ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোর এমএম কলেজের হলে ভাঙচুর, ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের (এমএম কলেজ) আসাদ হলে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এক কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতির নেতৃত্বে হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।

এদিকে, রাতে এক বিবৃতিতে এমএম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণের সাড়ে ৬ বছর পর এই কমিটি বিলুপ্ত করা হলো।

আসাদ হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ‘প্রথম আলোর অপসাংবাদিকতা’র প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস। এ মানববন্ধনে অনুপস্থিত ছিল আসাদ হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সভাপতি ওই হলে খোঁজ নিতে যান। সেখানে কাউকে না পেয়ে তিনি ছাত্রাবাসের ২০১, ২০২, ২০৩ ও ২০৫ নম্বর কক্ষ ভাঙচুর চালান। এই ভাঙচুরে সভাপতি ছাড়াও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলেন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

আসাদ হলের বাসিন্দা জুবায়ের হোসেন রনি বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কয়েকজন অছাত্র মিলে ছাত্রাবাসে অতর্কিতভাবে ভাঙচুর চালায়। হঠাৎ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন ঘটনায় সবাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব হলের প্রধান ফটকের বাইরে উপস্থিত ছিলেন।’

তবে এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস। তিনি বলেন, ‘নুর ইসলাম নামে এক বখাটে হলে ভাঙচুর করে। এর দায়ভার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে দিচ্ছে। তাছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে তো সিসি ক্যামেরা রয়েছে; ওগুলো যাচাই-বাছাই করলেই দেখা যাবে কে ছাত্রাবাস ভাঙচুর করেছে।’

এদিকে, ভাঙচুরের ঘটনার পরে কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘কলেজ প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এমএম কলেজে ভাঙচুরের কোনও ঘটনা জানা নেই। এমনকি কলেজ প্রশাসনও আমাদের অবগত করেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বুধবার (৫ এপ্রিল) রাতে জেলা ছাত্রলীগের এক বিবৃতিতে এম এম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে, ২০১৫ সালের ৬ জুলাই এমএম কলেজ ছাত্রলীগে ৬৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন জেলা সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই কমিটির সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী জেলা সভাপতি হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় সহ-সভাপতি নূর ইসলামকে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দীন কবির পিয়াস বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার সব কয়টি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনে কাজ করা হচ্ছে। সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করে এমএম কলেজ ছাত্রলীগে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসা হবে। এমএম কলেজসহ অন্যান্য ইউনিটে শিগগিরই কমিটি দিয়ে যশোরে ছাত্রলীগকে পুনর্গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

যশোর এমএম কলেজের হলে ভাঙচুর, ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

আপডেট সময় ০৩:৫৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের (এমএম কলেজ) আসাদ হলে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এক কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতির নেতৃত্বে হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।

এদিকে, রাতে এক বিবৃতিতে এমএম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণের সাড়ে ৬ বছর পর এই কমিটি বিলুপ্ত করা হলো।

আসাদ হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ‘প্রথম আলোর অপসাংবাদিকতা’র প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস। এ মানববন্ধনে অনুপস্থিত ছিল আসাদ হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সভাপতি ওই হলে খোঁজ নিতে যান। সেখানে কাউকে না পেয়ে তিনি ছাত্রাবাসের ২০১, ২০২, ২০৩ ও ২০৫ নম্বর কক্ষ ভাঙচুর চালান। এই ভাঙচুরে সভাপতি ছাড়াও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলেন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

আসাদ হলের বাসিন্দা জুবায়ের হোসেন রনি বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কয়েকজন অছাত্র মিলে ছাত্রাবাসে অতর্কিতভাবে ভাঙচুর চালায়। হঠাৎ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন ঘটনায় সবাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব হলের প্রধান ফটকের বাইরে উপস্থিত ছিলেন।’

তবে এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস। তিনি বলেন, ‘নুর ইসলাম নামে এক বখাটে হলে ভাঙচুর করে। এর দায়ভার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে দিচ্ছে। তাছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে তো সিসি ক্যামেরা রয়েছে; ওগুলো যাচাই-বাছাই করলেই দেখা যাবে কে ছাত্রাবাস ভাঙচুর করেছে।’

এদিকে, ভাঙচুরের ঘটনার পরে কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘কলেজ প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এমএম কলেজে ভাঙচুরের কোনও ঘটনা জানা নেই। এমনকি কলেজ প্রশাসনও আমাদের অবগত করেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বুধবার (৫ এপ্রিল) রাতে জেলা ছাত্রলীগের এক বিবৃতিতে এম এম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে, ২০১৫ সালের ৬ জুলাই এমএম কলেজ ছাত্রলীগে ৬৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন জেলা সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই কমিটির সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী জেলা সভাপতি হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় সহ-সভাপতি নূর ইসলামকে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দীন কবির পিয়াস বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার সব কয়টি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনে কাজ করা হচ্ছে। সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করে এমএম কলেজ ছাত্রলীগে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসা হবে। এমএম কলেজসহ অন্যান্য ইউনিটে শিগগিরই কমিটি দিয়ে যশোরে ছাত্রলীগকে পুনর্গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।