সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের রহস্যজনক ভূমিকায় কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি ও নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় কোটি কোটি টাকার গ্যাস চুরির মহোৎসব চালাচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জের চুনা কারখানা গুলো। বিভিন্ন সংস্থাকে ম্যানেজ করেই চলছে চুনা কারখানা গুলো এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর। তথ্য মতে জানা যায়, তিতাস গ্যাসের টেম্পারিং করার জন্য একজন দূর্দান্ত চোরকে নিয়োগ করেন চুনা কারখানার মালিকরা। কমপক্ষে প্রতিমাসে এক একটি চুনা কারখানা থেকে তিন লক্ষ টাকা করে তাকে দেওয়া হয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যক্তি জানান। তারা বলেন, এক ব্যক্তি তিতাস গ্যাসের বিল করার আগ মুহূর্তে মোটর সাইকেলে করে গভীর রাতে চুনা কারখানা গুলোতে এসে টেম্পারিং করে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকার গ্যাসের ইউনিট কমিয়ে দেয়। তার বিনিময়ে প্রতিমাসে এক একটি চুনা কারখানা থেকে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা যিনি টেম্পারিং করেন তাকে দেওয়া হয়।
চুনা পুড়তে যে পরিমাণ তিতাস গ্যাস ব্যবহার করা হয় তাতে মাসে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বিল আসার কথা। ইতিমধ্যে গ্যাস টাম্পারিংকারীর আংশিক পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। সম্পূর্ন পরিচয় সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জানানো হবে।
গত কিছুদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের আরাফাত লাইমস চুনা কারখানার ভ্যাট ফাঁকির ব্যাপারে জাতীয় দৈনিক ও নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে নামমাত্র ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া একটি চুনা ভর্তি ট্রাক আটক করে কাস্টমস। এখন কাস্টমস অফিসের সামনে দিয়ে আরাফাত লাইমস ভ্যাট ফাঁকি দিলেও আরাফাত লাইমসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কাস্টমস কর্মকর্তারা। আরাফাত লাইমসের মালিক হজরত মিয়া ভ্যাট ফাঁকি ও গ্যাস চুরি করে হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। নামে-বেনামে করেছেন সম্পদ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার অর্থ সম্পদের খোজ-খবর নিলে থলের বিড়াল বের হলে আসবে বলে জানান এলাকাবাসী।
কাস্টমসের এমন ভূমিকা রহস্যজনক বলে জানান এলাকাবাসী। প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি ও কোটি টাকা গ্যাস চুরি করছে চুনাকারখানার মালিকরা। ভ্যাট ফাঁকি ও গ্যাস চুরির মধ্যে অন্যতম হলো আরাফাত লাইমস। সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারের এই রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী। কারখানার মালিকরা চুনা কারখানা দিয়ে কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি ও গ্যাস চুরি করে আজ হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে ১৬ টি চুনা কারখানা রয়েছে। গত কিছুদিন আগে ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে (১২ ই জানুয়ারী) রবিবার বিকালে ২০ টন চুনাসহ একটি ট্রাক আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমস কর্মকর্তারা। চুনার মূল্য ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে ভ্যাট আসে ৫২ হাজার ৫০০ শত টাকা। যমুনা লাইমস ভ্যাট না দিয়ে সু-কৌশলে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলের দিকে চুনা ভর্তি ট্রাক নিয়ে রওনা হলে চুনাসহ ট্রাকটি আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমস।
সচেতন মহলের দাবি, সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনলে দেশে অনেক দুর্নীতি কমবে।
উক্ত বিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের বিভাগীয় সরকারী কর্মকর্তা কাজী ফারুক বলেন, চুনা কারখানার ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আরাফাত লাইমসের( চুনা কারখানা) সহ সকল কারখানা আমাদের নজরদারিতে থাকবে। যদি কেউ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও বড় অংকের জরিমানা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার ইমরান বলেন, চুনা কারখানা গুলোর বিষয়ে আমরা নজরদারিতে রাখবো। যদি মিটারে কেউ হাত দেয় তাহলে সে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।