ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদে বিচক্ষণ প্রচণ্ড

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরেছেন মাওয়াবাদী গেরিলা নেতা পুষ্প কমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’। দেশটিতে গত মাসের নির্বাচনের ফলে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারণে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতা কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে জোট গড়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। তবে পাঁচ বছরের মেয়াদের আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করবেন প্রচণ্ড, আর বাকি সময়ে এই দায়িত্ব সামলাবেন ওলি। প্রধানমন্ত্রী পদে এই রদবদল নিয়ে নিজেদের কূটনৈতিক ঢাক বাঁজাতে পারে চীন।
আপাতদৃষ্টিতে একে অপরের প্রতি সহনশীল হলেও মৌলিক স্বার্থের সংঘাত রয়েছে দাহাল এবং ওলির মধ্যে। তারা এখন সংঘাত মিটিয়ে কর্মক্ষেত্র ভাগ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে সহনশীল সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট হলেও আসলে হিন্দু জাতি এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান করা রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টিকে (পিপিপি) বাগে আনতে তাদের তৎপরতা অদ্ভুত।
দাহাল এবং ওলি যে ভিন্ন রাজনৈতিক জোট গঠন করে সরকার গঠন করছেন সেই জটিল খানিকটা বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন আরপিপি প্রধান কামাল থাপা। সরকার গঠনে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে পৃথক দুই জোটে সবার নজর দাহাল অর্থাৎ প্রচণ্ডের দিকেই থাকবে, যদিও তিনি সারা জীবন হিন্দু রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধেই ছিলেন।
নেপালের সাবেক রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক দশকব্যাপী গেরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন পুষ্প কমল দহল। এজন্য দেশের মানুষের কাছে তিনি ‘প্রচণ্ড’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন। নেপালের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নেপালি কংগ্রেস পার্টি নেতা শের বাহাদুর দেউবার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন প্রচণ্ড। ২০২৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। তখন কম্যুনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট অ্যান্ড লেনিনিস্ট (ইউএমএল) দলের নির্বাচিত প্রার্থী ওলি হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী।
৬৮ বছর বয়সী প্রচণ্ড কংগ্রেস পার্টির জোট থেকে হঠাৎ বের হয়ে গিয়ে নতুন জোট গঠন করেন। এর কারণ দেউবা প্রধানমন্ত্রী পদে প্রচণ্ডকে সমর্থন দিতে রাজি ছিলেন না। প্রচণ্ডের মাওবাদী দল ২৭৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে ৩২টি আসনে জয়লাভ করে। ইউএমএল পায় ৭৮টি আসন। ছোট ছোট আরও কিছু দলকে সঙ্গে রেখে ১৩৮ আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠন করছে এই জোট। আর নেপালি কংগ্রেস পার্টি ৮৯ আসন নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদের প্রধান বিরোধী দল।
ওলি চীনের মদদ পুষ্ট হয়ে ভারত-নেপাল সম্পর্কের মধ্যে প্রচুর বিষ ঢুকানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে দাহালের সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে তিনি ভারত সম্পর্কে তার অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন, আর সেটি সম্পূর্ণরূপে তা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগের মেয়াদে দাহাল কিছুটা সময় পরে ভারত-বিরোধী অবস্থান থেকে দূরে সরে ছিলেন। কিন্তু চীনকে বিষয়টি নাড়া দিয়েছিলো। তারা ভারতের তুষ্টি অর্জনের অভিযোগ এনেছিলেন নেপালের বিরুদ্ধে। তবে নেপালে বিভিন্ন রকমের কমিউনিস্ট নেতাদের মধ্যে নানা মতপার্থক্যের কারণে চীনও বিচলিত।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদে বিচক্ষণ প্রচণ্ড

আপডেট সময় ০৪:৩৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরেছেন মাওয়াবাদী গেরিলা নেতা পুষ্প কমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’। দেশটিতে গত মাসের নির্বাচনের ফলে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারণে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতা কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে জোট গড়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। তবে পাঁচ বছরের মেয়াদের আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করবেন প্রচণ্ড, আর বাকি সময়ে এই দায়িত্ব সামলাবেন ওলি। প্রধানমন্ত্রী পদে এই রদবদল নিয়ে নিজেদের কূটনৈতিক ঢাক বাঁজাতে পারে চীন।
আপাতদৃষ্টিতে একে অপরের প্রতি সহনশীল হলেও মৌলিক স্বার্থের সংঘাত রয়েছে দাহাল এবং ওলির মধ্যে। তারা এখন সংঘাত মিটিয়ে কর্মক্ষেত্র ভাগ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে সহনশীল সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট হলেও আসলে হিন্দু জাতি এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান করা রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টিকে (পিপিপি) বাগে আনতে তাদের তৎপরতা অদ্ভুত।
দাহাল এবং ওলি যে ভিন্ন রাজনৈতিক জোট গঠন করে সরকার গঠন করছেন সেই জটিল খানিকটা বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন আরপিপি প্রধান কামাল থাপা। সরকার গঠনে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে পৃথক দুই জোটে সবার নজর দাহাল অর্থাৎ প্রচণ্ডের দিকেই থাকবে, যদিও তিনি সারা জীবন হিন্দু রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধেই ছিলেন।
নেপালের সাবেক রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক দশকব্যাপী গেরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন পুষ্প কমল দহল। এজন্য দেশের মানুষের কাছে তিনি ‘প্রচণ্ড’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন। নেপালের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নেপালি কংগ্রেস পার্টি নেতা শের বাহাদুর দেউবার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন প্রচণ্ড। ২০২৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। তখন কম্যুনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট অ্যান্ড লেনিনিস্ট (ইউএমএল) দলের নির্বাচিত প্রার্থী ওলি হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী।
৬৮ বছর বয়সী প্রচণ্ড কংগ্রেস পার্টির জোট থেকে হঠাৎ বের হয়ে গিয়ে নতুন জোট গঠন করেন। এর কারণ দেউবা প্রধানমন্ত্রী পদে প্রচণ্ডকে সমর্থন দিতে রাজি ছিলেন না। প্রচণ্ডের মাওবাদী দল ২৭৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে ৩২টি আসনে জয়লাভ করে। ইউএমএল পায় ৭৮টি আসন। ছোট ছোট আরও কিছু দলকে সঙ্গে রেখে ১৩৮ আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে সরকার গঠন করছে এই জোট। আর নেপালি কংগ্রেস পার্টি ৮৯ আসন নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদের প্রধান বিরোধী দল।
ওলি চীনের মদদ পুষ্ট হয়ে ভারত-নেপাল সম্পর্কের মধ্যে প্রচুর বিষ ঢুকানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে দাহালের সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে তিনি ভারত সম্পর্কে তার অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন, আর সেটি সম্পূর্ণরূপে তা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগের মেয়াদে দাহাল কিছুটা সময় পরে ভারত-বিরোধী অবস্থান থেকে দূরে সরে ছিলেন। কিন্তু চীনকে বিষয়টি নাড়া দিয়েছিলো। তারা ভারতের তুষ্টি অর্জনের অভিযোগ এনেছিলেন নেপালের বিরুদ্ধে। তবে নেপালে বিভিন্ন রকমের কমিউনিস্ট নেতাদের মধ্যে নানা মতপার্থক্যের কারণে চীনও বিচলিত।