ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়িতে ঢুকে কলেজছাত্রীকে খুন করলেন গৃহশিক্ষক

গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা এবং তার মা ও এক বোনকে আহত করে পালিয়ে গেছে মসজিদের এক ইমাম। সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কলেজছাত্রীর নাম রাবেয়া আক্তার (২৩)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় আহত ওই কলেজছাত্রীর মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে (১৫) গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী, চার মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১), হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫), জান্নাত (১৩) ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি সালনা বাজারে একটি শো রুমে চাকরি করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ হতে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিসাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকেন।

তিনি জানান, আবদুর রউফের ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতকে কুরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। আব্দুর রউফের ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কুনজর পড়ে ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পরে সে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে রাবেয়ার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়। তাকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করা হয়। এতে সে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়ার কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করত এবং রাবেয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দিত।

তিনি আরও জানান, একপর্যায়ে সাইদুল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার কক্ষে ঢুকে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। রাবেয়ার ডাক-চিৎকারে তার মা, ছোট বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে রাবেয়ার কক্ষে গিয়ে দেখে সাইদুল ইসলাম ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাচ্ছে। তারা রাবেয়াকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় সাইদুল ইসলাম।

পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়া আক্তার ওই হাসপাতালেই মারা যান। গুরুতর আহত মা ও ছোট বোনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

ওসি জিয়াউল হক জানান, এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামিকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

বাড়িতে ঢুকে কলেজছাত্রীকে খুন করলেন গৃহশিক্ষক

আপডেট সময় ০৩:৫৩:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা এবং তার মা ও এক বোনকে আহত করে পালিয়ে গেছে মসজিদের এক ইমাম। সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কলেজছাত্রীর নাম রাবেয়া আক্তার (২৩)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় আহত ওই কলেজছাত্রীর মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে (১৫) গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী, চার মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১), হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫), জান্নাত (১৩) ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি সালনা বাজারে একটি শো রুমে চাকরি করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ হতে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিসাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকেন।

তিনি জানান, আবদুর রউফের ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতকে কুরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। আব্দুর রউফের ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কুনজর পড়ে ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পরে সে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে রাবেয়ার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়। তাকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করা হয়। এতে সে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়ার কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করত এবং রাবেয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দিত।

তিনি আরও জানান, একপর্যায়ে সাইদুল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার কক্ষে ঢুকে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। রাবেয়ার ডাক-চিৎকারে তার মা, ছোট বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে রাবেয়ার কক্ষে গিয়ে দেখে সাইদুল ইসলাম ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাচ্ছে। তারা রাবেয়াকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় সাইদুল ইসলাম।

পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়া আক্তার ওই হাসপাতালেই মারা যান। গুরুতর আহত মা ও ছোট বোনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

ওসি জিয়াউল হক জানান, এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামিকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।