ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার সড়কে নেই গাড়ির চাপ

ঈদের পঞ্চম দিনেও রাজধানী ঢাকার সড়কে যানবাহনের তেমন চাপ নেই। বেশিরভাগ সড়কই ফাঁকা। যানজটহীন সড়কে যানবাহন চলছে বেশ দ্রুতগতিতে। ফলে ফাঁকা ঢাকায় তুলনামূলক কম সময়ে যাত্রীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। তবে বিজয় সরণী মোড়ের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। স্বাভাবিক দিনের মতোই সেখানে সকাল থেকে গাড়ির চাপ দেখা গেছে।
গত সোমবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, মার্কেট, বিপণিবিতান খোলা হয়। কিন্তু ঈদ শেষে এখনো গ্রাম থেকে সবার ঢাকায় ফেরা হয়নি। অনেকেই বাড়তি ছুটি নিয়ে ঈদের চতুর্থ-পঞ্চম দিনে ঢাকায় ফিরছেন। ফলে এখনো নগরের রাস্তাঘাটও অনেকটাই ফাঁকা।
বিজয় সরণী মোড়ে উবার চালক বলেন, এবার ঈদের দুদিন আগ থেকেই ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোথায় যানজট তৈরি হয়নি। যাত্রী নিয়ে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি। এতে গাড়ির জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। বছরজুড়ে যদি ঢাকা এমন ফাঁকা থাকতো, কতই না ভালো হতো।
গুলশান-১ এ ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন এক পুলিশ সদস্য। তিনি বলেন, ঈদ উদযাপন করতে যারা গ্রামে গেছেন, তাদের অধিকাংশই এখনো ঢাকায় ফেরেননি। আগামী শুক্র ও শনিবার ঢাকামুখী মানুষের চাপ হয়তো বাড়বে। আগামী রোববার থেকে ঢাকায় যানবাহনের চাপ বাড়তে পারে।
এদিকে, গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, প্রতিটি প্লাটফর্মে বিভিন্ন ট্রেনে ঢাকা ছাড়তে যাওয়া শত-শত মানুষের ভিড়। অপেক্ষায় আছেন ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের। অন্যদিকে কোনো ট্রেন গন্তব্য থেকে প্লাটফর্মে এসে থামলে মনে হয় ঢাকায় ফেরার স্রোত নেমেছে মানুষের। সকাল ৯টা ২ মিনিটে ৩ নাম্বার প্লাটফর্মে থামে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেন থামতেই প্রতিটি বগি থেকে নামেন হাজারও মানুষ।
ঈদের ছুটি শেষ হলেও এখনো বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার পাশাপাশি অনেকে বাড়তি ছুটি পাওয়ার কারণে ঝামেলা এড়িয়ে ঈদের পর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। মূলত যারা রাজধানীতে ছিলেন এবং হাতে ছুটি আছে তারাই পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে ঈদের পর ঢাকা থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে ঈদের পঞ্চম দিনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। ঈদের সময় যানজট, ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অনেকেই বাড়ি যাননি। তাদের অনেকেই এখন বাড়ির পথ ধরেছেন। অনেকের আবার স্কুল কলেজ বন্ধ। কেউ কেউ নানা প্রয়োজনে যাচ্ছেন বাড়ি।
দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা কাজল। তিনি বলেন, অনেকদিন পরপর বাড়িতে যাওয়া হয়। এরমধ্যে দুই ঈদ অন্যতম। বাড়িতে গেলে এই শহরে ফিরতে ইচ্ছে করে না। যতটুকু সময় পারি, বাবা-মার সঙ্গে থেকে আসি। ফিরতে ইচ্ছে না করলেও কাজের তাগিদে ফিরতেই হয়।
আরেক যাত্রী বলেন, ট্রেনে ঢাকায় ফিরতে কোনো অসুবিধা হয়নি। এবার কিছু লোক দাঁড়িয়ে এলেও অন্যান্য বছরগুলোর মতো মাথার ওপর দাঁড়িয়ে থাকার লোক হয়নি। সেই হিসেবে এবার ট্রেনভ্রমণ ভালো ছিল। পুরো ট্রেনে কোনো ভিড় ছিল না।
এছাড়া ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের সময় যানজট হওয়া, ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বাড়ি যাওয়া হয়নি। তারা অনেকেই এখন বাড়ির পথ ধরেছেন।
এক যাত্রী বলেন, ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জটিলতায় তাদের অনুরোধে আমিই ঢাকায় চলে আসি। ঈদ শেষে বাড়ির পথ ধরেছি। যাতায়াত করতে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি।
আরেক যাত্রী বলেন, ঈদের সময় টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। এছাড়া বাসে যানজট হওয়ার আশঙ্কায় আমি আর তখন বাড়িতে যাইনি। বেশ কয়েকদিন বাড়িতে কাটিয়ে ঢাকায় ফিরব।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার স্টেশন মাস্টার মো. আফছার উদ্দিন বলেন, ৫৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এদের মধ্যে দুইটি ট্রেন হচ্ছে ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল। সকাল ১১ টা পর্যন্ত ঢাকায় ২০টি ট্রেন প্রবেশ করে এবং ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৬টি লোকাল ট্রেন এবং ১৪টি আন্তঃনগর ট্রেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকার সড়কে নেই গাড়ির চাপ

আপডেট সময় ০৩:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

ঈদের পঞ্চম দিনেও রাজধানী ঢাকার সড়কে যানবাহনের তেমন চাপ নেই। বেশিরভাগ সড়কই ফাঁকা। যানজটহীন সড়কে যানবাহন চলছে বেশ দ্রুতগতিতে। ফলে ফাঁকা ঢাকায় তুলনামূলক কম সময়ে যাত্রীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। তবে বিজয় সরণী মোড়ের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। স্বাভাবিক দিনের মতোই সেখানে সকাল থেকে গাড়ির চাপ দেখা গেছে।
গত সোমবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, মার্কেট, বিপণিবিতান খোলা হয়। কিন্তু ঈদ শেষে এখনো গ্রাম থেকে সবার ঢাকায় ফেরা হয়নি। অনেকেই বাড়তি ছুটি নিয়ে ঈদের চতুর্থ-পঞ্চম দিনে ঢাকায় ফিরছেন। ফলে এখনো নগরের রাস্তাঘাটও অনেকটাই ফাঁকা।
বিজয় সরণী মোড়ে উবার চালক বলেন, এবার ঈদের দুদিন আগ থেকেই ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোথায় যানজট তৈরি হয়নি। যাত্রী নিয়ে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি। এতে গাড়ির জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। বছরজুড়ে যদি ঢাকা এমন ফাঁকা থাকতো, কতই না ভালো হতো।
গুলশান-১ এ ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন এক পুলিশ সদস্য। তিনি বলেন, ঈদ উদযাপন করতে যারা গ্রামে গেছেন, তাদের অধিকাংশই এখনো ঢাকায় ফেরেননি। আগামী শুক্র ও শনিবার ঢাকামুখী মানুষের চাপ হয়তো বাড়বে। আগামী রোববার থেকে ঢাকায় যানবাহনের চাপ বাড়তে পারে।
এদিকে, গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, প্রতিটি প্লাটফর্মে বিভিন্ন ট্রেনে ঢাকা ছাড়তে যাওয়া শত-শত মানুষের ভিড়। অপেক্ষায় আছেন ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের। অন্যদিকে কোনো ট্রেন গন্তব্য থেকে প্লাটফর্মে এসে থামলে মনে হয় ঢাকায় ফেরার স্রোত নেমেছে মানুষের। সকাল ৯টা ২ মিনিটে ৩ নাম্বার প্লাটফর্মে থামে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেন থামতেই প্রতিটি বগি থেকে নামেন হাজারও মানুষ।
ঈদের ছুটি শেষ হলেও এখনো বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার পাশাপাশি অনেকে বাড়তি ছুটি পাওয়ার কারণে ঝামেলা এড়িয়ে ঈদের পর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। মূলত যারা রাজধানীতে ছিলেন এবং হাতে ছুটি আছে তারাই পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে ঈদের পর ঢাকা থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে ঈদের পঞ্চম দিনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। ঈদের সময় যানজট, ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অনেকেই বাড়ি যাননি। তাদের অনেকেই এখন বাড়ির পথ ধরেছেন। অনেকের আবার স্কুল কলেজ বন্ধ। কেউ কেউ নানা প্রয়োজনে যাচ্ছেন বাড়ি।
দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা কাজল। তিনি বলেন, অনেকদিন পরপর বাড়িতে যাওয়া হয়। এরমধ্যে দুই ঈদ অন্যতম। বাড়িতে গেলে এই শহরে ফিরতে ইচ্ছে করে না। যতটুকু সময় পারি, বাবা-মার সঙ্গে থেকে আসি। ফিরতে ইচ্ছে না করলেও কাজের তাগিদে ফিরতেই হয়।
আরেক যাত্রী বলেন, ট্রেনে ঢাকায় ফিরতে কোনো অসুবিধা হয়নি। এবার কিছু লোক দাঁড়িয়ে এলেও অন্যান্য বছরগুলোর মতো মাথার ওপর দাঁড়িয়ে থাকার লোক হয়নি। সেই হিসেবে এবার ট্রেনভ্রমণ ভালো ছিল। পুরো ট্রেনে কোনো ভিড় ছিল না।
এছাড়া ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের সময় যানজট হওয়া, ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বাড়ি যাওয়া হয়নি। তারা অনেকেই এখন বাড়ির পথ ধরেছেন।
এক যাত্রী বলেন, ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জটিলতায় তাদের অনুরোধে আমিই ঢাকায় চলে আসি। ঈদ শেষে বাড়ির পথ ধরেছি। যাতায়াত করতে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি।
আরেক যাত্রী বলেন, ঈদের সময় টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। এছাড়া বাসে যানজট হওয়ার আশঙ্কায় আমি আর তখন বাড়িতে যাইনি। বেশ কয়েকদিন বাড়িতে কাটিয়ে ঢাকায় ফিরব।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার স্টেশন মাস্টার মো. আফছার উদ্দিন বলেন, ৫৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এদের মধ্যে দুইটি ট্রেন হচ্ছে ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল। সকাল ১১ টা পর্যন্ত ঢাকায় ২০টি ট্রেন প্রবেশ করে এবং ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৬টি লোকাল ট্রেন এবং ১৪টি আন্তঃনগর ট্রেন।