ঢাকা , সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুমাতুল বিদায় সারাদেশে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল

পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমা অর্থৎ জুমাতুল বিদায় গতকাল ঢাকাসহ সারাদেশের মসজিদে মসজিদে ছিল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। যথাযোগ্য মর্যাদায় রমজানের শেষ জুমার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। জুমার নামাজ আদায় করতে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের তিল ধরার ঠাই ছিল না। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও মহাখালীস্থ মসজিদুল গাউছুল আজম কমপ্লেক্সসহ রাজধানীর বড় বড় মসজিদগুলোতে ১২টার পর থেকেই মুসুল্লিরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। চারতলা পাঁচ তলা বা তারও বেশি তলার মসজিদগুলোর ভিতরে জায়গা না হওয়ায় আশপাশের রাস্তায় হাজার হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ভিতরে নামাজে অংশ নিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই মুসল্লিরা চলে আসেন মসজিদে। আজানের পর পরই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় প্রতিটি মসজিদ। মুসল্লিদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। অতীতে এমন মুসল্লি উপস্থিতি আর দেখা যায়নি। যে সব মসজিদে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা আছে সেগুলোতে মহিলাদের উপস্থিাতও ছিল অনেক বেশি। অনেকে দূর থেকে গাড়ি করে মসজিদে নামাজ পড়তে এসে জায়গা না পেয়ে পার্কের ভিতরে বা মসজিদের আশপাশে নামাজ আদায় করেছেন।

জুমাতুল বিদার নামাজে আল্লাহর দরবারে নিজেকে সঁপে দেন মুসল্লিরা। পরে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়ায় অংশ নেন তারা। এ সময় দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত পরিচালিত হয়। এ ছাড়া প্রতিটি মসজিদে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের উপর ইহুদিদের নির্মম হত্যাকান্ডের এবং ভারতের মুসলমানদের উপর হিন্দুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে মহান আল্লার দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে মাহে রমজানের খায়ের বরকত ও নৈকট্য লাভে সর্বস্তরের মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। ইসলামী বিধান অনুযায়ী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে পবিত্র জুমাতুল বিদার নামাজের গুরুত্ব অনেক। রমজান মাসের জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত আরো বেশি হওয়ায় মুসল্লিরা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করেন এ নামাজ। এ ছাড়া রমজানের শেষ জুমায় পবিত্র মসজিদুল আকসার সংরক্ষণ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আল-কুদস দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে আজ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইট থেকে আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে র‌্যালি বের করা হয়।

রোজার শেষ জুমা হওয়ায় বেশি নেকির আশায় দূর-দূরান্ত থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে ছুটে আসেন মুসল্লিরা। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে হাজার হাজার মুসল্লি রাস্তায় নামাজ পড়েন। একজন মুসল্লি বলেন, রোজার শেষ জুমা আজ, তাই তাড়াতাড়ি চলে এলাম। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে কবুল করে নেন। এই পবিত্র রমজানে রহমত, মগফিরাত এবং নজাত যেন নসিব হয়। আরেক মুসল্লি বলেন, রমজান মাসের জুমায় সওয়াবের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই কাজ একটু তাড়াতাড়ি শেষ করেই মসজিদে চলে এসেছি। রামপুরা থেকে এসেছেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাধারণত জুমার নামাজ এলাকার মসজিদেই পড়ি। তবে রমজানের শেষ জুমাটা বায়তুল মোকাররমে পড়তে মন চাইলো তাই চলে এলাম।

মগবাজার থেকে এসেছেন আরিফ। তিনি বলেন, রোজার শেষ জুমা আজ, তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে আগেভাগেই বায়তুল মোকাররমে এসছি। দেরি করলে জায়গা পাওয়া যায় না। পরিবারসহ দেশবাসী ও মুসলিম বিশ্বের জন্য দোয়া করবো। আল্লাহ যেন সবাইকে কবুল করেন। রমজানের ফজিলত যেন হাসিল করার তৌফিক দান করেন।
জুমার নামাজের আজান পড়ার সাথে সাথে মহাখালির মসজিদে গাউসুল আজম মুসুল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এর পর সময় যত গড়াতে থাকে মুসল্লির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে মসজিদের ভিতর ভরে গিয়ে হাজার হাজার মুসল্লি এর বাইরের প্রাঙ্গণে জায়গা নেন।

মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করা মো. আবুল কালাম বলেন, প্রতি জুমার নামাজেই এই মসজিদে মুসল্লিদের চাপ থাকে। তবে আজ রোজার শেষ জুমা হওয়ায় মুসল্লিদের উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি বলেন, রোজার মাসে বেশি ছওয়াবের আশায় একটু আগেই মসজিদে চলে এসেছি। আল্লাহ যেন রোজার ফজিলত পরিপূর্ণভাবে হাসিল করা তৌফিক দেন। এ মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করা আরেক মুসল্লি বলেন, রোজার শেষ জুমার নামাজ হওয়ায় মসজিদে ভিড় হবে ধারণা করেছিলাম। এজন্য আজানের সাথে সাথেই মসজিদে চলে এসেছি। তারপরও মসজিদের ভেতরে জায়গা পাইনি। এজন্য মসজিদের বাইরে নামাজ আদায় করতে হয়েছে। মহাখালির মতো, রামপুরা, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, মিরপুরসহ রাজধানীর সব মসজিদেই ছিল মুসুল্লিদের ঢল।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, পবিত্র রমজানের গতকাল শেষ শুক্রবার জুমার নামাজে চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। জুমাতুল বিদা নামে পালিত রমজানের শেষ জুমায় নগরীতে অন্যরকম এ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আজানের আগেই মুসল্লিরা মসজিদে আসতে শুরু করেন। আজানের পর মসজিদগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। জুমার নামাজের কাতার মসজিদের ছাদ, বারান্দা ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে চট্টগ্রামে প্রতিটি মসজিদে জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করা হয়েছ। দূরদূরান্ত থেকে গুনাহ মাফ ও দোয়া কবুলের আশায় পছন্দের মসজিদে আসেন তারা। সঙ্গে নিয়ে আসেন বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের। অনেকে মসজিদের ভেতর জায়গা না পেয়ে সিঁড়ি, সড়ক, মাঠ, ছাদেও জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
মসজিদের খতিব, ইমামগণ খুৎবায় জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তারা আল্লাহর দরবারে ক্ষমা, রহমত, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। বরিশাল ব্যুরো জানায়, মাহে রমজানের শেষ জুমা-পবিত্র জুমাতুল বিদাতেও বরিশালের সব মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। ফরিদপুরের বিশ^ জাকের মঞ্জিল জামে মসজিদেও সারা দেশ থেকে আগত বিপুল সংখ্যক জাকেরান ও আশেকান জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করেন।

বরিশালের জামে এবাদুল্লাহ মসজিদসহ মহানগরী ও জেলার প্রতিটি মসজিদই দুপুর সাড়ে ১২টার পরেই মুসল্লিদের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জুমা পূর্ব বয়ানেও খতিব ছাহেবগণ রমজান মাসে জাকাত ও ফিতরা আদায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করে সামর্থবানদের তা আদায়ের তাগিদ দেন। পাশাপাশি ঈদ উল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়। জুমা নামাজ শেষে মোনাজতে ফিলিস্তিন, কাস্মীর, চেচনিয়া, ভারতে মাদরাসা বন্ধ মুসলিম নির্যাতন ও চীনের উইঘুরেসহ সারা বিশে^র নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের রহমত কামনা করা হয়। এছাড়া বরিশালের চরমোনাই ও ছারছিনা দরবার শরিফ মসজিদেও জুমাতুল বিদার বিশাল জামাতে মুসল্লিরা মহান অল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের সন্তুষ্টিসহ গুনাহর জন্য পানাহ চেয়ে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন।

 

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

জুমাতুল বিদায় সারাদেশে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল

আপডেট সময় ০৩:৪৭:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমা অর্থৎ জুমাতুল বিদায় গতকাল ঢাকাসহ সারাদেশের মসজিদে মসজিদে ছিল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। যথাযোগ্য মর্যাদায় রমজানের শেষ জুমার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। জুমার নামাজ আদায় করতে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের তিল ধরার ঠাই ছিল না। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও মহাখালীস্থ মসজিদুল গাউছুল আজম কমপ্লেক্সসহ রাজধানীর বড় বড় মসজিদগুলোতে ১২টার পর থেকেই মুসুল্লিরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। চারতলা পাঁচ তলা বা তারও বেশি তলার মসজিদগুলোর ভিতরে জায়গা না হওয়ায় আশপাশের রাস্তায় হাজার হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ভিতরে নামাজে অংশ নিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই মুসল্লিরা চলে আসেন মসজিদে। আজানের পর পরই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় প্রতিটি মসজিদ। মুসল্লিদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। অতীতে এমন মুসল্লি উপস্থিতি আর দেখা যায়নি। যে সব মসজিদে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা আছে সেগুলোতে মহিলাদের উপস্থিাতও ছিল অনেক বেশি। অনেকে দূর থেকে গাড়ি করে মসজিদে নামাজ পড়তে এসে জায়গা না পেয়ে পার্কের ভিতরে বা মসজিদের আশপাশে নামাজ আদায় করেছেন।

জুমাতুল বিদার নামাজে আল্লাহর দরবারে নিজেকে সঁপে দেন মুসল্লিরা। পরে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়ায় অংশ নেন তারা। এ সময় দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত পরিচালিত হয়। এ ছাড়া প্রতিটি মসজিদে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের উপর ইহুদিদের নির্মম হত্যাকান্ডের এবং ভারতের মুসলমানদের উপর হিন্দুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে মহান আল্লার দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে মাহে রমজানের খায়ের বরকত ও নৈকট্য লাভে সর্বস্তরের মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। ইসলামী বিধান অনুযায়ী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে পবিত্র জুমাতুল বিদার নামাজের গুরুত্ব অনেক। রমজান মাসের জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত আরো বেশি হওয়ায় মুসল্লিরা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করেন এ নামাজ। এ ছাড়া রমজানের শেষ জুমায় পবিত্র মসজিদুল আকসার সংরক্ষণ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আল-কুদস দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে আজ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইট থেকে আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে র‌্যালি বের করা হয়।

রোজার শেষ জুমা হওয়ায় বেশি নেকির আশায় দূর-দূরান্ত থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে ছুটে আসেন মুসল্লিরা। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে হাজার হাজার মুসল্লি রাস্তায় নামাজ পড়েন। একজন মুসল্লি বলেন, রোজার শেষ জুমা আজ, তাই তাড়াতাড়ি চলে এলাম। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে কবুল করে নেন। এই পবিত্র রমজানে রহমত, মগফিরাত এবং নজাত যেন নসিব হয়। আরেক মুসল্লি বলেন, রমজান মাসের জুমায় সওয়াবের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই কাজ একটু তাড়াতাড়ি শেষ করেই মসজিদে চলে এসেছি। রামপুরা থেকে এসেছেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাধারণত জুমার নামাজ এলাকার মসজিদেই পড়ি। তবে রমজানের শেষ জুমাটা বায়তুল মোকাররমে পড়তে মন চাইলো তাই চলে এলাম।

মগবাজার থেকে এসেছেন আরিফ। তিনি বলেন, রোজার শেষ জুমা আজ, তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে আগেভাগেই বায়তুল মোকাররমে এসছি। দেরি করলে জায়গা পাওয়া যায় না। পরিবারসহ দেশবাসী ও মুসলিম বিশ্বের জন্য দোয়া করবো। আল্লাহ যেন সবাইকে কবুল করেন। রমজানের ফজিলত যেন হাসিল করার তৌফিক দান করেন।
জুমার নামাজের আজান পড়ার সাথে সাথে মহাখালির মসজিদে গাউসুল আজম মুসুল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এর পর সময় যত গড়াতে থাকে মুসল্লির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে মসজিদের ভিতর ভরে গিয়ে হাজার হাজার মুসল্লি এর বাইরের প্রাঙ্গণে জায়গা নেন।

মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করা মো. আবুল কালাম বলেন, প্রতি জুমার নামাজেই এই মসজিদে মুসল্লিদের চাপ থাকে। তবে আজ রোজার শেষ জুমা হওয়ায় মুসল্লিদের উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি বলেন, রোজার মাসে বেশি ছওয়াবের আশায় একটু আগেই মসজিদে চলে এসেছি। আল্লাহ যেন রোজার ফজিলত পরিপূর্ণভাবে হাসিল করা তৌফিক দেন। এ মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করা আরেক মুসল্লি বলেন, রোজার শেষ জুমার নামাজ হওয়ায় মসজিদে ভিড় হবে ধারণা করেছিলাম। এজন্য আজানের সাথে সাথেই মসজিদে চলে এসেছি। তারপরও মসজিদের ভেতরে জায়গা পাইনি। এজন্য মসজিদের বাইরে নামাজ আদায় করতে হয়েছে। মহাখালির মতো, রামপুরা, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, মিরপুরসহ রাজধানীর সব মসজিদেই ছিল মুসুল্লিদের ঢল।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, পবিত্র রমজানের গতকাল শেষ শুক্রবার জুমার নামাজে চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। জুমাতুল বিদা নামে পালিত রমজানের শেষ জুমায় নগরীতে অন্যরকম এ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আজানের আগেই মুসল্লিরা মসজিদে আসতে শুরু করেন। আজানের পর মসজিদগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। জুমার নামাজের কাতার মসজিদের ছাদ, বারান্দা ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে চট্টগ্রামে প্রতিটি মসজিদে জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করা হয়েছ। দূরদূরান্ত থেকে গুনাহ মাফ ও দোয়া কবুলের আশায় পছন্দের মসজিদে আসেন তারা। সঙ্গে নিয়ে আসেন বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের। অনেকে মসজিদের ভেতর জায়গা না পেয়ে সিঁড়ি, সড়ক, মাঠ, ছাদেও জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
মসজিদের খতিব, ইমামগণ খুৎবায় জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তারা আল্লাহর দরবারে ক্ষমা, রহমত, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। বরিশাল ব্যুরো জানায়, মাহে রমজানের শেষ জুমা-পবিত্র জুমাতুল বিদাতেও বরিশালের সব মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। ফরিদপুরের বিশ^ জাকের মঞ্জিল জামে মসজিদেও সারা দেশ থেকে আগত বিপুল সংখ্যক জাকেরান ও আশেকান জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করেন।

বরিশালের জামে এবাদুল্লাহ মসজিদসহ মহানগরী ও জেলার প্রতিটি মসজিদই দুপুর সাড়ে ১২টার পরেই মুসল্লিদের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জুমা পূর্ব বয়ানেও খতিব ছাহেবগণ রমজান মাসে জাকাত ও ফিতরা আদায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করে সামর্থবানদের তা আদায়ের তাগিদ দেন। পাশাপাশি ঈদ উল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়। জুমা নামাজ শেষে মোনাজতে ফিলিস্তিন, কাস্মীর, চেচনিয়া, ভারতে মাদরাসা বন্ধ মুসলিম নির্যাতন ও চীনের উইঘুরেসহ সারা বিশে^র নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের রহমত কামনা করা হয়। এছাড়া বরিশালের চরমোনাই ও ছারছিনা দরবার শরিফ মসজিদেও জুমাতুল বিদার বিশাল জামাতে মুসল্লিরা মহান অল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের সন্তুষ্টিসহ গুনাহর জন্য পানাহ চেয়ে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন।