ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কার মত চীনা ঋণের ফাঁদ নিয়ে উদ্বেগ ইন্দোনেশিয়ার

শ্রীলঙ্কা যেভাবে চীনের ঋণ নিয়ে ফাঁদে পড়েছে, সেই আশঙ্কা করছে ইন্দোনেশিয়াও। কারণ একটি উচ্চ-গতির রেলপথ নির্মাণে জাপানকে বাদ দিয়ে চীনকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে দেশটিতে। নিক্কেই এশিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরেটা সেপাট ইন্দোনেশিয়া সিনো এর ৪০% মালিকানা চীন সংশ্লিষ্টদের। জাভাতে নির্মাণাধীন উচ্চ-গতির রেলপথে ৫০ বছর বিশেষ সুবিধার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৩০ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব গত ডিসেম্বরে দিয়েছে তারা।
যদি ইন্দোনেশিয়ার সরকার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে না পারে তবে ২২ শতকের শুরু পর্যন্ত রেলপথটি চীনের প্রভাবের অধীনে থাকবে বলে নিক্কেই এশিয়া জানিয়েছে।
২০১৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো ওই রেলপথ নির্মাণের জন্য জাপানের পরিবর্তে চীনকে বেছে নেন। ২০১৮ সালে শুরুর দিকে ওই প্রকল্প সমাপ্তি এবং একবছর পরই ট্রেন চালুর কথা ছিল। কিন্তু এখনও সেই নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই বিলম্বের কারণে নির্মাণ প্রায় ৪০% বেড়ে যায়। যাতে ইন্দোনেশিয়া সরকার ৭ ট্রিলিয়ন রুপিয়া ব্যয় সামলাতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এরপরও চীনের জন্য ৮০ বছর বিশেষ ছাড়ের যে কথা বলা হচ্ছে, সেখানে জাকার্তার উদ্বেগ একেবারে ভিত্তিহীন নয়। একজন কেবল ভারত মহাসাগর থেকে শ্রীলঙ্কার দিকে তাকালেই এর স্পষ্ট উদাহরণ পেয়ে যাবে।
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরটি ২০১৭ সালে চীনের কাছে ৯৯ বছরের ইজার দেওয়া হয়। কারণ শ্রীলঙ্কা সরকার এর নির্মাণ ঋণ পরিশোধ করতে সমস্যায় পড়েছিল। এই বিষয়টিকে চীনের ‘ঋণ ফাঁদ কূটনীতি’ এর প্রকৃত উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়।
এটি মূলত দেখায়, একটি ঋণদাতা দেশ অন্য দেশকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেয় এবং ঋণগ্রহীতা দেশ তা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে অক্ষম হলে ঋণদাতা দেশটি গ্রহীতার কাছ থেকে বিপুল অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে। এভাবেই চীন ভূ-কৌশলগতভাবে শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে প্রবেশ করেছে। এই চিত্র ইন্দোনেশিয়াও হতে পারে কিনা সেই আশঙ্কার কথাই এখন বলা হচ্ছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীলঙ্কার মত চীনা ঋণের ফাঁদ নিয়ে উদ্বেগ ইন্দোনেশিয়ার

আপডেট সময় ০৪:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

শ্রীলঙ্কা যেভাবে চীনের ঋণ নিয়ে ফাঁদে পড়েছে, সেই আশঙ্কা করছে ইন্দোনেশিয়াও। কারণ একটি উচ্চ-গতির রেলপথ নির্মাণে জাপানকে বাদ দিয়ে চীনকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে দেশটিতে। নিক্কেই এশিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরেটা সেপাট ইন্দোনেশিয়া সিনো এর ৪০% মালিকানা চীন সংশ্লিষ্টদের। জাভাতে নির্মাণাধীন উচ্চ-গতির রেলপথে ৫০ বছর বিশেষ সুবিধার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৩০ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব গত ডিসেম্বরে দিয়েছে তারা।
যদি ইন্দোনেশিয়ার সরকার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে না পারে তবে ২২ শতকের শুরু পর্যন্ত রেলপথটি চীনের প্রভাবের অধীনে থাকবে বলে নিক্কেই এশিয়া জানিয়েছে।
২০১৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো ওই রেলপথ নির্মাণের জন্য জাপানের পরিবর্তে চীনকে বেছে নেন। ২০১৮ সালে শুরুর দিকে ওই প্রকল্প সমাপ্তি এবং একবছর পরই ট্রেন চালুর কথা ছিল। কিন্তু এখনও সেই নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই বিলম্বের কারণে নির্মাণ প্রায় ৪০% বেড়ে যায়। যাতে ইন্দোনেশিয়া সরকার ৭ ট্রিলিয়ন রুপিয়া ব্যয় সামলাতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এরপরও চীনের জন্য ৮০ বছর বিশেষ ছাড়ের যে কথা বলা হচ্ছে, সেখানে জাকার্তার উদ্বেগ একেবারে ভিত্তিহীন নয়। একজন কেবল ভারত মহাসাগর থেকে শ্রীলঙ্কার দিকে তাকালেই এর স্পষ্ট উদাহরণ পেয়ে যাবে।
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরটি ২০১৭ সালে চীনের কাছে ৯৯ বছরের ইজার দেওয়া হয়। কারণ শ্রীলঙ্কা সরকার এর নির্মাণ ঋণ পরিশোধ করতে সমস্যায় পড়েছিল। এই বিষয়টিকে চীনের ‘ঋণ ফাঁদ কূটনীতি’ এর প্রকৃত উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়।
এটি মূলত দেখায়, একটি ঋণদাতা দেশ অন্য দেশকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেয় এবং ঋণগ্রহীতা দেশ তা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে অক্ষম হলে ঋণদাতা দেশটি গ্রহীতার কাছ থেকে বিপুল অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে। এভাবেই চীন ভূ-কৌশলগতভাবে শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে প্রবেশ করেছে। এই চিত্র ইন্দোনেশিয়াও হতে পারে কিনা সেই আশঙ্কার কথাই এখন বলা হচ্ছে।