-আইনজীবী স্টিকারের ছড়াছড়ি, ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছে পুলিশ

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা রানা। দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেলে ‘সাংবাদিক’ স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই মহল্লার বাসিন্দা মাঈনুদ্দিন। স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তবে নিজের মোটরসাইকেলে ‘সিটি করপোরেশন’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে রাখেন। শুধু রানা বা মাঈনুদ্দিন নয়, রাজধানীতে হাজারো মানুষ তাদের গাড়িতে পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ নানা পেশার নাম লিখে বা বিভিন্ন বাহিনী, সরকারি-আধা সরকারি সংস্থার স্টিকার ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিচ্ছেন। কেউ কেউ এভাবে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২৮ এপ্রিল এক সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগকে ভুয়া স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক অপরাধী তাদের গাড়িতে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার স্টিকার লাগিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই স্টিকারযুক্ত গাড়ি দেখলে যাচাই করে দেখতে হবে। ভুয়া স্টিকার ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় ১ মে থেকে অভিযান শুরু হয়। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ ও থানার ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা। স্টিকার সম্পর্কিত তথ্যের পাশাপাশি গাড়ির কাগজপত্রও যাচাই-বাছাই করছেন তারা। এই অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

 

রবিবার (৫ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশি অভিযান দেখা যায়। সকালে ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সামনে ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) জহির মজুমদারসহ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্টকে স্টিকারযুক্ত গাড়িগুলোকে থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে দেখা যায়। এসময় তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের চলমান অভিযানে স্টিকারযুক্ত গাড়ির সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। ভুয়া স্টিকার গাড়িকে নিয়মিত মামলার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার ও বাংলামোটর এলাকায় দেখা মেলে একই চিত্র। স্টিকারযুক্ত কোনও যানবাহন পেলেই তার বৈধতা যাচাই করা হচ্ছে। এই এলাকায় বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গাড়ির স্টিকার ব্যবহারের বৈধতা ও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় বলে জানান পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যে ২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং গাড়ির স্টিকার খুলে ফেলা হয়েছে।

মগবাজার, রামপুরা ও হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালাতে দেখা যায়। হাতিরঝিল এলাকায় নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, গাড়িগুলোতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় পুলিশ, সাংবাদিক আর মন্ত্রণালয়ের স্টিকার। তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেউ সঠিক জবাব দিতে পারেন না। এমনকি এই গাড়িগুলোতে লাগানো স্টিকার বা লোগোর প্রতিষ্ঠানে তারা কাজও করেন না। বন্ধু-আত্মীয়স্বজনের নামে সড়কে প্রভাব খাটাতে গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন স্টিকার লাগানো ব্যক্তিরা। প্রমাণ পাওয়ায় এমন সবারই বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশ-সাংবাদিক-আইনজীবী স্টিকারের ছড়াছড়ি, ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছে পুলিশ

আপডেট সময় ০৯:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা রানা। দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেলে ‘সাংবাদিক’ স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই মহল্লার বাসিন্দা মাঈনুদ্দিন। স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তবে নিজের মোটরসাইকেলে ‘সিটি করপোরেশন’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে রাখেন। শুধু রানা বা মাঈনুদ্দিন নয়, রাজধানীতে হাজারো মানুষ তাদের গাড়িতে পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ নানা পেশার নাম লিখে বা বিভিন্ন বাহিনী, সরকারি-আধা সরকারি সংস্থার স্টিকার ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিচ্ছেন। কেউ কেউ এভাবে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২৮ এপ্রিল এক সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগকে ভুয়া স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক অপরাধী তাদের গাড়িতে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার স্টিকার লাগিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই স্টিকারযুক্ত গাড়ি দেখলে যাচাই করে দেখতে হবে। ভুয়া স্টিকার ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় ১ মে থেকে অভিযান শুরু হয়। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ ও থানার ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা। স্টিকার সম্পর্কিত তথ্যের পাশাপাশি গাড়ির কাগজপত্রও যাচাই-বাছাই করছেন তারা। এই অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

 

রবিবার (৫ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশি অভিযান দেখা যায়। সকালে ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সামনে ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) জহির মজুমদারসহ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্টকে স্টিকারযুক্ত গাড়িগুলোকে থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে দেখা যায়। এসময় তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের চলমান অভিযানে স্টিকারযুক্ত গাড়ির সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। ভুয়া স্টিকার গাড়িকে নিয়মিত মামলার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার ও বাংলামোটর এলাকায় দেখা মেলে একই চিত্র। স্টিকারযুক্ত কোনও যানবাহন পেলেই তার বৈধতা যাচাই করা হচ্ছে। এই এলাকায় বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গাড়ির স্টিকার ব্যবহারের বৈধতা ও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় বলে জানান পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যে ২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং গাড়ির স্টিকার খুলে ফেলা হয়েছে।

মগবাজার, রামপুরা ও হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালাতে দেখা যায়। হাতিরঝিল এলাকায় নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, গাড়িগুলোতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় পুলিশ, সাংবাদিক আর মন্ত্রণালয়ের স্টিকার। তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেউ সঠিক জবাব দিতে পারেন না। এমনকি এই গাড়িগুলোতে লাগানো স্টিকার বা লোগোর প্রতিষ্ঠানে তারা কাজও করেন না। বন্ধু-আত্মীয়স্বজনের নামে সড়কে প্রভাব খাটাতে গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন স্টিকার লাগানো ব্যক্তিরা। প্রমাণ পাওয়ায় এমন সবারই বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয়েছে।