ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি আর নয়: মির্জা ফখরুল

সরকারের সংলাপকে ‘ফাঁদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংলাপ নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগেও শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) সংলাপের জন্য ডেকেছিলেন। ভেবেছিলাম ভালো কিছু একটা হবে। কিন্তু সেবার নিয়ে দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। তাই আমরা আর কোনো কথা শুনতে চাই না। কারণ অতীতে কথা দিয়ে তারা রাখেনি। আগে পদত্যাগ করুন। তারপর সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটা নির্দলীয় সরকার গঠন করার জন্য ব্যবস্থা নিন। নতুন নির্বাচন কমিশন নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন করবে।

 

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ সভা হয়।

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু’-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু নয়, এটাই এখন লাইফ ইস্যু। সরকারের এ মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। দেশের পুরো নির্বাচনি ব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জানে, এত চুরি-দুর্নীতি করেছে, যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় কোনোদিনই ক্ষমতায় ফিরে আসা দূরে থাকুক, ১০ ভাগের বেশি ভোট পাবে না।

তিনি বলেন, খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন দেখেছে। আবার ওই জায়গায় ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। ১৮ সালে শেখ হাসিনা সংলাপের জন্য ডেকেছিলেন। আমরা গিয়েছিলাম এজন্য যে, মনে করেছিলাম আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা অবস্থা তৈরি হয়। যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি। তাহলে হয়তো বা জনগণের ইচ্ছা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারব। কিন্তু তারা কথা দিয়ে তা রক্ষা করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, যখন নির্বাচন চলবে কমিশনের (ইসি) সেই ক্ষমতা থাকবে তখন আর কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বা কাউকে আটক করা যাবে না। এই কথা কে বিশ্বাস করবে? সেই রাখাল বালকের গল্পের মতো। গ্রামবাসীকে বোকা বানানোর জন্য যখন প্রায় চিৎকার করত বাঘ আসছে, বাঘ আসছে। গ্রামবাসী তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসত। এসে দেখে, কিছু নেই, সেই রাখাল বালক দূরে দাঁড়িয়ে হাসছে। থার্ড টাইম যখন সত্যি সত্যি বাঘ এসেছে, চিৎকার শুরু করেছে তখন দেখে গ্রামবাসী কেউ আসেনি। তো আমরা তো দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। থার্ড টাইম এ দেশের মানুষ আর প্রতারণার শিকার হবে না। পরিষ্কার করে বলতে চাই, সরকারের এসব কথায় কেউ ভুলবে না। কারণ কখনই তারা কথা রক্ষা করেনি।

দেশের অর্থনীতি আন্ডারগ্রাউন্ডে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব দিকে নাকি তারা উন্নয়নে একেবারে সমুদ্র বইয়ে দিয়েছে। আমরা তখনও বলেছি, গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন কখনো উন্নয়ন হতে পারে না-এটা টেকসই নয়। এটা ভেঙে যাবে। আজকে দেখুন আমাদের কথার প্রতিধ্বনি করছে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো। সরকার বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোড মডেল। আর আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ঝুঁকিতে। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প টক হয়ে গেছে। কথাটা আমার নয়, কথাটা ভারতের টেলিগ্রাফের অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদনে এসেছে। আরও এসেছে, বাংলাদেশের সরকার ইতঃপূর্বে যেসব দাবি করেছে তা যে কতটা ঠুনকো ছিল তা বাংলাদেশ যখন ক্রাইসিসে পড়েছে তখন স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশ বিমান নাকি এয়ারবাস কিনবে আরও কয়েকটা। কারণটা হচ্ছে কমিশন। যে বিমান চলতেই পারে না ভর্তুকি দিতে হয়, সেই বিমানের এখন বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কিনবে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি হবে, তারা নির্বাচনি ফান্ড তৈরি করবে। সেই ফান্ডে একদিকে নির্বাচনেও কাজ হবে, আবার তাদেরও পকেট ভর্তি হবে।

আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও মহাসচিব তরুণ কুমার দের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন-গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, তপন চন্দ্র মজুমদার, সুশীল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অর্পণা রায়, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, রমেশ দত্ত, প্রয়াত গৌতম চক্রবর্তীর ছেলে গৌরব চক্রবর্তী প্রমুখ। এছাড়াও সভায় গৌতম চক্রবর্তীর সহধমিণী ও ফ্রন্টের উপদেষ্টা দিপালী সাহা চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নিতাইগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি আর নয়: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৪:১৬:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুন ২০২৩

সরকারের সংলাপকে ‘ফাঁদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংলাপ নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগেও শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) সংলাপের জন্য ডেকেছিলেন। ভেবেছিলাম ভালো কিছু একটা হবে। কিন্তু সেবার নিয়ে দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। তাই আমরা আর কোনো কথা শুনতে চাই না। কারণ অতীতে কথা দিয়ে তারা রাখেনি। আগে পদত্যাগ করুন। তারপর সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটা নির্দলীয় সরকার গঠন করার জন্য ব্যবস্থা নিন। নতুন নির্বাচন কমিশন নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন করবে।

 

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ সভা হয়।

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু’-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু নয়, এটাই এখন লাইফ ইস্যু। সরকারের এ মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। দেশের পুরো নির্বাচনি ব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জানে, এত চুরি-দুর্নীতি করেছে, যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় কোনোদিনই ক্ষমতায় ফিরে আসা দূরে থাকুক, ১০ ভাগের বেশি ভোট পাবে না।

তিনি বলেন, খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন দেখেছে। আবার ওই জায়গায় ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। ১৮ সালে শেখ হাসিনা সংলাপের জন্য ডেকেছিলেন। আমরা গিয়েছিলাম এজন্য যে, মনে করেছিলাম আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা অবস্থা তৈরি হয়। যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি। তাহলে হয়তো বা জনগণের ইচ্ছা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারব। কিন্তু তারা কথা দিয়ে তা রক্ষা করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, যখন নির্বাচন চলবে কমিশনের (ইসি) সেই ক্ষমতা থাকবে তখন আর কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বা কাউকে আটক করা যাবে না। এই কথা কে বিশ্বাস করবে? সেই রাখাল বালকের গল্পের মতো। গ্রামবাসীকে বোকা বানানোর জন্য যখন প্রায় চিৎকার করত বাঘ আসছে, বাঘ আসছে। গ্রামবাসী তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসত। এসে দেখে, কিছু নেই, সেই রাখাল বালক দূরে দাঁড়িয়ে হাসছে। থার্ড টাইম যখন সত্যি সত্যি বাঘ এসেছে, চিৎকার শুরু করেছে তখন দেখে গ্রামবাসী কেউ আসেনি। তো আমরা তো দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। থার্ড টাইম এ দেশের মানুষ আর প্রতারণার শিকার হবে না। পরিষ্কার করে বলতে চাই, সরকারের এসব কথায় কেউ ভুলবে না। কারণ কখনই তারা কথা রক্ষা করেনি।

দেশের অর্থনীতি আন্ডারগ্রাউন্ডে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব দিকে নাকি তারা উন্নয়নে একেবারে সমুদ্র বইয়ে দিয়েছে। আমরা তখনও বলেছি, গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন কখনো উন্নয়ন হতে পারে না-এটা টেকসই নয়। এটা ভেঙে যাবে। আজকে দেখুন আমাদের কথার প্রতিধ্বনি করছে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো। সরকার বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোড মডেল। আর আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ঝুঁকিতে। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প টক হয়ে গেছে। কথাটা আমার নয়, কথাটা ভারতের টেলিগ্রাফের অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদনে এসেছে। আরও এসেছে, বাংলাদেশের সরকার ইতঃপূর্বে যেসব দাবি করেছে তা যে কতটা ঠুনকো ছিল তা বাংলাদেশ যখন ক্রাইসিসে পড়েছে তখন স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশ বিমান নাকি এয়ারবাস কিনবে আরও কয়েকটা। কারণটা হচ্ছে কমিশন। যে বিমান চলতেই পারে না ভর্তুকি দিতে হয়, সেই বিমানের এখন বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কিনবে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি হবে, তারা নির্বাচনি ফান্ড তৈরি করবে। সেই ফান্ডে একদিকে নির্বাচনেও কাজ হবে, আবার তাদেরও পকেট ভর্তি হবে।

আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও মহাসচিব তরুণ কুমার দের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন-গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, তপন চন্দ্র মজুমদার, সুশীল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অর্পণা রায়, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, রমেশ দত্ত, প্রয়াত গৌতম চক্রবর্তীর ছেলে গৌরব চক্রবর্তী প্রমুখ। এছাড়াও সভায় গৌতম চক্রবর্তীর সহধমিণী ও ফ্রন্টের উপদেষ্টা দিপালী সাহা চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন।