ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

চলতি মাসের শুরুর দিকে ধীরে ধীরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। ৩০ টাকা কেজি দরে যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল তা বাড়তে বাড়তে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠে যায়।
পেঁয়াজের হঠাৎ এ মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে আমদানি করার ঘোষণা দেয় সরকার। আমদানির খবরে কয়েকদিন পেঁয়াজের দাম ছিল সামান্য কমতির দিকে। তখন কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে কোথাও কোথাও বিক্রি হয় ৭৫ টাকায়। তবে কৃষকদের কথা চিন্তা করে সরকার আপাতত আমদানি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আর এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ী সিডিকেট আবার পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ আবারও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়। সামনে কোরবানির ঈদ। সরকার যদি এখনই পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ না নেয় তাহলে অতীতের মতো এর দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে বলে বাজার বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা করিম বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন কিনতে হচ্ছে ৭৩ টাকা কেজিতে। সেজন্য ৮০ টাকার কমে খুচরা বিক্রি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকার যখন আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছিল, তখন দাম কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু কয়েকদিনে সেটা না হওয়াতে (আমদানি না হওয়ায়) এখন আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
খিলগাঁও রেলগেইট বাজারের বিক্রেতা দুলাল বলেন, রোজায় আমরা ২৮ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতাম। ঈদের পর দফায় দফায় বেড়ে তা ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা হয়েছিল। এখন আবার বেড়েছে। অর্থাৎ রাজধানীর কাঁচাবাজারে শেষ দুইদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
খিলগাঁও বাজারের ক্রেতা কমরুজ্জামান বলেন, দাম বেশি দেখে আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। যদিও এক কেজি কিনতে চেয়েছিলাম। দাম কমবে কমবে করে কম করে পেঁয়াজ কিনছি, কিন্তু দাম আর কমছে না। মনে হয় ঈদ পর্যন্ত বাড়তি দামেই পেঁয়াজ খেতে হবে। তিনি বলেন, আমার তো আয় অনুযায়ী কিনতে হবে। প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ছে। সরকারের উচিত বাজার মনিটর করা। সেটাও মনে হয় হচ্ছে না।
যদিও কৃষি মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছে, দেশে এখনো পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টনে। গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। বর্তমানে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ১৭০ টন পেঁয়াজ মজুত আছে। মজুত পেঁয়াজের উল্লেখযোগ্য অংশই এখন মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, মধ্যস্বত্বভোগীরাই এখন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। প্রয়োজনে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির কথাও বলছে মন্ত্রণালয়। আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের পেঁয়াজের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত পাবনায় এখন পেঁয়াজের পাইকারি বাজার বেশ চড়া। বর্তমানে পাবনায় প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। এই পেঁয়াজ পাইকাররা ৬০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। যা খুচরা বাজারে এসে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

আপডেট সময় ০৩:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

চলতি মাসের শুরুর দিকে ধীরে ধীরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। ৩০ টাকা কেজি দরে যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল তা বাড়তে বাড়তে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠে যায়।
পেঁয়াজের হঠাৎ এ মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে আমদানি করার ঘোষণা দেয় সরকার। আমদানির খবরে কয়েকদিন পেঁয়াজের দাম ছিল সামান্য কমতির দিকে। তখন কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে কোথাও কোথাও বিক্রি হয় ৭৫ টাকায়। তবে কৃষকদের কথা চিন্তা করে সরকার আপাতত আমদানি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আর এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ী সিডিকেট আবার পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ আবারও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়। সামনে কোরবানির ঈদ। সরকার যদি এখনই পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ না নেয় তাহলে অতীতের মতো এর দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে বলে বাজার বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা করিম বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন কিনতে হচ্ছে ৭৩ টাকা কেজিতে। সেজন্য ৮০ টাকার কমে খুচরা বিক্রি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকার যখন আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছিল, তখন দাম কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু কয়েকদিনে সেটা না হওয়াতে (আমদানি না হওয়ায়) এখন আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
খিলগাঁও রেলগেইট বাজারের বিক্রেতা দুলাল বলেন, রোজায় আমরা ২৮ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতাম। ঈদের পর দফায় দফায় বেড়ে তা ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা হয়েছিল। এখন আবার বেড়েছে। অর্থাৎ রাজধানীর কাঁচাবাজারে শেষ দুইদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
খিলগাঁও বাজারের ক্রেতা কমরুজ্জামান বলেন, দাম বেশি দেখে আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। যদিও এক কেজি কিনতে চেয়েছিলাম। দাম কমবে কমবে করে কম করে পেঁয়াজ কিনছি, কিন্তু দাম আর কমছে না। মনে হয় ঈদ পর্যন্ত বাড়তি দামেই পেঁয়াজ খেতে হবে। তিনি বলেন, আমার তো আয় অনুযায়ী কিনতে হবে। প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ছে। সরকারের উচিত বাজার মনিটর করা। সেটাও মনে হয় হচ্ছে না।
যদিও কৃষি মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছে, দেশে এখনো পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টনে। গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। বর্তমানে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ১৭০ টন পেঁয়াজ মজুত আছে। মজুত পেঁয়াজের উল্লেখযোগ্য অংশই এখন মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, মধ্যস্বত্বভোগীরাই এখন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। প্রয়োজনে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির কথাও বলছে মন্ত্রণালয়। আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের পেঁয়াজের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত পাবনায় এখন পেঁয়াজের পাইকারি বাজার বেশ চড়া। বর্তমানে পাবনায় প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। এই পেঁয়াজ পাইকাররা ৬০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। যা খুচরা বাজারে এসে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।