ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদিকে নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বললো নয়াদিল্লি

২০০২ সালে ভারতের গুজরাটে সংঘটিত ভয়াবহ দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির ওপর তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ওই প্রতিবেদনকে ‘প্রপাগান্ডা’ আখ্যায়িত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবিসির তথ্যচিত্রের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’। দুই পর্বের তথ্যচিত্রের বিষয়, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা এবং ভারতে মুসলিমদের অবস্থা ও মোদি। বিবিসি টু-তে এই তথ্যচিত্র দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং অমিত শাহ যখন সেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, তখন সেখানে দাঙ্গা হয়। মারা যায় প্রায় ২ হাজার মানুষ, যার সিংহভাগই মুসলিম। এত বড় দাঙ্গা আর কখনও দেখা যায়নি সেখানে। লোকসভার একজন মুসলিম সদস্য ইহসান জাফরীকে তার বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে টেলিফোন করে কংগ্রেস দলীয় ওই এমপির জীবন বাঁচানোর আহ্বান জানানোর পরও কোনও কাজ হয়নি।

দাঙ্গা থামাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য অভিযোগ ওঠে মোদির বিরুদ্ধে। সব অভিযোগ উড়িয়ে দেন তিনি এবং ভারতের শীর্ষ আদালতের তদন্তের পরে ২০১২ সালে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অব্যাহতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আরেকটি পিটিশন হলে গত বছর তা খারিজ হয়ে যায়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় বিভিন্ন মহলে।

বিবিসির ডকুমেন্টারিতে দাঙ্গার ঘটনাকে ‘পদ্ধতিগত সহিংসতা’ উল্লেখ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সহিংসতায় ‘জাতিগত নির্মূলের সব বৈশিষ্ট্য’ রয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদির ওপর সরাসরি দায় চাপানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরিন্দম বাগচি বিবিসির প্রতিবেদনটিকে ‘প্রচারণার খণ্ড’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ওই তথ্যচিত্রে পক্ষপাতিত্ব এবং বস্তুনিষ্ঠতার অভাব রয়েছে। শুধু তাই নয়, ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রভাব পুরোপুরি স্পষ্ট।’

অরিন্দম বাগচি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আরও বলেন, এই ধরনের কাজের উদ্দেশ্য ও এর পেছনের এজেন্ডা সম্পর্কে আমরা বিস্মিত, পাশাপাশি এ ধরনের প্রচেষ্টাকে আমরা ভালো বলতে চাই না।’

তবে বিবিসির একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, আমরা ভারত সরকারকে প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

মোদিকে নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বললো নয়াদিল্লি

আপডেট সময় ০৩:০৯:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩

২০০২ সালে ভারতের গুজরাটে সংঘটিত ভয়াবহ দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির ওপর তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ওই প্রতিবেদনকে ‘প্রপাগান্ডা’ আখ্যায়িত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবিসির তথ্যচিত্রের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’। দুই পর্বের তথ্যচিত্রের বিষয়, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা এবং ভারতে মুসলিমদের অবস্থা ও মোদি। বিবিসি টু-তে এই তথ্যচিত্র দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং অমিত শাহ যখন সেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, তখন সেখানে দাঙ্গা হয়। মারা যায় প্রায় ২ হাজার মানুষ, যার সিংহভাগই মুসলিম। এত বড় দাঙ্গা আর কখনও দেখা যায়নি সেখানে। লোকসভার একজন মুসলিম সদস্য ইহসান জাফরীকে তার বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে টেলিফোন করে কংগ্রেস দলীয় ওই এমপির জীবন বাঁচানোর আহ্বান জানানোর পরও কোনও কাজ হয়নি।

দাঙ্গা থামাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য অভিযোগ ওঠে মোদির বিরুদ্ধে। সব অভিযোগ উড়িয়ে দেন তিনি এবং ভারতের শীর্ষ আদালতের তদন্তের পরে ২০১২ সালে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অব্যাহতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আরেকটি পিটিশন হলে গত বছর তা খারিজ হয়ে যায়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় বিভিন্ন মহলে।

বিবিসির ডকুমেন্টারিতে দাঙ্গার ঘটনাকে ‘পদ্ধতিগত সহিংসতা’ উল্লেখ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সহিংসতায় ‘জাতিগত নির্মূলের সব বৈশিষ্ট্য’ রয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদির ওপর সরাসরি দায় চাপানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরিন্দম বাগচি বিবিসির প্রতিবেদনটিকে ‘প্রচারণার খণ্ড’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ওই তথ্যচিত্রে পক্ষপাতিত্ব এবং বস্তুনিষ্ঠতার অভাব রয়েছে। শুধু তাই নয়, ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রভাব পুরোপুরি স্পষ্ট।’

অরিন্দম বাগচি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আরও বলেন, এই ধরনের কাজের উদ্দেশ্য ও এর পেছনের এজেন্ডা সম্পর্কে আমরা বিস্মিত, পাশাপাশি এ ধরনের প্রচেষ্টাকে আমরা ভালো বলতে চাই না।’

তবে বিবিসির একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, আমরা ভারত সরকারকে প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছে।