ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই দিন ধরে বরিশালের আড়তে নেই আলু

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ব্যবসায়ীরা সম্মত না হওয়ায় বরিশালের আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়েছে। আলু সরবারহকারী ব্যবসায়ীরা বরিশালের ফরিয়া পট্টি থেকে চলে যাওয়ায় দুই দিনের ব্যবধানে আলু সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন খুচরা বাজারে।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বরিশাল নগরের পাইকারী আলুর আড়ত ফরিয়া পট্টিতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। আড়তদাররা জানিয়েছেন, সরকার আলুর দাম বেঁধে দেওয়ার পর কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু বরিশালের ব্যবসায়ীরা সেই দামে আলু বিক্রিতে অসম্মতি জানালে আলু সরবারহকারীরা বরিশাল থেকে চলে যান। এতে করে দুই দিনে শূন্য হয়ে পড়েছে আলুর আড়ত।

ফড়িয়া পট্টির আড়তদার দিনেশ বলেন, বরিশালে আলুর কোল্ড স্টোরেজ নেই। সাধারণত মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু আসে বরিশালের বাজারে। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর আমরা সেই দামে বিক্রি করতে চাইলে মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সকলে বরিশাল থেকে চলে গেছেন।

আনোয়ার ভূঁইয়া আড়তের মালিক বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা আর আড়তদারদের মধ্যে সমন্বয় না হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে যেতে চাই না।

নতুন বাজার এলাকার মুদী দোকানি ফারুক হোসেন বলেন, দুইদিন ধরেই আলু আনতে ফড়িয়া পট্টি গিয়েছিলাম। কিন্তু আড়তে আলু নেই। খালি হাতে ফিরে এসেছি। ক্রেতারা আলু চাইলেও দিতে পারছি না।
তিনি বলেন, কম দাম আর বেশি দাম নয়, আলুইতো নেই।

রূপাতলী এলাকার ক্রেতা হারুন আর রশিদ বলেন, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অধিক মুনাফার কারণে তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকারকেই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এই অবস্থায় সরকার কঠোর অবস্থান না হলে এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারী বাজারেই আলুর দাম এখনো নিয়ন্ত্রনহীন। সরকার কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে। খুচরা পর্যায়ে তা সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু কোল্ড স্টোরেজ থেকে ন্যূনতম ৪০ টাকা দরে আলু বিক্রি করতে বলা হচ্ছে। ব্যাপারীরা দাবি করেছেন চড়া মূল্যে আলু কিনতে হয়। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ ঠিক না থাকায় আড়ত আলু শূন্য হয়ে পড়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানান, আলু শূন্য হয়ে পড়েছে এমন একটি বিষয় ছড়িয়েছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। যদি আলুর সরবরাহ কমে যায় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে কার্যকরী পদক্ষেপ নেব। কোল্ড স্টোরেজগুলোতে আমাদের অভিযান চলছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

দুই দিন ধরে বরিশালের আড়তে নেই আলু

আপডেট সময় ০৪:২১:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ব্যবসায়ীরা সম্মত না হওয়ায় বরিশালের আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়েছে। আলু সরবারহকারী ব্যবসায়ীরা বরিশালের ফরিয়া পট্টি থেকে চলে যাওয়ায় দুই দিনের ব্যবধানে আলু সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন খুচরা বাজারে।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বরিশাল নগরের পাইকারী আলুর আড়ত ফরিয়া পট্টিতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। আড়তদাররা জানিয়েছেন, সরকার আলুর দাম বেঁধে দেওয়ার পর কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু বরিশালের ব্যবসায়ীরা সেই দামে আলু বিক্রিতে অসম্মতি জানালে আলু সরবারহকারীরা বরিশাল থেকে চলে যান। এতে করে দুই দিনে শূন্য হয়ে পড়েছে আলুর আড়ত।

ফড়িয়া পট্টির আড়তদার দিনেশ বলেন, বরিশালে আলুর কোল্ড স্টোরেজ নেই। সাধারণত মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু আসে বরিশালের বাজারে। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর আমরা সেই দামে বিক্রি করতে চাইলে মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সকলে বরিশাল থেকে চলে গেছেন।

আনোয়ার ভূঁইয়া আড়তের মালিক বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা আর আড়তদারদের মধ্যে সমন্বয় না হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে যেতে চাই না।

নতুন বাজার এলাকার মুদী দোকানি ফারুক হোসেন বলেন, দুইদিন ধরেই আলু আনতে ফড়িয়া পট্টি গিয়েছিলাম। কিন্তু আড়তে আলু নেই। খালি হাতে ফিরে এসেছি। ক্রেতারা আলু চাইলেও দিতে পারছি না।
তিনি বলেন, কম দাম আর বেশি দাম নয়, আলুইতো নেই।

রূপাতলী এলাকার ক্রেতা হারুন আর রশিদ বলেন, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অধিক মুনাফার কারণে তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকারকেই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এই অবস্থায় সরকার কঠোর অবস্থান না হলে এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারী বাজারেই আলুর দাম এখনো নিয়ন্ত্রনহীন। সরকার কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে। খুচরা পর্যায়ে তা সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু কোল্ড স্টোরেজ থেকে ন্যূনতম ৪০ টাকা দরে আলু বিক্রি করতে বলা হচ্ছে। ব্যাপারীরা দাবি করেছেন চড়া মূল্যে আলু কিনতে হয়। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ ঠিক না থাকায় আড়ত আলু শূন্য হয়ে পড়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানান, আলু শূন্য হয়ে পড়েছে এমন একটি বিষয় ছড়িয়েছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। যদি আলুর সরবরাহ কমে যায় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে কার্যকরী পদক্ষেপ নেব। কোল্ড স্টোরেজগুলোতে আমাদের অভিযান চলছে।