ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পা ফোলা

পা ফুললেই অনেকে ভয় পেয়ে যায়। অনেকে ভেবে বসেন কিডনি নষ্ট হয়ে জীবন বুঝি শেষ হয়ে গেল। পা ফোলা অবশ্যই একটি সমস্যা। কিন্তু সব সময়ই এটি যে খুব জটিল কোন কারণে হয় তা নয়। সুতরাং পা ফুলে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে ভালো একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ।

পা ফোলার অনেক কারণ আছে। নি¤েœ সংক্ষেপে তা আলোচনা করা হলোÑ
১। হার্ট ফেইলিউর হলে পা ফুলতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু যে পা ফোলে তা নয়। শ্বাষকষ্ট, বুক ধড়ফড় এবং বুক ব্যথাও থাকে।
২। কিডনির অসুখে পা ফোলে। তবে প্রথমে মুখ ফোলে এবং শেষের দিকে পা ফোলে।
৩। অনেক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসলে পা ফুলতে পারে।
৪। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পা ফুলে যায়।
৫। লিভার ফেইলিউরে পা ফোলে। তবে অন্যান্য উপসর্গও থাকে।
৬। উচ্চ রক্তচাপ ব্যবহৃত এমন কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে পা ফুলে যেতে পারে। এমলোডিপিন বহুল প্রচলিত একটি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ। এটি গ্রহণ করলে পা ফোলে।

৭। গর্ভাবস্থায় অনেকেরই পা ফোলে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
৮। পেটে বড় টিউমার হলে পা ফুলতে পারে। টিউমার রক্তনালীর উপর চাপ তৈরি করে। ফলে পা থেকে রক্ত হৃদপিন্ডে অসতে পারে না এবং পা ফুলে যায়।
৯। ভেরিকোস ভেন হলে পা ফুলে যায়।
১০। হাইপোথাইরয়ডিজমে পা ফোলে। তবে এক্ষেত্রে চাপ দিলে চামড়া বসে না। অভিজ্ঞ চিকিৎসক এটি সহজেই ধরতে পারেন।
১১। মারাত্মক রক্তাল্পতা বা অপুষ্টিতে পা ফোলে। থায়ামিন ভিটামিনের অভাবে বেরি বেরি হয়। তখন পা ফোলে।

১২। ফাইলেরিয়া রোগ হলে পা ফুলতে পারে। ফাইলেরিয়া পরজীবী জীবানু দিয়ে হয়।
১৩। গর্ভবস্থায় এক্লাম্পসিয়া ও প্রিএক্লাম্পসিয়া হলে পা ফুলে যায়। এমন হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। না হলে প্রাণ হারাতে হতে পারে।
১৪। ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস হলে একদিকের পা ফোলে। দুদিকে নয়।
পা ফোলার বিভিন্ন কারণ জানা হলো। সামান্য আঘাত বা পায়ের চামড়ায় সংক্রমণেও কিন্তু পা ফুলে যেতে পারে।

পা ফুলে গেলে একজন ভাল চিকিৎসকের নিকট যাওয়া উচিত। কারণ খুব সামান্য কারণে যেমন পা ফোলে আবার ডিপ ভেন থ্রম্বোসিসের কারণেও কিন্তু পা ফোলে। বিমানে দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ করলে এবং বহুদন শয্যাশাযী থাকলে বা বড় অপারেশনের পরে এক পা ফুলে গেলে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিসের কথা মাথায় রাখা উচিৎ। এ রোগ পুষে রাখলে পায়ের শিরায় জমে থাকা রক্তের ডেলা ফুসফুসে চলে গিয়ে পালমোনরী এম্বলিজম তৈরি করে। এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

পা ফোলা যাতে না হয় তার জন্য একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের কারণে পা ফুলে গেলে ওষুধ বদলে নিতে হবে। অনেকে ফুলে গেলে ল্যাসিক্স জাতীয় ওষুধ খান। এসব ওষুধে সাময়িক কাজ হলেও কারণের চিকিৎসা না করলে ভবিষ্যতে বড় সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই একজন দক্ষ গাইনোকোলজিস্ট এর অধীনে থাকা উচিৎ। না হলে মা ও বাচ্চা দুজনেরই ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
পা ফোলা খবই পরিচিত এক সমস্যা। এমন সমস্যা হলে অবহেলা না করে ডাক্তার দেখান। না হলে বড় বিপদে পড়তে হতে পারে। আর নিজের চিকিৎসা নিজে করতে যাবেন না। মনে রাখবেন সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

পা ফোলা

আপডেট সময় ০৩:০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

পা ফুললেই অনেকে ভয় পেয়ে যায়। অনেকে ভেবে বসেন কিডনি নষ্ট হয়ে জীবন বুঝি শেষ হয়ে গেল। পা ফোলা অবশ্যই একটি সমস্যা। কিন্তু সব সময়ই এটি যে খুব জটিল কোন কারণে হয় তা নয়। সুতরাং পা ফুলে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে ভালো একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ।

পা ফোলার অনেক কারণ আছে। নি¤েœ সংক্ষেপে তা আলোচনা করা হলোÑ
১। হার্ট ফেইলিউর হলে পা ফুলতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু যে পা ফোলে তা নয়। শ্বাষকষ্ট, বুক ধড়ফড় এবং বুক ব্যথাও থাকে।
২। কিডনির অসুখে পা ফোলে। তবে প্রথমে মুখ ফোলে এবং শেষের দিকে পা ফোলে।
৩। অনেক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসলে পা ফুলতে পারে।
৪। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পা ফুলে যায়।
৫। লিভার ফেইলিউরে পা ফোলে। তবে অন্যান্য উপসর্গও থাকে।
৬। উচ্চ রক্তচাপ ব্যবহৃত এমন কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে পা ফুলে যেতে পারে। এমলোডিপিন বহুল প্রচলিত একটি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ। এটি গ্রহণ করলে পা ফোলে।

৭। গর্ভাবস্থায় অনেকেরই পা ফোলে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
৮। পেটে বড় টিউমার হলে পা ফুলতে পারে। টিউমার রক্তনালীর উপর চাপ তৈরি করে। ফলে পা থেকে রক্ত হৃদপিন্ডে অসতে পারে না এবং পা ফুলে যায়।
৯। ভেরিকোস ভেন হলে পা ফুলে যায়।
১০। হাইপোথাইরয়ডিজমে পা ফোলে। তবে এক্ষেত্রে চাপ দিলে চামড়া বসে না। অভিজ্ঞ চিকিৎসক এটি সহজেই ধরতে পারেন।
১১। মারাত্মক রক্তাল্পতা বা অপুষ্টিতে পা ফোলে। থায়ামিন ভিটামিনের অভাবে বেরি বেরি হয়। তখন পা ফোলে।

১২। ফাইলেরিয়া রোগ হলে পা ফুলতে পারে। ফাইলেরিয়া পরজীবী জীবানু দিয়ে হয়।
১৩। গর্ভবস্থায় এক্লাম্পসিয়া ও প্রিএক্লাম্পসিয়া হলে পা ফুলে যায়। এমন হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। না হলে প্রাণ হারাতে হতে পারে।
১৪। ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস হলে একদিকের পা ফোলে। দুদিকে নয়।
পা ফোলার বিভিন্ন কারণ জানা হলো। সামান্য আঘাত বা পায়ের চামড়ায় সংক্রমণেও কিন্তু পা ফুলে যেতে পারে।

পা ফুলে গেলে একজন ভাল চিকিৎসকের নিকট যাওয়া উচিত। কারণ খুব সামান্য কারণে যেমন পা ফোলে আবার ডিপ ভেন থ্রম্বোসিসের কারণেও কিন্তু পা ফোলে। বিমানে দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ করলে এবং বহুদন শয্যাশাযী থাকলে বা বড় অপারেশনের পরে এক পা ফুলে গেলে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিসের কথা মাথায় রাখা উচিৎ। এ রোগ পুষে রাখলে পায়ের শিরায় জমে থাকা রক্তের ডেলা ফুসফুসে চলে গিয়ে পালমোনরী এম্বলিজম তৈরি করে। এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

পা ফোলা যাতে না হয় তার জন্য একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক নয়। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের কারণে পা ফুলে গেলে ওষুধ বদলে নিতে হবে। অনেকে ফুলে গেলে ল্যাসিক্স জাতীয় ওষুধ খান। এসব ওষুধে সাময়িক কাজ হলেও কারণের চিকিৎসা না করলে ভবিষ্যতে বড় সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই একজন দক্ষ গাইনোকোলজিস্ট এর অধীনে থাকা উচিৎ। না হলে মা ও বাচ্চা দুজনেরই ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
পা ফোলা খবই পরিচিত এক সমস্যা। এমন সমস্যা হলে অবহেলা না করে ডাক্তার দেখান। না হলে বড় বিপদে পড়তে হতে পারে। আর নিজের চিকিৎসা নিজে করতে যাবেন না। মনে রাখবেন সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়।