ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫ Logo চুলের রহস্য ফাঁস করলেন ক্যাটরিনা Logo গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন Logo ১২ ম্যাচে নবম হার ম্যানসিটির, আর্সেনালের বড় জয় Logo নারায়নগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হলেন- মোঃ সোলায়মান Logo ডোপ টেস্টে চালকসহ দুইজনের মদপানের সত্যতা মিলেছে Logo জিয়াউর রহমানকে ‘খুনি-রাজাকার’ বলায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলা Logo ৩০ ডিসেম্বর চুনকা পাঠাগারে আন্তর্জাতিক লেখক দিবস উদযাপন করবে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব নারায়ণগঞ্জ Logo মদনগঞ্জ দারুস সালাম মাদরাসা’র বার্ষিক ফলাফল প্রকাশ, পুরস্কার বিতরণ ও দোয়ার অনুষ্ঠান Logo উত্তর ভারতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানো হচ্ছে ‘পুষ্পা-২’

রূপগঞ্জে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলা ৩০ লাখে ধামাচাপা

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ৩শ ফিট সড়কের পাশে আগুনে পুড়িয়ে ছাত্রলীগ নেতা সুমন হত্যা মামলাটি ৩০ লাখ টাকায় ধামাচাপা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের মা ফুলমতি আক্তার (৫৬) বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন মিয়া উপজেলার গুতিয়াব গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে। সে মাদক ব্যবসায় প্রতিবাদ করায় ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট বিকেলে পূর্বাচলের ৩শ ফিট সড়কে তেল, মবিলের খুপড়ি দোকান ঘরের সামনে সুমন মিয়া, তার বন্ধু মুরাদ, মোবারক হোসেন ও রিফাত মিয়ার শরীরের পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনার ২দিন পর আসামি রিটন ও তরিকুল ইসলামকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায়। এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সুমন মিয়া মারা যায়। পুলিশী রিমান্ডে উপজেলার বাগবেড় গ্রামে মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিটন মিয়া (২৬) ও বৌরারটেক পশি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম (২৪) আগুন দেয়ার ঘটনা স্বিকার করেন। সুমন ও তার আরো ৪ বন্ধুর শরীরে আগুন দেয় উপজেলার জাঙ্গীর গ্রামের সানাউল্লাহ মোল্লার ছেলে শিমুল (২৩), রফিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২২), গুতিয়াব গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মুরাদ (২৭), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোবারক (২৪), সোলাইমান মিয়ার ছেলে রিফাত (২১), বাগবেড় গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রকমত (৩০)। ওই সময় গ্রেপ্তারকৃত রিটন ও তরিকুল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে অন্য আসামিদের নাম বলেন। আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথী বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
নিহত সুমনের মা ফুলমতি আক্তার জানান, মাদকের প্রতিবাদ করায় সুমন ও তার বন্ধুদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় রিটন ও তার বন্ধুরা। ওই ঘটনায় সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথীকে বাদী করে মামলা রুজু করায় রূপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও যুথির মামা ছালাহউদ্দিন ভুঁইয়া। পরে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে আসামিদের সাথে বাদি যুথীকে আপোষ মিমাংশা করায়। এসব বিষয় সুমনের বাবা-মাকেও জানানো হয়নি। যুথীও টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংশার পর থেকে আর আমাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখেনি।
এদিকে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে সুমনের মা ফুলমতি আক্তার বাদি হয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিটন মিয়া, যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক শিমুল, ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম, মামুন মিয়া, মুরাদ, মোবারক, রিফাত, নিহত সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রকমত আলীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ৫ আগস্টের আগে রূপগঞ্জ থানার গেইটেও সুমনের পরিবারকে যেতে দেয়নি আসামি পক্ষ। সুমনের স্ত্রী যুথীকে আসামিদের সঙ্গে আপোষ মিমাংশা করতে বাধ্য করেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, রূপগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ছালাহউদ্দিন ভুঁইয়া ও বাদি যুথীর ভাই মোনাস। ছেলে হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছে সুমনের মা ফুলমতি। সুমনের ২ বছরের শিশুপুত্র সাফওয়ান খান জারিফের খোঁজও রাখে না পাষন্ড মা সিলমী জাহান যুথী।
রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, পূর্বাচলে ছাত্রলীগ নেতা সুমনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার বাদি যুথী আসামিদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংশা করেছেন শুনেছি। পরবর্তীতে নিহত সুমনের মা ন্যায় বিচারের আশায় নারায়ণগঞ্জ ৩নং আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছেন।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

রূপগঞ্জে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলা ৩০ লাখে ধামাচাপা

আপডেট সময় ০৯:৩৮:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ৩শ ফিট সড়কের পাশে আগুনে পুড়িয়ে ছাত্রলীগ নেতা সুমন হত্যা মামলাটি ৩০ লাখ টাকায় ধামাচাপা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের মা ফুলমতি আক্তার (৫৬) বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন মিয়া উপজেলার গুতিয়াব গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে। সে মাদক ব্যবসায় প্রতিবাদ করায় ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট বিকেলে পূর্বাচলের ৩শ ফিট সড়কে তেল, মবিলের খুপড়ি দোকান ঘরের সামনে সুমন মিয়া, তার বন্ধু মুরাদ, মোবারক হোসেন ও রিফাত মিয়ার শরীরের পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনার ২দিন পর আসামি রিটন ও তরিকুল ইসলামকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায়। এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সুমন মিয়া মারা যায়। পুলিশী রিমান্ডে উপজেলার বাগবেড় গ্রামে মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিটন মিয়া (২৬) ও বৌরারটেক পশি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম (২৪) আগুন দেয়ার ঘটনা স্বিকার করেন। সুমন ও তার আরো ৪ বন্ধুর শরীরে আগুন দেয় উপজেলার জাঙ্গীর গ্রামের সানাউল্লাহ মোল্লার ছেলে শিমুল (২৩), রফিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২২), গুতিয়াব গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মুরাদ (২৭), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোবারক (২৪), সোলাইমান মিয়ার ছেলে রিফাত (২১), বাগবেড় গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রকমত (৩০)। ওই সময় গ্রেপ্তারকৃত রিটন ও তরিকুল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে অন্য আসামিদের নাম বলেন। আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথী বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
নিহত সুমনের মা ফুলমতি আক্তার জানান, মাদকের প্রতিবাদ করায় সুমন ও তার বন্ধুদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় রিটন ও তার বন্ধুরা। ওই ঘটনায় সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথীকে বাদী করে মামলা রুজু করায় রূপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও যুথির মামা ছালাহউদ্দিন ভুঁইয়া। পরে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে আসামিদের সাথে বাদি যুথীকে আপোষ মিমাংশা করায়। এসব বিষয় সুমনের বাবা-মাকেও জানানো হয়নি। যুথীও টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংশার পর থেকে আর আমাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখেনি।
এদিকে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে সুমনের মা ফুলমতি আক্তার বাদি হয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিটন মিয়া, যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক শিমুল, ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম, মামুন মিয়া, মুরাদ, মোবারক, রিফাত, নিহত সুমনের স্ত্রী সিলমী জাহান যুথী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রকমত আলীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ৫ আগস্টের আগে রূপগঞ্জ থানার গেইটেও সুমনের পরিবারকে যেতে দেয়নি আসামি পক্ষ। সুমনের স্ত্রী যুথীকে আসামিদের সঙ্গে আপোষ মিমাংশা করতে বাধ্য করেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, রূপগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ছালাহউদ্দিন ভুঁইয়া ও বাদি যুথীর ভাই মোনাস। ছেলে হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছে সুমনের মা ফুলমতি। সুমনের ২ বছরের শিশুপুত্র সাফওয়ান খান জারিফের খোঁজও রাখে না পাষন্ড মা সিলমী জাহান যুথী।
রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, পূর্বাচলে ছাত্রলীগ নেতা সুমনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার বাদি যুথী আসামিদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংশা করেছেন শুনেছি। পরবর্তীতে নিহত সুমনের মা ন্যায় বিচারের আশায় নারায়ণগঞ্জ ৩নং আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছেন।