ঢাকা , সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপড়ে ফেলা হলো তিন নং ঘাটের বটগাছ, নিন্দা

শীতলক্ষ্যা নদীর ৩নং মাছ ঘাট এলাকার পুরনো বটগাছটি বুল্ডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্প নির্মাণের নামে আগে একবার গাছটিকে কাটার উদ্যোগ নিলেও আন্দোলনের চাপে পুরোপুরি কাটতে ব্যর্থ হয় তারা।

তবে আজ শনিবার (২৩ মার্চ) গাছটিকে পুরোপুরি গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশনের কর্মীরা।

শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সমন্বয়কারী আরিফ বুলবুল ও সদস্য সচিব শুভ দেব এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা নারায়ণগঞ্জের মানুষ হিসেবে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি। আমরা আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। আমরা এক মাস যাবৎ আন্দোলন করলাম।

তাদের কার্যালয়ে গেলাম। স্মারকলিপি দিলাম। অথচ তারা আমাদের একটি কথাও শুনলেন না। আমরা গতকাল কাটা গাছগুলোর জায়গায় নতুন চারা গাছ রোপণ করলাম।

তারা আজ এসে বুল্ডোজার দিয়ে পুরো গাছটিকে উপড়ে ফেললো। এরকম প্রকৃতিধ্বংসী কার্য সম্পাদন করতে তাদের ন্যুনতম হাত কাঁপলো না। নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বাঁচবো কি করে।

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সমালোচনা করে তারা আরও বলেন, যে প্রকল্প জীবনকে বিপন্ন করে তা কখনোই উন্নয়ন হতে পারেনা। আমরা তো প্রকল্পের বিরোধিতা করিনি। আমরা বলেছি, গাছগুলোকে রক্ষা করে প্রকল্পের পরিকল্পনা সংশোধন করতে। যাতে দুই ঠিক থাকে।

তারা আমাদের কথা শোনার প্রয়োজনবোধ করলেন না। আমরা এমনই এক হতভাগা নগরবাসী যাদের কথার কোন মূল্যায়ন নেই। অথচ আমাদের জন্যই নাকি এসব উন্নয়ন হচ্ছে। যার কিছুই আমরা চাই না। তারা আমাদের কথা শুনবেন না এটাই অনুমেয় ছিলো। কারণ ভেতরকার খবর আমরা জানি।

এখানে প্রকল্প মানেই লক্ষ-কোটি টাকার খেলা। একটি প্রকল্প পাশ করাতে পারলেই অনেকের পকেট ফুলেফেঁপে উঠবে। এগুলো আমরা সবই জানি। তাই এতো তড়িঘড়ি। এরকম অসুস্থ সমাজেই আমরা বেঁচে আছি। যেখানে গাছ থাকবে না, নদী থাকবে না, পাখিরা থাকবে না। কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষ সব গ্রাস করে নিবে। কিন্তু প্রকৃতি এর জবাব ঠিকই একদিন দিবে।

আমাদের যেটুকু করণীয় ছিলো আমরা করেছি। ক্ষমতা যাদের আছে তারা এর অপব্যবহার করেছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রবল আপত্তির মধ্য দিয়েই তারা তাদের কাজ করে যাচ্ছে। একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় তাদের দাঁড়াতে হবে।

রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বিআইডব্লিউটিএ কে একদিন কঠিন শান্তির মুখোমুখি হতে হবে। প্রাণ-প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজই শেষমেশ ভালো হয় না।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

উপড়ে ফেলা হলো তিন নং ঘাটের বটগাছ, নিন্দা

আপডেট সময় ০৪:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

শীতলক্ষ্যা নদীর ৩নং মাছ ঘাট এলাকার পুরনো বটগাছটি বুল্ডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্প নির্মাণের নামে আগে একবার গাছটিকে কাটার উদ্যোগ নিলেও আন্দোলনের চাপে পুরোপুরি কাটতে ব্যর্থ হয় তারা।

তবে আজ শনিবার (২৩ মার্চ) গাছটিকে পুরোপুরি গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশনের কর্মীরা।

শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সমন্বয়কারী আরিফ বুলবুল ও সদস্য সচিব শুভ দেব এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা নারায়ণগঞ্জের মানুষ হিসেবে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি। আমরা আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। আমরা এক মাস যাবৎ আন্দোলন করলাম।

তাদের কার্যালয়ে গেলাম। স্মারকলিপি দিলাম। অথচ তারা আমাদের একটি কথাও শুনলেন না। আমরা গতকাল কাটা গাছগুলোর জায়গায় নতুন চারা গাছ রোপণ করলাম।

তারা আজ এসে বুল্ডোজার দিয়ে পুরো গাছটিকে উপড়ে ফেললো। এরকম প্রকৃতিধ্বংসী কার্য সম্পাদন করতে তাদের ন্যুনতম হাত কাঁপলো না। নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বাঁচবো কি করে।

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সমালোচনা করে তারা আরও বলেন, যে প্রকল্প জীবনকে বিপন্ন করে তা কখনোই উন্নয়ন হতে পারেনা। আমরা তো প্রকল্পের বিরোধিতা করিনি। আমরা বলেছি, গাছগুলোকে রক্ষা করে প্রকল্পের পরিকল্পনা সংশোধন করতে। যাতে দুই ঠিক থাকে।

তারা আমাদের কথা শোনার প্রয়োজনবোধ করলেন না। আমরা এমনই এক হতভাগা নগরবাসী যাদের কথার কোন মূল্যায়ন নেই। অথচ আমাদের জন্যই নাকি এসব উন্নয়ন হচ্ছে। যার কিছুই আমরা চাই না। তারা আমাদের কথা শুনবেন না এটাই অনুমেয় ছিলো। কারণ ভেতরকার খবর আমরা জানি।

এখানে প্রকল্প মানেই লক্ষ-কোটি টাকার খেলা। একটি প্রকল্প পাশ করাতে পারলেই অনেকের পকেট ফুলেফেঁপে উঠবে। এগুলো আমরা সবই জানি। তাই এতো তড়িঘড়ি। এরকম অসুস্থ সমাজেই আমরা বেঁচে আছি। যেখানে গাছ থাকবে না, নদী থাকবে না, পাখিরা থাকবে না। কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষ সব গ্রাস করে নিবে। কিন্তু প্রকৃতি এর জবাব ঠিকই একদিন দিবে।

আমাদের যেটুকু করণীয় ছিলো আমরা করেছি। ক্ষমতা যাদের আছে তারা এর অপব্যবহার করেছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রবল আপত্তির মধ্য দিয়েই তারা তাদের কাজ করে যাচ্ছে। একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় তাদের দাঁড়াতে হবে।

রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বিআইডব্লিউটিএ কে একদিন কঠিন শান্তির মুখোমুখি হতে হবে। প্রাণ-প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজই শেষমেশ ভালো হয় না।