ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: মির্জা ফখরুল

নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কিন্তু আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আমাদের দাবি এখন একটাই, দয়া করে বিদায় হও। অনেক করেছো আর না। জাতিকে আর কষ্ট না দিয়ে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে মানে মানে বিদায় হও। তা না হলে কীভাবে বিদায় করতে হয়, এই দেশের মানুষ তা খুব ভালো করে জানে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী বলেছেন যে, চমৎকার বাজেট হয়েছে। অথচ আজকে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বলছে যে, সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি নেই। নিত্যপণ্যের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, চলমান যে সঙ্কট সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনও রূপরেখা বাজেটে নেই। টাকা কোত্থেকে আসবে? কীভাবে আসবে সেটাও বলা নেই। এটাই হলো এই সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে মূল্য বৃদ্ধি যে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সংকট, এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাজেট দরকার ছিল সে বাজেট দিতে তারা (সরকার) সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আবার সেই গোঁজামিল দিয়ে একটি বাজেট বানিয়ে দিয়ে দিয়েছে। তারা সব সময় মানুষকে প্রতারণা করে, জনগণকে প্রতারণা করে বিভ্রান্ত করে টিকে থাকতে চায়। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। এরা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে আমাদের জাতির ভবিষ্যতকে নষ্ট করছে, সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। আর সবকিছুকে বিলীন করে দিচ্ছে। সেজন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভিক্ষুক তাদেরও নাকি দুই হাজার টাকা আয়কর করে দিতে হবে। এভাবে মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করবে। আজ চাল-ডাল-তেল-লবণ ও পেঁয়াজের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে কঠিন অবস্থা। গরিব মানুষ বলছে সামনে কোরবানি আমারও তো সাধ হয় যে, গরুর গোশত রান্না করবো। কিন্তু আদা কিনবে কোত্থেকে? সুতরাং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে।’

জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহীদ জিয়ার যে সম্মোহনী শক্তি ছিল, তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানে না। তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা ও বিপ্লবী। তিনি সমাজকে বদলে দিতে চেয়েছিলেন। বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশকে উঁচু স্থানে নিয়ে যেতেন। যেমনটি সাবেক মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে মারা না গিয়ে যদি ১৯৭৫ সালে মারা যেতেন তাহলে বাংলাদেশের ভাগ্যে কী ঘটতো আমি জানিনা’। এটা লাইবেরিয়ার মতো একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো।

তিনি আরও বলেন, ৪ বছরে জিয়াউর রহমান দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আজকে আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের সবাইকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। কাউকে খাটো করতে চাই না। কিন্তু আজকে যেই ব্যক্তির স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো সেই ব্যক্তিকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। এজন্য খুবই কষ্ট লাগে। যত কিছুই করুক কিছুই আসে যায় না। শহীদ জিয়াউর রহমানকে জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দেওয়া যাবে না।‘

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. তাজমেরি এসএ ইসলাম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ডা. একেএম আজিজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

আ.লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৩:৪১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কিন্তু আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আমাদের দাবি এখন একটাই, দয়া করে বিদায় হও। অনেক করেছো আর না। জাতিকে আর কষ্ট না দিয়ে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে মানে মানে বিদায় হও। তা না হলে কীভাবে বিদায় করতে হয়, এই দেশের মানুষ তা খুব ভালো করে জানে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী বলেছেন যে, চমৎকার বাজেট হয়েছে। অথচ আজকে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বলছে যে, সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি নেই। নিত্যপণ্যের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, চলমান যে সঙ্কট সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনও রূপরেখা বাজেটে নেই। টাকা কোত্থেকে আসবে? কীভাবে আসবে সেটাও বলা নেই। এটাই হলো এই সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে মূল্য বৃদ্ধি যে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সংকট, এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাজেট দরকার ছিল সে বাজেট দিতে তারা (সরকার) সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আবার সেই গোঁজামিল দিয়ে একটি বাজেট বানিয়ে দিয়ে দিয়েছে। তারা সব সময় মানুষকে প্রতারণা করে, জনগণকে প্রতারণা করে বিভ্রান্ত করে টিকে থাকতে চায়। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। এরা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে আমাদের জাতির ভবিষ্যতকে নষ্ট করছে, সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। আর সবকিছুকে বিলীন করে দিচ্ছে। সেজন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভিক্ষুক তাদেরও নাকি দুই হাজার টাকা আয়কর করে দিতে হবে। এভাবে মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করবে। আজ চাল-ডাল-তেল-লবণ ও পেঁয়াজের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে কঠিন অবস্থা। গরিব মানুষ বলছে সামনে কোরবানি আমারও তো সাধ হয় যে, গরুর গোশত রান্না করবো। কিন্তু আদা কিনবে কোত্থেকে? সুতরাং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে।’

জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহীদ জিয়ার যে সম্মোহনী শক্তি ছিল, তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানে না। তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা ও বিপ্লবী। তিনি সমাজকে বদলে দিতে চেয়েছিলেন। বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশকে উঁচু স্থানে নিয়ে যেতেন। যেমনটি সাবেক মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে মারা না গিয়ে যদি ১৯৭৫ সালে মারা যেতেন তাহলে বাংলাদেশের ভাগ্যে কী ঘটতো আমি জানিনা’। এটা লাইবেরিয়ার মতো একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো।

তিনি আরও বলেন, ৪ বছরে জিয়াউর রহমান দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আজকে আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের সবাইকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। কাউকে খাটো করতে চাই না। কিন্তু আজকে যেই ব্যক্তির স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো সেই ব্যক্তিকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। এজন্য খুবই কষ্ট লাগে। যত কিছুই করুক কিছুই আসে যায় না। শহীদ জিয়াউর রহমানকে জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দেওয়া যাবে না।‘

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. তাজমেরি এসএ ইসলাম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ডা. একেএম আজিজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।