সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : একসময় শত শত শ্রমিকের কর্মসংস্থান হিসেবে পরিচিত ছিল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের গার্মেন্টসে শত শত নারী-পুরুষ কাজ করে জীবন জীবিকা পূরণ করতেন। ইকবাল গ্রুপের ব্যাপক সুনাম ছিল। সকাল দুপুর ও রাতে ইকবাল গ্রুপ থেকে শত শত শ্রমিক সারিবদ্ধভাবে পায়ে হেঁটে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে যেতেন। এখন আর সেই ইকবাল গ্রুপ আগের চিত্র নেই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে লক্ষ লক্ষ টাকার ভ্যাট ট্যাক্স প্রদান করেও পায়নি কোন সুযোগ সুবিধা। ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতে কোমড় পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে থাকতো এ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর দৃষ্টি আকর্ষণ চেয়ে একাধিকবার পত্র-পত্রিকায় প্রতিষ্ঠানটির জলাবদ্ধতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও ব্যবস্থা নেননি সাবেক এই মেয়র আইভি। ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে ফ্যাক্টরিতে রোলিং মিল পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন গার্মেন্টস মালিকপক্ষ ইকবাল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে নিজেদের গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
জলাবদ্ধতার কারণে ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বর্তমানে কারখানাগুলো ফাঁকা রয়েছে নেই কোন কর্মসংস্থান। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করার কারণে আজ এত বড় একটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়েছে। এতে করে শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এমনটা দাবি মালিকপক্ষের। সরকারকে এখনো পর্যন্ত ভ্যাট ট্যাক্স প্রদান করার পরেও পাচ্ছে না জলাবদ্ধতার হাত থেকে রেহাই।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ড সিদ্ধিরগঞ্জ পুলে অবস্থিত ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। এই কারখানাটিতে একসময় শত শত নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করতেন। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বছরের পর বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় কারখানাটির কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেশিনারিজ নষ্ট হয়ে পড়ে। পাশাপাশি জলবদ্ধতার কারণে ইকবাল গ্রুপে বিভিন্ন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা ফ্লোর গুলো ছেড়ে দেয়। তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র কে অবগত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
রবিবার (১৩ জুলাই ২০২৫ ইং) সকালে
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়দিনের টানা বৃষ্টিতে কোমড় পানিতে তলিয়ে আছে সিদ্ধিরগঞ্জের ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। কারখানাটি থেকে বৃষ্টির পানি বের হওয়ার ড্রেন না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ইকবাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকপক্ষ জানায়, প্রতি বছর সরকারকে মোটা অংকের ভ্যাট ট্যাক্স নিয়মিত প্রদান করে আসছি। কিন্তু সে অনুযায়ী সরকার আমাদের সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কারখানার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে দেওয়ায় আমাদের কোটি কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। আমাদের নিজেদের উদ্যোগে পাম্প বসিয়ে জমাট পানি গুলো মেইন রোডে ফেলতে হচ্ছে।
এই ক্ষতিপূরণ আমাদেরকে কে দেবে??। এখনো পর্যন্ত পরিত্যক্ত কারখানাটির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করার কারনে কারখানাটি এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উক্ত বিষয় জানতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সিইও মোঃ জাকির হোসেন বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের ইকবাল গ্রুপের জলবদ্ধতার বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না, এখন যখন জেনেছি ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।