ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণহত্যার সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন ৭ রোহিঙ্গা

এবার ম্যারাডোনা-মেসির দেশ আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত ৭ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। রোববার বিকালে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ছেড়েছেন।

রাতেই তারা আর্জেন্টিনার উদ্দেশ্যে রওনা করবেন বলে জানা গেছে। তবে কোনো ফুটবল খেলতে নয়, মিয়ানমার সেনাদের গণহত্যাসহ নানা অপরাধের সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নারীদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন, দলবেঁধে করা হয়েছে ধর্ষণ। মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের হাতে স্বামী কিংবা স্বজনকে হত্যার এমন ভয়ংকর দৃশ্য অথবা সেনাদের লাগানো আগুনে চোখের সামনে নিজের গ্রামকে ধ্বংস হতে দেখেছেন তারা।

মূলত এসব ভয়াবহ ও নির্মম অভিজ্ঞতার সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে একটি আদালতে যাচ্ছেন এই ৭ জন রোহিঙ্গা।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও ধর্ষণসহ নানা অপরাধে আর্জেন্টিনায় একটি আদালতে চলমান একটি মামলার সাক্ষ্য দিতে সাতজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ সেখানে যাচ্ছেন। তবে নিরাপত্তার প্রয়োজনে এসব রোহিঙ্গাদের পরিচয় প্রকাশ থেকে বিরত রয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর, ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ (সার্বজনীন এখতিয়ার) নীতির অধীনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত শুরু করে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ।

মামলাটির পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় ভার্চুয়ালি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করা সাত রোহিঙ্গা, যাদের চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বুয়েন্স আয়ার্সের আদালতে সাক্ষী হিসেবে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এ মামলা ছাড়াও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিজে) এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিসি) বিচার চলছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (ব্রুক), ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আর্জেন্টিনায় মামলাটি শুরুর আবেদন করেছিল।

মামলাটির প্রক্রিয়াকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ উল্লেখ করে ব্রুকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বার্তায় বলা হয়, আর্জেন্টিনার মামলাটি বিশ্বের কোথাও রোহিঙ্গা গণহত্যা সংক্রান্ত প্রথম সার্বজনীন বিচার ব্যবস্থার মামলা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

গণহত্যার সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন ৭ রোহিঙ্গা

আপডেট সময় ০৪:২৪:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

এবার ম্যারাডোনা-মেসির দেশ আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত ৭ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। রোববার বিকালে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ছেড়েছেন।

রাতেই তারা আর্জেন্টিনার উদ্দেশ্যে রওনা করবেন বলে জানা গেছে। তবে কোনো ফুটবল খেলতে নয়, মিয়ানমার সেনাদের গণহত্যাসহ নানা অপরাধের সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নারীদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন, দলবেঁধে করা হয়েছে ধর্ষণ। মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের হাতে স্বামী কিংবা স্বজনকে হত্যার এমন ভয়ংকর দৃশ্য অথবা সেনাদের লাগানো আগুনে চোখের সামনে নিজের গ্রামকে ধ্বংস হতে দেখেছেন তারা।

মূলত এসব ভয়াবহ ও নির্মম অভিজ্ঞতার সাক্ষ্য দিতে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে একটি আদালতে যাচ্ছেন এই ৭ জন রোহিঙ্গা।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও ধর্ষণসহ নানা অপরাধে আর্জেন্টিনায় একটি আদালতে চলমান একটি মামলার সাক্ষ্য দিতে সাতজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ সেখানে যাচ্ছেন। তবে নিরাপত্তার প্রয়োজনে এসব রোহিঙ্গাদের পরিচয় প্রকাশ থেকে বিরত রয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর, ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ (সার্বজনীন এখতিয়ার) নীতির অধীনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত শুরু করে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ।

মামলাটির পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় ভার্চুয়ালি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করা সাত রোহিঙ্গা, যাদের চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বুয়েন্স আয়ার্সের আদালতে সাক্ষী হিসেবে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এ মামলা ছাড়াও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিজে) এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিসি) বিচার চলছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (ব্রুক), ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আর্জেন্টিনায় মামলাটি শুরুর আবেদন করেছিল।

মামলাটির প্রক্রিয়াকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ উল্লেখ করে ব্রুকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বার্তায় বলা হয়, আর্জেন্টিনার মামলাটি বিশ্বের কোথাও রোহিঙ্গা গণহত্যা সংক্রান্ত প্রথম সার্বজনীন বিচার ব্যবস্থার মামলা।