ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার মালয়েশিয়াতে রফতানি হচ্ছে সীতাকুন্ডের টমেটো

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে প্রথমবারের মত মালয়েশিয়াতে রফতানি হচ্ছে সুস্বাদু টমেটো। চলতি রবি মৌসুমে টমেটোর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৩৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী গ্রামে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা, বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল, বাড়বকুন্ড ও ভাটিয়ারী, কুমিরাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বøকগুলোতে টমেটোর চাষ হয়েছে। রবি মৌসুমে সব মিলিয়ে নৌপথে প্রতিবছর এখানকার সবজি ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে যাচ্ছে। এবারই প্রথম চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে দেশ ছাড়িয়ে নৌপথে বিদেশের মাটিতে যাচ্ছে এখানকার টমেটো।
পৌরসভাস্থ ২ নম্বর ওয়ার্ডের নুনাছড়া গ্রামের কৃষক মো. তাহের বলেন, চলতি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ১২০ শতক জমিতে বাহুবলি জাতের টমেটোর চাষ করেছি। এতে শ্রমিকসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৬০ থেকে ২০ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারী দরে বিক্রি করেছি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পরিস্থিতি ভাল থাকলে আরো ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। নুনাছড়া গ্রামে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন. এবার অন্যান্য সময় থেকে টমেটো চাষ হয়েছে অনেক বেশি। অন্যান্য কৃষকদের মধ্যে তাজুল ইসলাম, আবুল কাসেম, মো. হোসেনসহ অন্তত ৩০ জন কৃষক টমেটোর চাষ করেছেন এ গ্রামে।
মুরাদপুর এলাকার কৃষক ইসহাক ৭০ শতক জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। তিনি বলেন, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজ ২০ টাকা কেজি হিসেবে মালয়েশিয়াতে রফতানি করার উদ্দেশ্যে আমাদের ক্ষেত থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বড় ভাই মো. মোস্তফা ৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে মৌসুমে বিভিন্ন সবজি কিনে মালয়েশিয়াতে রফতানি করছি। তবে তিনি মালয়েশিয়াতেই বসবাস করছেন। আমি দেশ থেকে বিভিন্ন সবজি নৌপথে মালয়েশিয়াতে রফতানি করছি। আর তিনি ওখান থেকে সবজিগুলো রিসির্ভ করে তার দোকানে নিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি বিক্রি করে দেন বিভিন্ন পাইকার ও অন্যান্যদের মাঝে। তিনি আরো বলেন, এবার আমি সীতাকুÐ থেকে রফতানির উদ্দেশ্যে কৃষকদের ক্ষেত ১৩ টন টমেটো কিনেছি। টমেটোগুলো চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে নৌপথে মালয়েশিয়াতে রফতানি করা হবে। শুধু তাই নয় গত মাসে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ৩ হাজার ১৬৪ টন আলু রফতানি করেছি।
সীতাকুÐ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, সীতাকুÐ উপজেলা থেকে ১৩ টন টমেটো যাচ্ছে মালয়েশিয়াতে। চলতি মৌসুমে ৩৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। মোট টমেটোর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। সে হিসেবে ১৪ কোটি টাকার টমেটো উৎপাদন হয়েছে এবার। সরকার কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করে চলেছেন। এতে কৃষকরাও অধিক লাভবান হচ্ছেন। নিরাপদ টমেটো উৎপাদনের জন্য পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের সহায়তায় কৃষকদের সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাদ, সাদা আঠালো ফাঁদ, নীল আঠালো ফাঁদ ব্যবহার শিখিয়ে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, টমেটোর রফতানির মধ্যদিয়ে একদিকে যেমন জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে কৃষক, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করছে বাংলাদেশ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

এবার মালয়েশিয়াতে রফতানি হচ্ছে সীতাকুন্ডের টমেটো

আপডেট সময় ০৪:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে প্রথমবারের মত মালয়েশিয়াতে রফতানি হচ্ছে সুস্বাদু টমেটো। চলতি রবি মৌসুমে টমেটোর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৩৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী গ্রামে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা, বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল, বাড়বকুন্ড ও ভাটিয়ারী, কুমিরাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বøকগুলোতে টমেটোর চাষ হয়েছে। রবি মৌসুমে সব মিলিয়ে নৌপথে প্রতিবছর এখানকার সবজি ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে যাচ্ছে। এবারই প্রথম চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে দেশ ছাড়িয়ে নৌপথে বিদেশের মাটিতে যাচ্ছে এখানকার টমেটো।
পৌরসভাস্থ ২ নম্বর ওয়ার্ডের নুনাছড়া গ্রামের কৃষক মো. তাহের বলেন, চলতি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ১২০ শতক জমিতে বাহুবলি জাতের টমেটোর চাষ করেছি। এতে শ্রমিকসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৬০ থেকে ২০ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারী দরে বিক্রি করেছি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পরিস্থিতি ভাল থাকলে আরো ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। নুনাছড়া গ্রামে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন. এবার অন্যান্য সময় থেকে টমেটো চাষ হয়েছে অনেক বেশি। অন্যান্য কৃষকদের মধ্যে তাজুল ইসলাম, আবুল কাসেম, মো. হোসেনসহ অন্তত ৩০ জন কৃষক টমেটোর চাষ করেছেন এ গ্রামে।
মুরাদপুর এলাকার কৃষক ইসহাক ৭০ শতক জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। তিনি বলেন, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজ ২০ টাকা কেজি হিসেবে মালয়েশিয়াতে রফতানি করার উদ্দেশ্যে আমাদের ক্ষেত থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বড় ভাই মো. মোস্তফা ৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে মৌসুমে বিভিন্ন সবজি কিনে মালয়েশিয়াতে রফতানি করছি। তবে তিনি মালয়েশিয়াতেই বসবাস করছেন। আমি দেশ থেকে বিভিন্ন সবজি নৌপথে মালয়েশিয়াতে রফতানি করছি। আর তিনি ওখান থেকে সবজিগুলো রিসির্ভ করে তার দোকানে নিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি বিক্রি করে দেন বিভিন্ন পাইকার ও অন্যান্যদের মাঝে। তিনি আরো বলেন, এবার আমি সীতাকুÐ থেকে রফতানির উদ্দেশ্যে কৃষকদের ক্ষেত ১৩ টন টমেটো কিনেছি। টমেটোগুলো চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে নৌপথে মালয়েশিয়াতে রফতানি করা হবে। শুধু তাই নয় গত মাসে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ৩ হাজার ১৬৪ টন আলু রফতানি করেছি।
সীতাকুÐ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, সীতাকুÐ উপজেলা থেকে ১৩ টন টমেটো যাচ্ছে মালয়েশিয়াতে। চলতি মৌসুমে ৩৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। মোট টমেটোর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। সে হিসেবে ১৪ কোটি টাকার টমেটো উৎপাদন হয়েছে এবার। সরকার কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করে চলেছেন। এতে কৃষকরাও অধিক লাভবান হচ্ছেন। নিরাপদ টমেটো উৎপাদনের জন্য পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের সহায়তায় কৃষকদের সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাদ, সাদা আঠালো ফাঁদ, নীল আঠালো ফাঁদ ব্যবহার শিখিয়ে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, টমেটোর রফতানির মধ্যদিয়ে একদিকে যেমন জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে কৃষক, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করছে বাংলাদেশ।