ভোলার দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মফিজল মাঝি (৫৫)। গত ৩০ বছর ধরে মেঘনা নদীতে মাছ ধরে আসছেন। নদীতে মাছ ধরেই সংসার চলে মফিজল মাঝির। গত দুই মাস (মার্চ-এপ্রিল) নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে না পারায় ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছেন। আশা ছিল নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ শিকার করে দুই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে। কিন্তু গত ৯ দিন নদীতে গিয়ে কাঙ্খিত ইলিশ ধরতে পারেনি। ধারদেনা পরিশোধ করা তো দূরে থাক, সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছে সে। মফিজল মাঝি বলেন, দুই মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় নদীতে মাছ ধরতে পারিনি। গত ৮-৯ দিন নদীতে গিয়ে আরও দেনা হয়ে গেছি। আশা ছিল নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে মাছ ধরা পড়বে। মফিজল মাঝির মতো মেঘনা পাড়ের অনেক জেলের একই অবস্থা। নদীতে গিয়ে তেল খরচও উঠেনা।
পাতার খাল মাছঘাটের তছির মাঝি বলেন, আশায় ছিলাম নিষেধাজ্ঞার পর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। দুই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো। কিন্তু এখন নদীতে গিয়ে যে পরিমান মাছ পাই, তা বিক্রি করে খরচ উঠেনা।
গুপ্তগঞ্জ ঘাটের আড়তদার ও ইউপি সদস্য জান্টু বলেন, অভিযানের কারণে দুই মাস জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে যায়নি। এজন্য ব্যবসা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ঘাটে ফিরছে। এতে প্রতিদিন তাদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দৌলতখান উপজেলায় ২৩ হাজার নিবন্ধিত জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত দুই মাস (মার্চ-এপ্রিল) ভোলার ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার ইলিশের অভয়াশ্রমে সবধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্যবিভাগ। এসময়ে সরকারিভাবে জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে জেলেরা ইলিশ শিকারে নেমেছেন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মাহফুজুল হাসনাইন ইনকিলাবকে বলেন, দুই মাস ইলিশের অভয়াশ্রমে অভিযান শতভাগ সফল হয়েছে। এতে করে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। তবে বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। আশা করছি পূর্ণিমার পর নদীতে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়বে।