ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙছে পদ্মা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীতে ভাঙন অব্যাহত আছে। নদী ভাঙনের ফলে মানুষের আবাদি জমি, ভিটামটি সবই নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। ভাঙনের শিকার থেকে বাঁচতে নিরাপদ দূরত্বে ঘর বাঁধছেন পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ‍ধুলাউড়ি ঘাট এলাকা থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার তেররশিয়া এলাকা পর্যন্ত মোট সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙনের তাণ্ডব চলছে। ইতোমধ্যে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।

স্থানীয়দের দাবি, বিগত ১০ বছরের চেয়ে এই বছর নদীতে বেশি পরিমাণে জায়গা জমি বিলিন হয়েছে। প্রায় ২ কিলোমিটার আবাদি জমি ও ভিটামাটি আগ্রাসী পদ্মা নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে। এখনও পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা নিরাপদ দূরত্বে সরে যাচ্ছেন। তারা অনেকেই চরের কদমতলা, নিশিপাড়া, কালিনগর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া যাদের সামর্থ্য ভালো আছে তারা অনেকেই শহরমুখি হচ্ছেন।

নারায়ণপুরের সোহরাব আলী বলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তিগুলো আস্তে আস্তে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখানেই ছোট বেলা থেকে আছি, আর কোথাও জায়গা জমি নাই। অন্যের জমিতে ঘর তুলবো ভেবে জায়গা দেখে এসেছি, কিন্তু ওই জমির মালিকতো একেবারের জন্য আর জায়গা ছেড়ে দেবে না।’

ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে বাড়ি ভেঙে নিশিপাড়া চরে ঘর তুলছেন তবজুল। নৌকায় করে বাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে যাচ্ছেন সেখানে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এ এলাকায় নদী ভাঙন নতুন কিছুই না। এর আগেও কয়েকবার ভাঙন থেকে বাঁচতে ভিটামাটি ছেড়েছি। ভোগান্তি পোহাতে হবে আমাদের, এসব থেকে কী আমরা একেবারেই পরিত্রাণ পাবো না।’

পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে নারায়ণপুর, পাকা এলাকা দিনদিন ছোট হচ্ছে। আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। এখানকার মানুষরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। তাদের আবাসন হারাচ্ছে। এখন নদী ভাঙন না রুখলে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে ।’

বছরের পর বছর নদী ভাঙনের শিকার হওয়া পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের একটাই দাবী, সরকার যেন পদ্মা নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। এতে করে চরাঞ্চলের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপন করতে পারবে এবং তারা তাদের অবশিষ্ট জমিতে ফসল ফলাবে আর দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নদী ভাঙন রোধে এসব এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ জিও টিউব ও ১ হাজার জিও ব্যাগ পদ্মা নদীর পাড়ে ফেলা হয়েছে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙছে পদ্মা

আপডেট সময় ১২:৫৯:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীতে ভাঙন অব্যাহত আছে। নদী ভাঙনের ফলে মানুষের আবাদি জমি, ভিটামটি সবই নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। ভাঙনের শিকার থেকে বাঁচতে নিরাপদ দূরত্বে ঘর বাঁধছেন পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ‍ধুলাউড়ি ঘাট এলাকা থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার তেররশিয়া এলাকা পর্যন্ত মোট সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙনের তাণ্ডব চলছে। ইতোমধ্যে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।

স্থানীয়দের দাবি, বিগত ১০ বছরের চেয়ে এই বছর নদীতে বেশি পরিমাণে জায়গা জমি বিলিন হয়েছে। প্রায় ২ কিলোমিটার আবাদি জমি ও ভিটামাটি আগ্রাসী পদ্মা নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে। এখনও পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা নিরাপদ দূরত্বে সরে যাচ্ছেন। তারা অনেকেই চরের কদমতলা, নিশিপাড়া, কালিনগর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া যাদের সামর্থ্য ভালো আছে তারা অনেকেই শহরমুখি হচ্ছেন।

নারায়ণপুরের সোহরাব আলী বলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তিগুলো আস্তে আস্তে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখানেই ছোট বেলা থেকে আছি, আর কোথাও জায়গা জমি নাই। অন্যের জমিতে ঘর তুলবো ভেবে জায়গা দেখে এসেছি, কিন্তু ওই জমির মালিকতো একেবারের জন্য আর জায়গা ছেড়ে দেবে না।’

ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে বাড়ি ভেঙে নিশিপাড়া চরে ঘর তুলছেন তবজুল। নৌকায় করে বাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে যাচ্ছেন সেখানে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এ এলাকায় নদী ভাঙন নতুন কিছুই না। এর আগেও কয়েকবার ভাঙন থেকে বাঁচতে ভিটামাটি ছেড়েছি। ভোগান্তি পোহাতে হবে আমাদের, এসব থেকে কী আমরা একেবারেই পরিত্রাণ পাবো না।’

পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে নারায়ণপুর, পাকা এলাকা দিনদিন ছোট হচ্ছে। আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। এখানকার মানুষরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। তাদের আবাসন হারাচ্ছে। এখন নদী ভাঙন না রুখলে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে ।’

বছরের পর বছর নদী ভাঙনের শিকার হওয়া পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের একটাই দাবী, সরকার যেন পদ্মা নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। এতে করে চরাঞ্চলের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপন করতে পারবে এবং তারা তাদের অবশিষ্ট জমিতে ফসল ফলাবে আর দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নদী ভাঙন রোধে এসব এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ জিও টিউব ও ১ হাজার জিও ব্যাগ পদ্মা নদীর পাড়ে ফেলা হয়েছে।’